Tag Archives: freedom fighters

Indian Independence Movement: ‘কারার ওই লৌহকপাট ভেঙে ফেল কর রে লোপাট’… পরাধীন ভারতে কারাগার ভাঙল তাঁরা, জেনে নিন দেশপ্রেমের অনন্য নজির

মধ্যপ্রদেশ, নিমার:১৯৪২ সাল৷ সারা ভারত তখন উত্তাল৷ ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট সমগ্র দেশ জুড়ে৷ গান্ধি-সহ একের পর এক শীর্ষস্থানীয় নেতারা জেল বন্দি৷ এরপরও দমানো যায়নি আন্দোলনের ঝাঁজ৷

শহর গ্রামের কত নাম না জানা ব্যক্তিত্বরা স্বাধীনতার যজ্ঞে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল৷ ভরে গিয়েছিল ইংরেজদের কারাগার৷ এমনই এক জায়গার নাম মধ্যপ্রদেশের নিমার জেলা৷

আরও পড়ুন:মুম্বইতে ভয়ঙ্কর ঘটনা, মহিলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, সন্দেহের তির প্রেমিকের দিকে

স্বাধীনতার আকাঙ্খায় বুঁদ ৬৮ জন ব্যক্তি নেমে পড়ল আন্দোলনে৷ চোখে স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন৷ গান্ধীর আদর্শে তাঁরা আন্দোলনে জড়ালো৷ অবশ্যম্ভাবী ফল জেল বরণ৷ তাই ঘটল তাঁদেরও ভাগ্যে৷

এতো ১৯৪২ সালের হাজার হাজার ভারতীয়ের কাহিনি৷ তবে তাঁরা আলাদা হল কীভাবে? গান্ধিজীর প্রতি ভালবাসায় এঁরা অসাধ্য সাধন করেছিলেন৷

আরও পড়ুন: ফল চাষ করে লাভ ৯৫ লাখ টাকা, জেনে নিন কোন ফল চাষ করে হতে পারেন লাখপতি?

ইতিহাসবিদ দুর্গেশ কুমার জানিয়েছেন, ১৯৪২ সালের ২ অক্টোবর, গান্ধিজীর জন্মদিন পালন করার জন্য জেল থেতে বেরোতে চেয়েছিলেন তাঁরা৷

সেই মতো তাঁরা হোলকারের কাছে আবেদন করেছিলেন৷ কিন্তু অনুমতি মেলেনি৷ উপায়? সিদ্ধান্ত হল ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ ভেঙে ফেলার৷

যেমন ভাবা তেমন কাজ৷ ভেঙে ফেলা হল, বন্দি কাঠের দরজা৷ ২ অক্টোবর, সন্ধে ৭টায় কারাগারে পশ্চিম দিকের কাঠের দরজা ভেঙে স্লোগান দিতে দিতে বেড়িয়ে গেল ৬৮ জন ব্যক্তি৷

জেল থেকে বেরিয়ে তাঁরা হাঁটা শুরু করল৷ জেল রোড, কিটন রোড, এমজি মার্গ হয়ে ঐতিহাসিক ঘন্টাঘর চকে এসে পৌঁছান ৬৮জন দেশপ্রেমী৷

তবে তাঁরা আবার জেলে ফিরেও গিয়েছিলেন৷ পরের দিন সকালে তেরঙ্গা ইত্তোলন করে আবার জেলে পিরে যায় এই ৬৮জন৷

তাঁরা যখন জেল থেকে বেরোচ্ছিলেন, খবর যায় ইংরেজ পুলিশদের কাছে৷ জেল ভাঙার খবর পেয়ে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী৷ শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায় তাঁরা৷

কিন্তু স্বাধীনতা মন্ত্রে দীক্ষিত ব্যক্তিরা কবেই বা ভয়ে পেয়েছেন৷ বরং তাঁদের অদম্য জেদের কাছে হার মানতে হয়েছিল পুলিশদের৷

এমন কত নাম, কত ব্যক্তিরা নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন দেশ স্বাধীনের যজ্ঞে৷ তাঁদের কতটুকু কথাই বা আমরা জানি৷

North 24 Parganas News: ব্রিটিশ আমলের রয়াল এয়ারপোর্ট ছিল এখানে! স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন মিউজিয়াম

উত্তর ২৪ পরগনা: অশোকনগরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে স্বাধীনতার আমলের নানা ইতিহাস। তবে অবহেলায়, সংরক্ষণের অভাবে রীতিমতো নষ্ট হতে বসেছিল সেই সব ।

ঐতিহাসিক স্থলে গড়ে উঠেছে গরুর ঘাটাল। জঙ্গলে ঢেকেছে আশপাশ। এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছিলেন, দ্রুত সংস্কার করে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হোক এই ঐতিহাসিক স্থলগুলিকে। পর্যটন মানচিত্রে যাতে জায়গা পায় এই স্থানগুলি, তারও আবেদন করা হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে।

তবে এবার অশোকনগরে এইসব ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করা স্মৃতিগুলিকে নিয়েই তৈরি হতে চলেছে বিশেষ সংগ্রহশালা বা মিউজিয়াম। অশোকনগরের বিধায়ক তথা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ছয় কোটি টাকার একটি ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সহ পর্যটন দফতরের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ের একটি মিটিং করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে অশোকনগর ছিল একটি রয়াল এয়ারপোর্ট স্টেশন বা বিমান ঘাঁটি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পরিত্যক্ত ইংরেজ আমলের এই এয়ারফিল্ড, ড: বিধান চন্দ্র রায়ের পরিকল্পনায় হয়ে ওঠে উদ্বাস্তু কলোনি। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী অশোকনগর কল্যাণগড় এলাকায় সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছিল। যুদ্ধবিমান ওঠা নামার জন্য বানানো হয়েছিল রানওয়ে।

বর্তমান অশোকনগরের গোলবাজার থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত গেলে এখনও দেখা যায় সেই রানওয়ের অংশবিশেষ। শুধু তাই নয়, সেই সময়ের যুদ্ধবিমান রাখার হ্যাঙারগুলিও এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের পরিকল্পনায় উদ্বাস্তু নগরী হিসেবে রূপ নেয় এই অশোকনগর।

আরও পড়ুন- ২১ জুলাইয়ের কথা ভেবেই শক্তিগড়ের ৩ কুইন্ট্যাল ল্যাংচা নষ্ট করল প্রশাসন! জেনে নিন কারণ

স্বাধীনতার ইতিহাসের নানা সাক্ষ্য বহন করলেও তা সংরক্ষণের যথেষ্টই অভাব লক্ষ্য করা যায় এইসব স্মৃতিচিহ্ন ঘিরে। যদিও অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার পৌরপ্রধান প্রবোধ সরকার জানান, বিষয়টি সরকারি স্তরে অনেকটাই এগিয়েছে। একটি মিউজিয়াম করার চিন্তাভাবনা রয়েছে, যেখানে এইসব ইতিহাস নিয়ে নানা ছবি ও অশোকনগরের ইতিহাস তুলে ধরা হবে মানুষের সামনে।

সরকারি অনুমতি মিললেই শুরু হবে কাজ। ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই অশোকনগরের প্রাচীন ইতিহাস ফুটে উঠবে বিশেষ এই সংগ্রহশালায়, এমনই মনে করা হচ্ছে।

রুদ্র নারায়ণ রায়