Tag Archives: short tour

Short Trip: সপ্তাহ শেষে টুক করে ঘুরে আসুন এই গ্রাম, মন জুড়ানো প্রকৃতির মাঝে ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয়

পশ্চিম মেদিনীপুর: পাহাড়, সমুদ্র কিংবা বিভিন্ন প্রাকৃতিক ক্ষেত্র আপনার দেখা শেষ। তবে ঘুরতে যাওয়া আপনার শখ। কাজের ক্লান্তির পর অবসর কাটাতে একটু ঘুরে আসার প্ল্যান করছেন? পরিবারের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে দেখার প্ল্যান করলে একদিনের ছুটি নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন এই জায়গা। এলে মন ভাল হয়ে যাবে। বেশ কয়েকটা মাটির বাড়িতে বর্ণমালা লেখা। কোথাও রয়েছে বিদ্যালয়। শান্ত নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশ আপনার মন ভাল করে তুলবে। কলকাতা থেকে বেশ কাছেই রয়েছে এমন সুন্দর এই জায়গা, যা শুধু বড়দের জন্য নয়, বাচ্চাদের‌ও ঘুরে দেখার একদম আদর্শ।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একেবারে এক প্রান্তে অবস্থিত এই অনন্য সুন্দর গ্রামটি। তবে পূর্ব মেদিনীপুরে ও হুগলি জেলার খুব কাছেই অবস্থিত। বীর বিপ্লবী ক্ষুদিরাম থেকে বিদ্যাসাগর, বহু বীর ও জ্যোতিষ্ক জন্মেছিলেন এই মাটিতে। জেলার বীরসিংহ গ্রামের সন্তান বিদ্যাসাগর। তৎকালীন হুগলি জেলায় জন্ম হলেও বর্তমানে সেই জন্মস্থান পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে অবস্থিত। এখন সেই স্থানকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সপ্তাহন্তের ছুটিতে কিংবা অবসর কাটাতে এখানে এলে জানতে পারবেন, বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনের বিভিন্ন দিক। জন্ম তাঁর বীরসিংহে হলেও কখন‌ওই গণ্ডিতে আটকে থাকেননি। তাঁর কাজের পরিচিতি ছড়িয়ে দিয়েছেন গোটা বিশ্বে। তাঁর গ্রাম ও গ্রামের ভিটে সরকারের উদ্যোগে এখন পর্যটন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রাচীন গ্রাম্য পরিবেশের আদল দেখতে পাবেন বীরসিংহে পদার্পণ করলে। এখানে বিদ্যাসাগরের জন্মস্থানকে অন্যরকমভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির। মায়ের কোলে ছোট্ট বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি দেখলে মন ভরে যাবে।

আর‌ও পড়ুন: সুন্দরবনে থাকবে শুধুই দক্ষিণরায়, ব্যাঘ্র দিবসে প্রতিজ্ঞা বন দফতরের

গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়বে তোরণ, যা সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ণপরিচয়ের নানা বর্ণের আদলে। শুধু তাই নয়, বিদ্যাসাগরের জন্মস্থানে রয়েছে ছোট্ট সংগ্রহালয়, যা পরিচিত বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির হিসেবে। বাইরের দেওয়ালে বিভিন্ন সময়ের নানা ছবি আঁকা। বিদ্যাসাগরের জীবনের বিভিন্ন পর্যায় মডেল আকারে তুলে ধরা হয়েছে। আছে তাঁর মর্মর মূর্তি, সুদৃশ্য বাগান। পাথরে খোদাই করা আছে বিদ্যাসাগরকে নিয়ে লেখা মাইকেল মধুসূদন দত্তের সেই বিখ্যাত কবিতা। দেখবেন পুরানো কুয়ো। বিদ্যাসাগরের ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী এখানে দেখবার অন্যতম বিষয়। বীরসিংহ গ্রামে এলে মন আপনার জুড়িয়ে যাবেই। স্মৃতি মন্দিরে ঢোকার সময় নজরে আসবে মাইল ফলক, যেখানে বিদ্যাসাগরের নানা সময়ের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডকে তুলে ধরা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের বহু স্মৃতি এখানে ধরে রাখার চেষ্টা করেছে প্রশাসন। শুধু তাই নয়, মায়ের নামে গ্রামে গড়ে তোলা হাইস্কুল এখানে অন্যতম দর্শনীয় ক্ষেত্র। আছে বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত গ্রন্থাগার।

বিদ্যাসাগর ছোটবেলায় কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের পাঠশালায় পড়েছিলেন। সেই পাঠশালার হদিশ পাবেন এখানে। দেখতে দেখতে নষ্টালজিক হয়ে পড়বেন। স্মৃতিতে ভেসে উঠবে বিদ্যাসাগর সম্পর্কে বইতে পড়া বিষয়গুলো। রয়েছে বিদ্যাসাগরের মায়ের নামাঙ্কিত বিদ্যালয়, যা হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বীরসিংহ ভগবতী বিদ্যালয়কে।

কলকাতার খুব কাছেই এই জায়গা। হলে সপ্তাহান্তে দিব্যি ঘুরে আসতে পারেন। ঘাটাল বাস স্ট্যান্ড থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব। ক্ষীরপাই বাজার থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এই জায়গা। কলকাতা থেকে বাস কিংবা অন্যান্য যাতায়াত মাধ্যম সুলভে পাবেন। কলকাতা থেকে বাসে এলে আপনাকে আসতে হবে ঘাটাল কিংবা ক্ষীরপাই। সেখান থেকে পৌঁছে যেতে পারবেন এই জায়গায়। সরকারি কটেজ না থাকলেও এই দুই পুর এলাকায় মিলবে বেসরকারি লজ।
আপনাদের সুবিধার জন্য দেওয়া হল গুগল লোকেশন- https://maps.app.goo.gl/VhkKQzbt1RNzAp4S9

রঞ্জন চন্দ

Offbeat Destination: শান্ত সুবর্ণরেখায় সূর্যাস্ত থেকে প্রাচীন দুর্গে ইতিহাসের গন্ধ! ছোট্ট ছুটিতে স্বল্প খরচে বেড়াতে আসুন এই চরাচরে

রঞ্জন চন্দ, পশ্চিম মেদিনীপুর: বেড়াতে যেতে কমবেশি সকলেই ভালবাসেন। কর্মব্যস্ততার মধ্যে কাছাকাছি অফবিট ডেস্টিনেশন সকলেরই খুব পছন্দের। উইকএন্ডে কিংবা একদিনের ছুটি নিয়ে পাহাড় কিংবা সমুদ্র ছেড়ে এবার ঘুরে দেখতে পারেন আঁকাবাঁকা ছোট নদী কিংবা ইতিহাসের নানা নিদর্শন। একদিকে যেমন দিনের শেষে সূর্যাস্ত মন ভাল করবে তেমনই বাড়ির ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়েরা কিংবা নিজেরাও জানতে পারবেন ইতিহাসের নানা কথা। যারা একটু সময় বাঁচিয়ে অন্তত একটা দিন কোথাও ঘুরে আসার প্ল্যান করছেন তারা অবশ্যই ঘুরে দেখতে পারেন জঙ্গলে ঘেরা পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লক কেশিয়াড়ি।

এই জেলার প্রান্তিক এক ব্লক কেশিয়াড়ি। জীবনযাত্রার উন্নতি হলেও মূলত মূলবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস এখানে। ব্লকের এক প্রান্তে বয়ে চলেছে শান্ত সুবর্ণরেখা। অন্যদিকে রয়েছে সাজানো-গোছানো একটি পার্ক এবং ইতিহাসের এক জীবন্ত নিদর্শন। জেলা সদর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে এমন সুন্দর সাজানো পেছানো একটি ব্লক মন কাড়বে আপনার।

যারা ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন, তাঁদের অবশ্যই প্রিয় জায়গার মধ্যে থাকবে এই কেশিয়াড়ি। কেশিয়াড়িতে রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাসের নিদর্শন কুরুমবেড়া। চারিদিকে পাথর দিয়ে ঘেরা সাজানো গোছানো একটি ইতিহাসের ইমারত। ঘুরে দেখতে পারবেন জানতে পারবেন ইতিহাসের নানা কথা। কেশিয়াড়ি ব্লকের গগনেশ্বর এলাকায় রয়েছে এই প্রাচীন দুর্গ।

আরও পড়ুন : জামাইষষ্ঠীর ভূরিভোজে বাড়িতেই বানান ঘন সুস্বাদু লাল দই! রইল সহজ রেসিপি

শুধু তাই নয়, সেখান থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে শিশুদের জন্য পার্ক, ‘প্রত্যুষা’। রয়েছে বোটিং, ফুলের বাগান, বাচ্চাদের খেলার নানা জায়গা এবং কিছুক্ষণ সময় কাটানোর একটি সুন্দর সবুজে ঘেরা এই পার্ক। বিকেলটা অবশ্য কাটাতে পারবেন নদীর পাড়ে। কেশিয়াড়ি বাজার থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সুবর্ণরেখা নদী। রয়েছে নদীতে নৌকোবিহারের ব্যবস্থা। সুবর্ণরেখা নদীতে বিকালের সূর্যাস্ত এবং হালকা আলোয় মায়াবী জঙ্গলকন্যা সেতু মন ভালো করে দেবে আপনার।

রেলশহর খড়গপুর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কেশিয়াড়ি ব্লকের এই সমস্ত ঘোরার নানা জায়গা। রেলপথে এলে খড়্গপুরে নেমে সেখান থেকে বাস বা অন্যান্য গাড়ি করে আসা যাবে এখানে। তবে যারা সপ্তাহান্তে ঘুরতে পছন্দ করেন তারা অবশ্যই ঘুরে দেখতে পারেন কেশিয়াড়ি ব্লকের বিভিন্ন ঘোরার জায়গা।