Tag Archives: Shantiniketan

Visva Bharati University: একটি গাছের মৃত্যু! রবীন্দ্রনাথের বকুল ‘হত্যায়’ তদন্তের দাবি

বীরভূম: যার জন্য নাম, তারই অস্তিত্ব আজ সঙ্কটে।বকুলতলার সেই বকুল গাছকে মেরে ফেলার চক্রান্তের তদন্তে নমুনা সংগ্রহ বিশ্বভারতীর সম্পত্তি বিভাগ ও উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের। বড় বড় গাছ পছন্দ করতেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বকুলতলার ছায়ায় দু’দণ্ড শান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন বহু বরেন্য মানুষ। তবে এই বকুলতলা যে অনেকের পছন্দ নয় সেটা বোঝা গেল যখন তাকে হত্যা করা হল।

সবুজের আচ্ছাদনে মোড়ানো শান্তিনিকেতন যেন ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সবুজের সৌন্দর্য। এর ফলেই বাড়ছে দূষণ। কিন্তু এলাকায় একের পর এক গাছ নির্বিচারে কেটে নেওয়ার পর এবার গাছে বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলার অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে বকুলতলার বিখ্যাত বকুল গাছটিকে।

আর‌ও পড়ুন: এই গরমে শরবত হাতে নিয়ে জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে যুবক! তারপর যা হল

শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদের আড্ডা ছিল এই প্রাচীন বকুলতলায়। সারা পৃথিবীতে গাছ সংরক্ষণ করে উন্নয়নের কাজ চলছে। অথচ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদাসীন মনোভাব এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তখনকার প্রাচীন গাছগুলো ক্রমশাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অভিযোগ পাওয়ার পরপরই সম্পত্তি বিভাগ ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ গাছটি কী কারণে মরে যাচ্ছে তা জানার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গার্ডেন ইনচার্জ সুদর্শন বিশ্বাস জানান, নমুনা সংগ্রহের পর পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে গাছে কোনওকারণ বসত ইনফেকশন রয়েছে। একরকম বিষাক্ত ছত্রাক বাসা বেঁধেছে গাছে। খাদ্য তৈরি করতে না পারায় স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যু হয়েছে গাছটির।

যদিও বিশ্বভারতীর এই সাফাইয়ে খুশি নয় স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই জায়গায় আবাসন তৈরির জন্য বকুল গাছটিকে সুপরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে।

সৌভিক রায়

Birbhum News: আগুন তাতে দমে গেছেন ট্যুরিস্টরাও! সোনাঝুরির হাটে এ কী হতশ্রী হাল

বীরভূম: চাঁদিফাটা গরমে হাঁসফাঁস করছে বীরভূম। বৈশাখের দমবন্ধ করা উত্তাপে ফুটছে বীরভূমের রাস্তাঘাট। নাজেহাল প্রায় সকলেই। বদলে গিয়েছে শান্তিনিকেতনে সোনাঝুরির চেহারা।তীব্র গরমে খাঁ খাঁ করছে হাট।দেশ-বিদেশের পর্যটক সহ কলকাতার বাবুদের দেখা নেই। স্থানীয় হস্তশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা হাতেগোনা অল্প সংখ্যক পসরা সাজিয়ে বসলেও বেলা বাড়তেই খালি হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট-সহ সোনাঝুরি চত্বর। বিকিকিনি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় হাট ব্যবসায়ীরা।

রুজি রোজগারে কার্যত বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র গরম।আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যায়,  চলতি সপ্তাহে ৪০ ডিগ্রির আশেপাশেই ঘোরাঘুরি করছে তাপমাত্রা। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।

সঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি রয়েছে বীরভূম জেলায়। প্রখর রোদের তাপে নাকাল জনজীবন। পর্যটক হাটে না আসায় সমস্যায় পড়েছেন বাউল শিল্পীরা সহ ব্যবসায়ীরা। হোটেল, হোম স্টে, রিসর্ট ও রেস্তোঁরা ব্যবসায়ীরাও সমস্যায়। পর্যটক না আসায় টোটো-অটো চালকেরদেরও মাথায় হাত।কার্যত জনশূন্য শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাট। শান্তিনিকেতনে বেড়াতে এলে সোনাঝুরির খোয়াই হাট ঘুরে যাওয়াটা মাস্ট। সারা বছরই সেখানে পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত।তবে তীব্র গরমে পর্যটন শুন্য সোনাঝুড়ি।

প্রায় ২০ বছর আগে শান্তিনিকেতনে বনদফতরের জায়গায় হাট চালু হয় নিছক কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী ও হস্তশিল্পীদের উদ্যোগে।এখন প্রত্যেক সপ্তাহে শনি এবং রবিবার বিশাল বড় আকারে মেলার আয়োজন হয়।তবে চড়া গরমে পর্যটক না আসায় রুটি রুজির প্রশ্নে হাটে বসা প্রায় ১৭০০ শিল্পী ও ব্যবসায়ীরা সমস্যায়।

সোনাঝুরির হাট কমিটির সম্পাদক তন্ময় মিত্র বলেন, রোদের তীব্রতায় যায় যায় অবস্থা হাটের ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত লু ও গরমের কারণে পর্যটকেরা কেউই হাটমুখী হচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে হাট ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসা বন্ধ করেছেন। তবে স্থানীয় হস্তশিল্পী, কুটিরশিল্পী ও আদিবাসী শিল্পীরা কেউ কেউ বিকিকিনি উদ্দেশ্যেই জঙ্গলের মধ্যেই হাটে বসছেন। বিকিকিনি না হওয়ায় চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছে সকলের।

বাউল শিল্পীরা জানাচ্ছেন এই হাটেই গান করেই সংসার চলে।তবে তীব্র গরমে কার্যত কলকাতার বাবুদের দেখা নেই ।এই হাটের ওপরেই নির্ভর আমাদের রুটিরুজি। কীভাবে দিন গুজরান হবে ভয়ানক দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

পরিবেশবিদদের দাবি,গত কয়েক বছর ধরেই শান্তিনিকেতনের তাপমাত্রা ক্রমশ বেড়েছে।এর মূল কারণ প্রকৃতি নষ্ট হওয়া। জঙ্গলের ক্ষতি করে সোনাঝুরি ধ্বংস করা হচ্ছে। নিত্যদিন একের পর এক গাছ কাটা পড়ছে।গাছ কেটে বানানো হচ্ছে রিসর্ট।এর ফলে জলাশয়গুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই দিন দিন গরম বাড়ছে। আগামী দিনে মানুষ সতর্ক না হলে এই তাপমাত্রা আরও কয়েকগুণ বেশি বৃদ্ধি পাবে।

Souvik Roy

Sonajhuri Haat: সোনাঝুরির হাটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন! জমি চিহ্নিত করছে বন দফতর

বীরভূম: কবিগুরুর শহর বোলপুর শান্তিনিকেতন। এখানকার রবীন্দ্রনাথ কেন্দ্রিক বিভিন্ন দর্শনীয় জিনিসের পাশাপাশি অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির খোয়াই হাট। সারাবছরই এখানে পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত।

প্রায় ২০ বছর আগে বন দফতরের জায়গায় সোনাঝুরির হাট চালু হয়েছিল। নিছকই কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী ও হস্তশিল্পীদের উদ্যোগে পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে শনি এবং রবিবার বড় আকারে এই হাট বসে। এই দুই দিন ছাড়াও প্রতিদিন হাটে কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা হয়। বর্তমানে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণস্থল হল এই হাট। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্রের জন্য ওই এলাকার জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন পরিবেশপ্রেমীরা।

পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, চারচাকা গাড়ি, বিশেষ করে টোটোর দৌরাত্ম্য ছাড়াও জঙ্গলে দিনের পর দিন মাটি চুরি, একের পর এক গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন দফতরের জায়গায় অবৈধ নির্মাণ, গজিয়ে ওঠা হোটেল ও রিসোর্টের দাপটে প্রাকৃতিক হাটটি সৌন্দর্য হারিয়ে ক্রমশ কৃত্রিম হাটে পরিণত হচ্ছে। সদ্য ইউনেস্কো শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ আখ্যা দিয়েছে। এর পর‌ও কারোর যেন হুঁশ নেই। দিন দিন খোয়াই নিজের ঐতিহ্য হারাচ্ছে। সেই কারণে চিন্তায় পরিবেশপ্রেমীরা।

আর‌ও পড়ুন: বডি বিল্ডিংয়ে বাকি ভারতকে মাত মালদহের! বিরাট সাফল্য বাংলার জেলার

এবার জঙ্গল বাঁচাতে পিলার দিয়ে চিহ্নিতকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করল বনদফতর। বীরভূমের জেলা বন দফতরের আধিকারিক দেবাশিস মহিমা প্রসাদ প্রধান জানান, সোনাঝুরি হাটকে নিজেদের সীমানায় আয়ত্তের মধ্যে আনতে চলেছে বন দফতর। বন দফতরের অধীনে থাকা জমি চিহ্নিতকরণ ছাড়াও শীঘ্রই ১২১ কিলোমিটার জঙ্গলে পিলার দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখেই জঙ্গলের ক্ষতি কোনওভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

এদিকে জমি চিহ্নিতকরণ শুরু হতেই বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় হস্তশিল্পী, কুটিরশিল্পী ও আদিবাসীশিল্পীরা বিকিকিনি উদ্দেশ্যেই জঙ্গলের মধ্যেই হাটে বসাচ্ছেন। হাটকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার মহিলারও স্বনির্ভর হয়েছেন, আয়ের নতুন উৎস খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু বন দফতর জায়গাটি ঘিরে ফেললে সেখানে হাটের আর অস্তিত্ব থাকবে না বলে আশঙ্কা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

সৌভিক রায়