কলকাতা: তাঁর বাড়িতে প্রায় ১৪ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে গিয়েছে ইডি৷ তার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সুজিত বসু দাবি করলেন, চাকরি অথবা কোনও কাজের জন্য কোনওদিন কারও থেকে কোনও রকম সুবিধা নেননি তিনি৷ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আজই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন বলেও দাবি করেছেন দমকল মন্ত্রী৷
এ দিন সকাল থেকে সুজিত বসুর শ্রীভূমির বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি শুরু করে ইডি৷ পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তেই সুজিত বসুর বাড়িতে হানা দেয় ইডি৷ প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়ে তার পর দমকলমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরোন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা৷ মন্ত্রীর ফোন সহ বেশ কিছু নথিও নিয়ে গিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা৷
ইডি-র দল বেরিয়ে যাওয়ার পরই সাংবাদিক বৈঠক করে সুজিত বসু পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘আমি, আমার স্ত্রী, আমার ছেলে এবং মেয়ে ইডি-র সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছি৷ ৪৫ বছর রাজনীতি করছি৷ কাউন্সিলর হয়েছি, বিধায়ক হয়েছি৷ যে ঘটনার সঙ্গে আমি যুক্ত না, যোগাযোগ নেই, সেই ঘটনায় নাকি আদালতের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে যে আর্থিক তছরূপের সঙ্গে নাকি আমাদের যোগ আছে৷ যদি কাজের ক্ষেত্রে কেউ সুজিত বসুকে এক পয়সা দিয়ে থাকে, আজকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেব৷’
আরও পড়ুন: মোবাইল বাজেয়াপ্ত করল ইডি, ম্যারাথন তল্লাশি শেষে কী বললেন তাপস রায়?
পাশাপাশি সুজিত বসু অভিযোগ করেন, ‘আমি দমকলের মতো জরুরি দফতরের মন্ত্রী৷ আমার কাছে একটা ফোন পর্যন্ত নেই৷ বার বার ওদেরকে আমি বলেছিলাম, যাই তথ্য নেওয়ার নিন, কিন্তু ফোনটা ফেরত দিয়ে যান৷ যদিও ওরা তা শোনেনি৷’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও তীব্র আক্রমণ করেছেন সুজিত বসু৷ দমকল মন্ত্রী বলেন, শুভেন্দু নাকি বলেছে শীতের পোষাক গুছিয়ে রাখুন, জেলে যেতে হবে৷ আগামিকাল শীতের পোষাক গুছিয়ে গঙ্গাসাগর যাচ্ছি৷ তার পর তো ফিরব৷ ওই বিরোধী দলেনতাকে বলছি, তোয়ালে পেঁচিয়ে টাকা নিয়েছো৷ আয়নায় নিজের মুখটা দেখুন৷ বলছে সুজিত বোস তো রোল বিক্রি করত৷ হ্যাঁ গর্বের সঙ্গে রোল বিক্রি করতাম৷ প্রধানমন্ত্রীও চা বিক্রি করতেন৷ নিজের প্রধানমন্ত্রীকেই তো অপমান করছেন৷ ইডি-কে দোষ দেব না৷ এর জবাব আমরা রাজনৈতিক ভাবে দেব৷
সুজিত বসু ছাড়াও তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় এবং উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতেও এ দিন অভিযান চালায় ইডি৷ সর্বত্রই অবশ্য ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়ে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্ধের পর ফিরে যান ইডি কর্তারা৷ সুজিত বসুকেও প্রায় দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রের খবর৷ সুজিত অবশ্য এ দিন দাবি করেন, ‘আমার আত্মীয় যদি কোথাও পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পায় তার দায়িত্ব তো আমার নয়৷ অভিযোগ থাকলে প্রমাণ করুন, সব জবাব দেব৷ কাউকে যদি নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করি, তার জন্য জেলে পচতে হলেও পচতে তৈরি৷’