পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব চলাকালীন নানা ধরনের মুডসুইং হয়। তারই একটি হল নানা ধরনের আজব আজব খাবার ইচ্ছে। কিন্তু প্রাচীনকাল থেকেই আমরা শুনে আসছি ঋতুস্রাব চলাকালীন আচার ছোঁয়া যায় না। এটি কি নিছক কুসংস্কার? নাকি এর পিছনে রয়েছে কোনও বড় বৈজ্ঞানিক কারণ?প্রাচীনকালে ঋতুস্রাব নিয়ে নানা ধরনের কুসংস্কার ছিল। তারই একটি হল আচার ছোঁয়া যাবে না। তবে এই সংস্কারের কিন্তু বৈজ্ঞানীক ভিত্তিও রয়েছে।আগেকার দিনে বেশ কয়েকজন মহিলা মিলে আচার বানাতেন। আচার তৈরিতে লাগত কঠিন পরিশ্রম। মাসিকের সময় স্বাস্থ্য এমনিতেই খারাপ থাকত। আর এর ফলে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকত।পিরিয়ড ব্লাড থেকে অনেক সময় মহিলাদের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রাচীনকালে মহিলারা তাঁদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খুব একটা সচেতন ছিলেন না। তখন এত স্যানিটারি ন্যাপকিনও ছিল না। তাই তাঁদের হাইজিনের কথা ভেবেও এই সময় আচারের কাছে যেতে বারণ করা হত।ডাঃ সাবরিনা জানান, টক খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না এবং এটা একটা ভ্রম মাত্র। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও রিপোর্ট বা গবেষণা প্রকাশিত হয়নি যাতে বলা হয়েছে টক খাবার খেলে মহিলাদের বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়। এটি কেবল একটি মিথ।তবে এটাও ঠিক যে পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত মশলাদার খাবার শরীরে অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে।টকের কারণে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু খাবারে যদি বেশি লবণ থাকে তাহলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।যদি টক জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হয়, তবে অবশ্যই খান। ইচ্ছাকে এড়িয়ে যাবেন না। বিশেষ করে এইসময় যা খেতে ভাল লাগে তাই খান।পিরিয়ড চলাকালীন অনেকের টক খেতে ইচ্ছা করে। আচার বানাতে গিয়ে লোভে পড়ে অনেকে খেয়ে নেন। তা থেকে আটকানোর জন্যও এমনটা করা হত। তবে এক্ষেত্রে এটাও জানা দরকার যে পিরিয়ডে টক খাওয়া ক্ষতিকর কিনা।তবে পিরিয়ডস বা ঋতুস্রাবের সময় টক খেলে মহিলাদের বিশেষ ক্ষতি হয়, এমন প্রমাণ এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণায় পাওয়া যায়নি। এটা সাধারণ প্রচলিত ধারণা মাত্র! যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে। আর দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, তা এখনও প্রচলিত রয়েছে।অস্বীকৃতিঃ এই প্রতিবেদনটি সম্পর্কে বিশদ জানতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। নিউজ ১৮ বাংলা কোনও কিছু মানতে বাধ্য করে না। নিউজ ১৮ বাংলা কোনও কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দেয় না, কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে না।
কোচবিহার:বর্তমানে বহু মানুষ সমাজ সচেতনতার লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন। কেউ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়ে করছেন প্রচার, আবার কেউবা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাত্রা করছেন। এই মানুষগুলোর অদম্য চেষ্টার কারণে উপকার হচ্ছে অনেকের। এবার কোচবিহারে দেখা গেল তেমন এক ছবি। এক যুবতী ও এক যুবক মিলে সাইকেল নিয়ে যাত্রা করছেন গ্যাংটক থেকে উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত। তাঁদের লক্ষ্য একটাই, মহিলাদের মাসিক সংক্রান্ত নানান সমস্যা নিয়ে সচেতন করা।
সমাজসেবী প্রিয়া কুমারী জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। তিনি একজন পর্বতারোহী। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে একটা বিষয় বুঝেছেন, বহু মেয়েরা নিজেদের মাসিক সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে একেবারেই সচেতন নয়। এই কারণে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদেও ভুগতে হয় তাঁদেরকে। তাই সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন মহিলাদের সচেতন করতে। তিনি গ্যাংটক থেকে শুরু করেছেন যাত্রা।, যাবেন তিনি উত্তরপ্রদেশ। এই যাত্রা পথে মোট ৫৩ টি জেলা ঘুরবেন। পরবর্তীতে এই একই লক্ষ্যে গোটা দেশজুড়ে যাত্রা করার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছেন প্রিয়া কুমারী।
যাত্রা পথের বিভিন্ন জায়গায় থেমে বহু মহিলাদের একত্রিত করে সচেতন করছেন। তাঁদেরকে মাসিক সংক্রান্ত বিভিন্ন বার্তা দিচ্ছেন। তাঁদের এই কর্মকাণ্ডে সচেতন হচ্ছে বহু মানুষ।
পিরিয়ডের সময় জরায়ুর লাইনিং ভেঙে গিয়ে রক্তপাত হয়। তাই আমরা ধরে নিই ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু এখনও নিঃসৃত হয়নি, কাজেই পিরিয়ডের সময় প্রেগন্যান্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেন, পরিয়ডের সময়ও ডিম্বাণু সক্রিয় থাকতে পারে।চিকিৎসকদের মতে, পিরিয়ডের আশপাশের দিনগুলিতে ফার্টিলাইজেশনের সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে না। এই সময় ডিম্বাণু অত বেশি সক্রিয় থাকে না।কিন্তু পিরিয়ডের সময় প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি একদম থাকে না, তা নয়!কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ভুল হয়ে যায়। যেমন, অনেক ক্ষেত্রে ওভিউলেশনের সময় হালকা রক্তপাত হয়ে থাকে, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় মিড-সাইকেল বা ওভিউলেটরি ব্লিডিং বলে। অনেকেই একে পিরিয়ড ভেবে ভুল করেন, এবং প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি নেই ভেবে কোনও প্রোটেকশন ছাড়াই সঙ্গম করেন। আর তখনই হয় বিপদ! কারণ এই সময়টা সাইকেলের সবচেয়ে উর্বর সময়।কাজেই, প্রথমেই জেনে নিন, আপনার ঋতুচক্রের নিরাপদ দিন কোনগুলি? এটা জানতে হলে আগে জানতে হবে আপনার পিরিয়ড নিয়মিত হয় কি না। যদি নিয়মিত হয়, তা হলে কতদিন অন্তর হয়। সবচেয়ে কম যত দিন পর পর মাসিক হয়, তা থেকে ১৮ দিন বাদ দিতে হবে। পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে এই দিনটিই হল প্রথম অনিরাপদ দিন। আবার সবচেয়ে বেশি যতদিন পরপর পিরিয়ড হয়, তা থেকে ১০ দিন বাদ দিলে পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে এই দিনটিই হল শেষ ঝুঁকির দিন।ধরুন আপনার পিরিয়ড ২৮ থেকে ২০ দিন অন্তর হয়৷ তবে ২৮-১৮= ১০, অর্থাৎ পিরিয়ড শুরুর পর থেকে প্রায় ৯ দিন আপনার জন্য নিরাপদ, এই দিনগুলিতে কোনও সুরক্ষা ছাড়াই সঙ্গম করতে পারেন। গর্ভধারণ হবে না! ১০ নম্বর দিন থেকে শুরু হচ্ছে অনিরাপদ দিন! এই সময়ে সুরক্ষা ছাড়া সঙ্গম করলে প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি বিশাল! তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন, প্রেগন্যান্ট হন কী না হন, সঙ্গমের সময় সুরক্ষা অর্থাৎ কন্ডোম ব্যবহার করা কিন্তু মাস্ট! এমনও তো হতে পারে, আপনি প্রেগন্যান্ট হলেন না, অথচ সঙ্গীর থেকে কোনও যৌনরোগে আক্রান্ত হলেন! অযথা রিস্ক কেন নেবেন?৩০ দিন হল দীর্ঘতম মাসিকচক্র অর্থাৎ মেন্সটুরাল সাইকেল ৷ তাই ৩০-১০= ২০, অর্থাৎ ২০ নম্বর দিনটিই হল শেষ ঝুঁকির দিন ৷ ২১তম দিন থেকে আবার নিশ্চিন্তে যৌনসঙ্গম করুন, প্রেগন্যান্সির কোনও চান্স নেই। কিন্তু ১০ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সুরক্ষা ছাড়া সঙ্গম করলে গর্ভধারন হতে পারে৷ আপনি যদি প্রেগন্যান্ট না হতে চান, তবে পিরিয়ড শুরুর প্রথম সাতদিন ও শেষের প্রথম সাতদিন যৌনমিলনের জন্য নিরাপদ৷ তবে, পিরিয়ড নিয়মিত না হলে এই পদ্ধতি কার্যকর হবে না।