Tag Archives: Junior Doctors Protest
কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠকের ডাক! কী জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা? দেখুন ভিডিও
নবান্ন অথবা স্বাস্থ্য ভবনের মতো কোনও প্রশাসনিক দফতরে না হয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে কেন বৈঠক? এই প্রশ্ন তুলেও রাজ্য সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে কালীঘাটের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা৷
একই সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের প্রস্তাব মতো ১৫ জন নয়, কালীঘাটের বৈঠকেও তাঁরা ৩০ জন প্রতিনিধিকে নিয়েই যাচ্ছেন৷ স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে বাসে করে কালীঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা৷
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে খাবারের পাহাড়! আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পাশে মানুষ
উত্তর ২৪ পরগনা: রোদ, বৃষ্টি মাথায় করে এখনও চলছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভ। আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে পাঁচ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় হাজার হাজার জুনিয়ার ডাক্তার।
দীর্ঘ বেশ কয়েকদিন ধরে টানা চলা এই অবস্থান-বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকতে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে এসে পৌঁছচ্ছে বিপুল পরিমাণ খাবার, জলের বোতল-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
এত খাবার যে বিলিয়েও শেষ হচ্ছে না, তাই বাধ্য হয়ে এই মুহূর্তে আর খাবার না পাঠানোর আর্জিও জানাচ্ছেন আন্দোলনরত চিকিৎসক পড়ুয়ারা। অতিরিক্ত খাবার বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় এলাকার দুঃস্থ মানুষজন ও শিশুদের মধ্যে।
আরও পড়ুন- আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নয়, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর
অবস্থান বিক্ষোভ চলার মাঝেই শুরুর দিকে একসময় খাবারের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। এর পরই সমাজমাধ্যমে খাবারের সাহায্য চেয়ে ভাইরাল হয় পোস্ট। সেই থেকে বহু মানুষ অবস্থানরত ডাক্তারদের জন্য খাবার পাঠাতে শুরু করেন দিন রাত।
কী নেই সেই তালিকায়! চাল থেকে শুরু করে হরেক রকমের মিষ্টি, বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট থেকে শুরু করে ফ্রুট জুস, পানীয় জল, আরও কত কী! এত বিপুল পরিমাণ খাবার এসে পৌঁছয় যে রীতিমতো খাওয়ার লোকেরই অভাব পড়ে যায়।
ফল, ডিম-সহ অতিরিক্ত খাবার সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে। রয়েছে পর্যাপ্ত পানীয় জলের বোতল। বাধ্য হয়ে আর খাবার না পাঠানোর আর্জি জানাচ্ছেন ধর্নায় বসা ডাক্তাররা।
আরও পড়ুন- ‘কাল সারারাত আমি ঘুমোতে পারিনি! একটু সময় দিন’, শেষ চেষ্টা করে আর্জি মমতার
প্রতিদিন নানা প্রান্ত থেকে বহু সাধারণ মানুষজনও যোগ দিচ্ছেন তাঁদের এই অবস্থান-বিক্ষোভে। খোঁজ নিচ্ছেন তাদের নানা সুবিধা অসুবিধার। পাশে থেকে মানসিকভাবেও শক্তি জোগাচ্ছেন চিকিৎসক পড়ুয়াদের।
হরেক স্লোগানে এখন রীতিমতো মুখরিত স্বাস্থ্য ভবনের সামনের রাস্তা। তবে এই বিপুল পরিমাণ খাবারের আয়োজন দেখতেও এখন অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন স্বাস্থ্য ভবনের সামনে। বৃষ্টি মাথায় করে মাটি কামড়ে নিজেদের দাবি পূরণে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা।
Rudra Narayan Roy
Mamata Benerjee: ‘আমার উপর ভরসা রাখতে পারেন’, জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ মমতার, অবস্থান মঞ্চ থেকে আর কী কী বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর?
কলকাতা: স্বাস্থ্য ভবনের জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে আচমকা পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবস্থানরত ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার সঙ্গেই রয়েছেন রাজ্যে পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছানোর পরও ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান ওঠে’। এবার অবস্থান মঞ্চ থেকে তাঁর উপর আস্থা রাখতে অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘আপনারা আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন। আমি যখন আপনাদের ধরনা মঞ্চ পর্যন্ত আসতে পেরেছি, আমার উপর ভরসা রাখতে পারেন। আমাকে একটু সময় দিন সাধ্যমত চেষ্টা করব।’’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বিনা কারণে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। যদি প্রমাণিত হয় নিশ্চয়ই সাজা দেব। সুপ্রিম কোর্টে কেস চলছে। আমি চাইনা আপনাদের কোন ক্ষতি হোক। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বলতে আসিনি। আমি আপনাদের দিদি হিসেবে বলতে এসেছি। আপনাদের আন্দোলনে সমব্যথী ও সমসাথী। আপনারা জাস্টিস পাবেন।’’
অবস্থান মঞ্চে পৌঁছে মমতা ফের জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা নিজেদের মধ্যে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন কাজে ফিরুন। আপনাদের জন্য কোনও অ্যাকশান নেব না। আমি এসমা জারি করব না নিশ্চিন্তে থাকুন। কোনও ডাক্তারের বিরুদ্ধে কারুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিরুদ্ধে আমি। আমরা জানি আপনারা অনেক মহৎ কাজ করেন।’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা যারা ভাবছেন কেউ আমার বন্ধু। তারা আমার পরিচিত কেউ নয়। আপনাদের বিরুদ্ধে আমি কোনও ব্যবস্থা নেব না’’।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি নিজে ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি, আমি আন্দোলনের ব্যথা বুঝি। আপনার ধৈর্য্য ধরুন, আমার কথা শুনুন, আমি বলা হয়ে গেলে আপনারা স্লোগান দিন। এটা আপনাদের অধিকার। আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানাই। আমার পোস্ট নয়, মানুষের পোস্ট বড় কথা।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঝড় জলে আপনারা যেমন কষ্ট পাচ্ছেন, আমিও সে কারণে ঘুমোতে পারিনি। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিষেধ থাকা সত্ত্বেও আমি এসেছি। আপনাদের সব দাবি আমি সহানুভূতির সঙ্গে দেখব, কেউ দোষী হলে সে শাস্তি পাবেই। আমি কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। আপনাদের পরিবার পরিজন চিন্তা করছে, এই ঝড় জলে আপনারা রয়েছেন।’’
Junior Doctor’s Protest: ‘আমরা ডাক্তার, ধৈর্য অপরিসীম, যমের সঙ্গে লড়ে প্রাণ ছিনিয়ে আনি’, স্বাস্থ্যভবনে ফিরলেন দেবাশিস, কিঞ্জল-রা
কলকাতা: শেষমেশ বৈঠকটা হল-ই না। ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর নবান্ন ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে স্বাস্থ্যভবনে আন্দোলনস্থলে ফিরলেন ৩২ জন জুনিয়র চিকিৎসক।
অবস্থানমঞ্চে ফিরে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদারের ক্ষোভ, ” আমরা একটা সদর্থক উদ্দেশ্য নিয়ে নবান্ন গিয়েছিলাম। যে মেল করেছিলাম, তাতে স্পষ্ট জানিয়েছিলাম, আমরা আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। আলোচনা হবে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে, যাতে স্বচ্ছতা থাকে। আমরা ভেবেছিলাম বিচারহীনতার ৩৪ তম দিনে গিয়ে বিচার হবে। অতি দ্রুত কাজে ফিরতে চাই। হতাশা আর দুঃখের সঙ্গে দেখলাম, কোনওভাবেই লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয়। আমরা জানতে চেয়েছি, সমস্যা কীসের? সুপ্রিম কোর্টের শুনানি পর্যন্ত লাইভ স্ট্রিমিং হয়।”
দেবাশিস আর-ও বলেন, ” আমাদের ভয় ছিল, ক্লোজড-ডোর মিটিংয়ের আলোচনা সাধারণ মানুষ দেখতে না পারলে তাঁদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে পারে। আমরা কোনও জেদ করছি না। ৩২ জন প্রতিনিধি নবান্নের উদ্দেশ্যে গেলাম। দাঁড় করিয়ে রেখে বলা হল, সরাসরি সম্প্রচার নিয়ে কোনওরকম কোনও আলোচনাই সম্ভব নয়। ৩ ঘণ্টা বৃষ্টির মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হল। যাঁরা তথ্য প্রমাণ লোপাটে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে, তাঁদের শাস্তি দেওয়ার দাবিতে সরব আমরা। অথচ আমরাই ৩ ঘণ্টা ব্যর্থ হয়ে বসেছিলাম। নবান্নের দরজা আস্তে-আস্তে বন্ধ হয়ে গেল। কেন এত অনমনীয়তা? আজকে আমাদের যে লড়াই, তা বিচারের জন্য। আমরা নাকি চেয়ার চাই? আমরা যদি চেয়ার চাইতাম, নবান্নে যেতাম না। ৩৪ দিন ধরে আন্দোলন করছি। ৩ দিন ধরে রোদ, ঝড়, জল, বৃষ্টি উপেক্ষা করে রয়েছি। যন্ত্রণার জবাব দিতে হবে। আমরা আশাবাদী এখনও। অচলাবস্থা কাটানো হোক। অচলাবস্থার দায় আমাদের দিকে ঠেলে ঘৃণ্য রাজনীতি করা হচ্ছে।”
আরেক প্রতিবাদী চিকিৎসক পরিচয় পণ্ডার ভাষায়,” আমরা বন্ধ দরজা থেকে খালি হাতে ফিরে এসেছি। এই লড়াইয়ে কোনও রাজনীতি নেই। নির্যাতিতার বিচার চাওয়া রাজনীতি নয়। নির্যাতিতার মা-বাবা নিজে তাঁদের দায়ভার আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এই আন্দোলন সারা বাংলার আন্দোলন। রাজনীতি কোথায় লুকিয়ে আছে? আমরা ডাক্তার। আমাদের ধৈর্য অপরীসিম। যমের সঙ্গে লড়াই করে মানুষকে ছিনিয়ে নিয়ে আসি। আমাদের তো নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল নবান্ন। আমরা আমাদের দাবিগুলো জানাতাম। এই দরজা যদি আবার খোলা হয়, যে স্বচ্ছতা রাখার কথা আমরা বলছি, তা যদি রাখা হয়, আমরা আবার যাব।”