সুরজিৎ দে, জলপাইগুড়ি: যেন সিনেমা। তবে কোনও চিত্রনাট্যের গল্প নয়। বরং রূঢ় বাস্তব। সংসার বাঁচাতে লেখাপড়া ছেড়ে আশৈশব ভাই বোনকে নিয়ে সংসার সামলাচ্ছেন দাদা। পুলিশ হয়ে দাদার স্বপ্ন সফল করতে মরিয়া বনবস্তির স্বপ্না। এখন সদ্য ১৮ ছোঁয়া দাদার মনে বোনের স্বপ্ন পূরণেরই আশা। ছোট থেকেই সেই ছেলের লড়ে যাওয়ার কাহিনি সিনেমার থেকে কোনও অংশেই কম নয়।
গরুমারা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত বুধুরাম বনবস্তি। সুবজ ঘেরা জঙ্গলের মাঝে মা, বাবা, ভাই বোনকে নিয়ে ভালই কাটছিল ছোট্ট আকাশের শৈশব। আচমকা বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যু এবং তার পরেই মায়ের সংসার ছেড়ে চলে যাওয়া – এক লহমায় আকাশকে মানসিক ভাবে শৈশব থেকে যুবকে পরিণত করে দেয়।পরিস্থিতির চাপে বন্ধ হয়ে যায় আকাশের স্কুলের পড়া। তখন বয়স সবে দশ। ঘরে মা, বাবা হারানো খুদে ভাই বোন। দু’ বেলা দু’ মুঠো খাবারের জন্য যোগ দেয় বন বস্তিতে চলা বিভিন্ন কাজকর্মে, সেই থেকেই মানব সংসারে টিকে শুরু লড়াই।
সেই সময় বনবিভাগের গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় পাওয়া মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের এক কোণে বসে নবম শ্রেণীর নোট খাতার পাতা ওল্টায় আকাশের বোন স্বপ্না ওঁরাও। রঙ খেলায় মন নেই তার।
সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জেদ। স্বপ্নার জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখেছে দাদার লড়াই। নিজেও উপলব্ধি করে এই কঠিন সংগ্রামের যন্ত্রণা। তাই সে বড় হয়ে দাদার কষ্ট ঘোচাতে হতে চায় পুলিশ। ভবিষ্যতে পুলিশ কর্মী হয়ে দাদার কাঁধে হাত রাখতে মরিয়া স্বপ্না ওঁরাও। স্বপ্নাকে দেখে অনুপ্রেরণা পায় আরও শত শত স্বপ্না।
দিল্লি: শনিবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ হারলেও সকলের মন জিতে নিলেন বিরাট কোহলি। সঙ্গে আইপিএলের কেরিয়ারে গড়লেন একাধিক রেকর্ড। আরসিবির হয়ে খেললেও দিল্লি তার ঘরের মাঠ। ছোট বেলা থেকে এই মাঠেই নিজেকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন বিরাট কোহলি। সেখানেই একাধিক রেকর্ড গড়ে ও ফ্যানেদের ভালোবাসায় আপ্লুত কোহলি। আর ঘরের মাঠে ম্যাচের আগে সাক্ষাৎ হয়ে গেল বিরাট কোহলি ছোট বেলার কোচ রাজকুমার শর্মা। গুরুকে দেখেই শিষ্যের সম্মান প্রদর্শন মন ছুঁয়ে গেল সকলের।
অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে তখনও ম্যাচ শুরু হতে অনেকটা সময় বাকি। তখন মাঠে অনুশীলন করছিলেন বিরাট কোহলি। সেই সময় দেখা করতে আসেন কোহলির ছোট বেলার কোচ রাজকুমার শর্মা। গুরুকে দেখেই এগিয়ে যান শিষ্য বিরাট কোহলি। ভিডিওতে দেখা যায় কোহলি প্রথমেই তাঁর কোচকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। তারপর কোচের সঙ্গে হাসি মুখে আড্ডা দিতেও দেখা যায় বিরাট কোহলিকে। স্টেডিয়ামের দিকে দেখিয়ে কিছু একটা বলেন কোহলি। সম্ভবত নিজের নামের স্ট্যান্ড ছেলে বেলার কোচকে দেখান বিরাট। এমন সুন্দর মুহূর্ত নেট দুনিয়ায় ঝড় তুলতে বেশি সময় নেয়নি।
প্রসঙ্গত ম্যাচ হারলেও দিল্লির মাঠে একাধিক মাইলস্টোন গড়েন বিরাট কোহলি। দিল্লির বিরুদ্ধে ১২ রান করতেই আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৭০০০ রান করার রেকর্ড গড়লেন বিরাট কোহলি। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্কোরারও কোহলি। দিল্লি ম্যাচের ২৩২টি ম্যাচে কোহলির রান ৬৯৮৮। দিল্লির বিরুদ্ধে ৫৫ করার পর তা দাঁড়াল ৭০৪৩। দিল্লির বিরুদ্ধে হাফ সেঞ্চুরি করেও রেকর্ড গড়েন বিরাট কোহলি। আইপিএলে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৫০টি হাফ সেঞ্চুরি করলনে কোহলি। শীর্ষে ডেভিড ওয়ার্নার (৫৯টি)।