Tag Archives: Rabindra nath Tagore

রবীন্দ্র জয়ন্তী

২৫ বৈশাখ বাঙালির প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিন। হ্যাঁ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনেই ধুমধাম করে পালিত হয় রবীন্দ্র জয়ন্তী। আগের দিন থেকেই পাড়ায় পাড়ায় চলে ম্যারাপ বাঁধার কাজ। টাঙানো হয় মাইক। রবীন্দ্র জয়ন্তীর সন্ধ্যায় বসে আসর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিতে মালা দিয়ে ধূপ ধুনো জ্বালিয়ে শুরু হয় জয়ন্তী উদযাপন। পাড়ার বাচ্চা থেকে বড় এমনকী মহিলারাও মেতে ওঠেন রবীন্দ্রনাথের লেখা গান, কবিতা, নাটক, গীতিনাট্যে। গঙ্গা জলেই গঙ্গা পুজো চলে গোটা সন্ধ্যেটা।

রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যকে একা হাতে উৎকর্ষের শিখরে পৌঁছে দিয়েছিলেন, সে নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু এ জন্য শুধু সাহিত্যের গণ্ডির মধ্যে তাঁকে বেঁধে রাখা যায় না। রবীন্দ্রনাথ একাধারে চিত্রকর, সুরকার, গীতিকার, দার্শনিক এবং সমাজ সংস্কারক। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেও তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁরই সৃষ্টি। ১৯৩১ সালে প্রথম অ-ইউরোপীয় গীতিকার হিসেবে নোবেল পুরস্কার পান রবীন্দ্রনাথ।  

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জয়ন্তীর তারিখ:

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬১ সালের ৭ মে। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেটা পড়ে ২৫ বৈশাখ।

ইতিহাস এবং প্রাপ্তি:

কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের জন্ম। তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন তৎকালীন কলকাতার বিখ্যাত ব্যবসায়ী, আধ্যাত্মিক এবং সমাজ সংস্কারক। মা সারদাদেবী। রবীন্দ্রনাথের ১৩ ভাই-বোন। তিনিই সর্বকনিষ্ঠ। অল্প বয়সেই মা মারা যান। ব্যবসার কাজে বাবা দেবেন্দ্রনাথকে গোটা দেশে ঘুরতে হত। তাই বাড়ির পরিচারিকাদের কাছেই বেড়ে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ।

মাত্র ৮ বছর বয়সেই লেখালিখি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু বাবা চাইতেন রবীন্দ্রনাথ বড় হয়ে ব্যারিস্টার হন। সে জন্য তাঁকে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। ভর্তি করেন ল স্কুলে। কিন্তু প্রথাগত পড়াশোনায় কোনওদিনই মন টেঁকেনি রবীন্দ্রনাথের। অচিরেই ল স্কুলের পাট চুকিয়ে ফেলেন তিনি। শুরু হয় তাঁর নিজস্ব পড়াশোনা। গোগ্রাসে পড়েন শেক্সপিয়ার, গুলে খান ইংরেজি সাহিত্যের দিকপালদের লেখা। এরপর তিনি চলে আসেন ভারতে। দেশে ফেরার পর তাঁর কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়। এই সময়ই কবিতার সংকলন ‘মানসী’-ও শেষ করেন তিনি।  

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জয়ন্তী উদযাপন:

আগেই বলা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ বাঙালির প্রাণের ঠাকুর। তাই তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠান উদযাপনে কোনও ফাঁক রাখে না বাঙালি। পাড়ায় পাড়ায় তো বটেই, স্কুল কলেজেও এদিন অঘষিত ছুটি থাকে। তাঁর লেখা গান, নাটক, কবিতা, গীতিনাট্যের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি এবং শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে এই দিনটা পালন করা হয় ধুমধামের সঙ্গে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর ছবি দেওয়া ৫ টাকার কয়েন বাজারে এনেছিল ভারত সরকার।

Viral Rabindranath: ২৫ বৈশাখ এল বলে, তার আগেই দিনহাটার রাস্তায় এ কোন রবীন্দ্রনাথ!

কোচবিহার: সামনেই ২৫শে বৈশাখ। এই বিশেষ দিনেই বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাইতো এই বিশেষ দিনটিকে মনে রাখতে বাঙালি প্রতি বছর সমারোহের সঙ্গে দিনটিকে পালন করে আসছে। তবে এবার ২৫শে বৈশাখের আগেই কোচবিহারের ঘটে গেল এক আশ্চর্য ঘটনা। কোচবিহারের রাস্তায় দেখা মিলল রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের।

তবে রবীন্দ্র নাথ তো পরলোক গমন করেছেন বহুদিন পূর্বে তবে এটা আবার কে? নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে মনে। না ইনি সত্যিই রবীন্দ্র নাথ নয়। অবিকল রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের মতন দেখতে একজন ব্যক্তি। যা বাড়ি কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার আলোকঝাড়ি এলাকায়। তাঁর নাম ফনিন শর্মা। বয়স তাঁর প্রায় ৭৬ বছর।

ফনিন শর্মা জানান, “তিনি শুরু থেকে এরকম ছিলেন না। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর আগে থেকে এই বিষয়টি শুরু হয় তাঁর জীবনে। তাঁর মামা মারা যাওয়ার পর তিনি দাড়ি বড় করতে শুরু করেন। আর তারপর থেকেই তাই জীবন এই পরিবর্তন। তখন অনেকেই তাঁকে দেখে অবিকল রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের মতন মনে করতে শুরু করেন। তারপর থেকে এলাকার মানুষেরাও তাঁকে দেখে রবীন্দ্র নাথ বলেই ডাকতে শুরু করেন। যদিও এই বিষয়টি তিনি বেশ উপভোগ করেন। তবে তিনি সামনাসামনি কোনদিন রবীন্দ্র নাথকে দেখেন নি। এছাড়া তিনি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের মতন লিখতে জানেন না। তবে রবীন্দ্র নাথের সর্ম্পকে লোকের মুখে মুখে শুনেছেন অনেককিছু।\”

তিনি আরও জানান, “২৫ শে বৈশাখের দিনে অন্যান্য বাঙালিদের মতন তিনিও পালন করেন রবীন্দ্র জন্ম জয়ন্তী। তবে তিনি কোন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন না। একবার এলাকার কিছু ছেলেরা তাঁকে রবীন্দ্র নাথ সাজাতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি বাড়িতে না থাকায় সেই সুযোগ হয়নি। তবে তিনি এভাবেই ভাল রয়েছেন। তিনি রবীন্দ্র নাথ সেজে ঘুরে বেড়াতে চান না।”

তাঁর ছেলে শিবু শর্মা জানান, “দীর্ঘ সময় ধরে বাবাকে এমন দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। যদিও বাবার এই রূপ দেখতে তাঁদের বেশ মজাই লাগে। তবে তাঁর বাবাও এই বিষয়টিকে বেশ অনেকটাই উপভোগ করেন।” তবে রাস্তায় এই ব্যক্তিকে চোখে পড়লে যেকোন মানুষ রবীন্দ্র নাথ বেঁচে উঠেছেন ভেবে ভুল করতেই পারেন।

Sarthak Pandit

Visva Bharati University: একটি গাছের মৃত্যু! রবীন্দ্রনাথের বকুল ‘হত্যায়’ তদন্তের দাবি

বীরভূম: যার জন্য নাম, তারই অস্তিত্ব আজ সঙ্কটে।বকুলতলার সেই বকুল গাছকে মেরে ফেলার চক্রান্তের তদন্তে নমুনা সংগ্রহ বিশ্বভারতীর সম্পত্তি বিভাগ ও উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের। বড় বড় গাছ পছন্দ করতেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বকুলতলার ছায়ায় দু’দণ্ড শান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন বহু বরেন্য মানুষ। তবে এই বকুলতলা যে অনেকের পছন্দ নয় সেটা বোঝা গেল যখন তাকে হত্যা করা হল।

সবুজের আচ্ছাদনে মোড়ানো শান্তিনিকেতন যেন ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সবুজের সৌন্দর্য। এর ফলেই বাড়ছে দূষণ। কিন্তু এলাকায় একের পর এক গাছ নির্বিচারে কেটে নেওয়ার পর এবার গাছে বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলার অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে বকুলতলার বিখ্যাত বকুল গাছটিকে।

আর‌ও পড়ুন: এই গরমে শরবত হাতে নিয়ে জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে যুবক! তারপর যা হল

শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদের আড্ডা ছিল এই প্রাচীন বকুলতলায়। সারা পৃথিবীতে গাছ সংরক্ষণ করে উন্নয়নের কাজ চলছে। অথচ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদাসীন মনোভাব এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তখনকার প্রাচীন গাছগুলো ক্রমশাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অভিযোগ পাওয়ার পরপরই সম্পত্তি বিভাগ ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ গাছটি কী কারণে মরে যাচ্ছে তা জানার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গার্ডেন ইনচার্জ সুদর্শন বিশ্বাস জানান, নমুনা সংগ্রহের পর পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে গাছে কোনওকারণ বসত ইনফেকশন রয়েছে। একরকম বিষাক্ত ছত্রাক বাসা বেঁধেছে গাছে। খাদ্য তৈরি করতে না পারায় স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যু হয়েছে গাছটির।

যদিও বিশ্বভারতীর এই সাফাইয়ে খুশি নয় স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই জায়গায় আবাসন তৈরির জন্য বকুল গাছটিকে সুপরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে।

সৌভিক রায়