দেবরাজ চক্রবর্তী

Snake: ভয়ঙ্কর সাপেদের বাঁচানোই কাজ, দেবরাজের সাহস দেখে চমকে উঠবেন! দেখুন কী কাণ্ড

পশ্চিম মেদিনীপুর: সাপ তাঁর ভাবনায়। নিজের হাতে ট্যাটু করে এঁকেছেন সাপ। যে সাপকে মানুষ ভয় পায়, নিজের জীবনকে তোয়াক্কা না করে তিনি ছুটে যান সেই সাপ উদ্ধারে। রাত কী দিন, এক ফোনেই পাওয়া যায় তাকে। সে যত দূরই হোক না কেন নিজের খরচে গিয়ে সাপ উদ্ধার করে এনে গভীর জঙ্গলে তাকে মুক্ত করেন।

কখনও আবার অসুস্থ সাপকে সুস্থ করে তিনি পরিবেশে ছেড়ে দেন। বহু বছর ধরে এটাই করে আসছেন তিনি। এর থেকে তার কোনও লাভ নেই। দিন কিংবা রাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়ে যেতে হয় দেবরাজকে। নিজে থাকেন একচালা ভাড়া ঘরে, পেশাগতভাবে তিনি ঘরে স্ট্রাকচার ওয়েল্ডিং এর কাজ করেন। তবে তাঁর উদ্যোগ এবং পরিবেশের প্রতি ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে। শুধু সাপ উদ্ধারই নয়, উদ্ধার হওয়া সাপ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তাও ছড়িয়ে দেন তিনি।

সারা বছর অনেকের বাড়িতে বেশকিছু বিষাক্ত সাপ লক্ষ্য করা যায়। অনেকে অসচেতনবশত মেরেও ফেলেন। তবে তাঁর আর্জি সাপকে যেন কেউ মেরে না ফেলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা দেবরাজ চক্রবর্তী। সাপের প্রতি এতটাই ভালবাসা যে নিজের হাতে ট্যাটু করে এঁকেছেন সাপের। সারাদিন সংসার চালাতে পরিশ্রম করেন, তবে সাপ উদ্ধারের জন্য ফোন এলে তিনি সব ফেলে রেখে ছুটে যান উদ্ধার করতে। তিনি কোনও পেশাগতভাবে বন বিভাগের কর্মী নন। বন বিভাগের সঙ্গে তার কোনও সংযোগই নেই। শুধু তাঁর ভাবনায় সাপ উদ্ধার করে তাকে তার নিবিড় স্থানে ছেড়ে দেওয়া। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে এটাই করে আসছেন তিনি।

আরও পড়ুন: মমতার পুজোর লেখাতে আরজি কর যন্ত্রণা, স্বরচিত গানও গাইলেন মুখ্যমন্ত্রী! দেখুন সেই ভিডিও

প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর বা মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন গ্রাম যে গ্রামাঞ্চল কিংবা শহরতলী এলাকায় একাধিক বিষাক্ত সাপের আনাগোনা থাকে। চন্দ্রবোড়া, কেউটে, গোখরো, কালাচের মতো বিষাক্ত সাপ মুহুর্মুহু দেখতে পাওয়া যায়। তবে গৃহস্থের বাড়িতে কিংবা বিভিন্ন জায়গায় সাপ দেখা গেলে ডাক পড়ে দেবরাজের। নিজেদের সংসার, ইনকামের কথা না ভেবেই তৎক্ষণাৎই ছুটে যান সেখানে। সে শালবনি হোক কিংবা নারায়ণগড় বা দাঁতন। নিজের বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে গিয়েও সাপ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তিনি। শুধু সাপ উদ্ধার নয়, বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণকে উদ্ধার করে বনদফতরের সহযোগিতা নিয়ে তিনি তা ছেড়ে দেন। সাপ উদ্ধার করতে গিয়ে সাপের ছোবল খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে কয়েকবার। আর্থিক সংকুলান হলেও কখনও বাহ্যিকভাবে এই কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিলেও মন থেকে তিনি ছাড়তে পারেননি।

আরও পড়ুন: লোকে চেনে স্প্রাউট নামে! অঙ্কুরিত মুগ পুষ্টির পাওয়ার হাউজ; রোগমুক্ত হতে রোজ খান

তাই বিভিন্ন জায়গায় সাপ বের হলে ডাক পড়ে সর্পবন্ধু দেবরাজের। দেবরাজের ইচ্ছে বিভিন্ন পশু এবং অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করার। পশু হাসপাতালের পাশাপাশি অসহায় মানুষদের থাকার ঘর তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। সেই লক্ষ্যে নিজের পরিশ্রমকে আরও দ্বিগুণ করে এগিয়ে চলেছে সে। নিঃস্বার্থভাবে পরিবেশের প্রতিভাবনা এবং তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।

রঞ্জন চন্দ