ভারতে জমির দাম প্রতিদিন আকাশ ছোঁয়া হচ্ছে। মুম্বই, কলকাতা. চেন্নাইয়ের মতো মেট্রো শহরগুলিতে বাসস্থানের জন্য বেশি জমি আর অবশিষ্ট নেই। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের নাগরিকদের আবাসন চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত ৪০ থেকে ৮০ লাখ হেক্টর জমির প্রয়োজন হবে। এমন পরিস্থিতিতে আগামি দিনগুলিতে জমির চাহিদা আরও বাড়বে তা নিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে আপনার মাথায় এমন প্রশ্ন আসতেই পারে যে ভারতের সবচেয়ে বড় জমির মালিক কে?
ভারতে কার সবচেয়ে বেশি জমি আছে? এর সহজ উত্তর হল ভারত সরকার। গভর্নমেন্ট ল্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (জিএলআইএস) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারত সরকারের প্রায় ১৫,৫৩১ বর্গ কিলোমিটার জমি রয়েছে। এই জমিটি ৫১ টি মন্ত্রণালয় এবং ১১৬ টি পাবলিক সেকটরের মালিকানাধীন।
বিশ্বে কমপক্ষে ৫০টি দেশ রয়েছে যা ভারত সরকারের মালিকানাধীন জমির চেয়ে ছোট। যেমন কাতার (১১৫৮৬ বর্গকিলোমিটার), বাহমস (১৩৯৪৩ বর্গকিলোমিটার), জামাইকা (১০৯৯১ বর্গকিলোমিটার), লেবানন (১০৪৫২ বর্গকিলোমিটার), গাম্বিয়া (১১২৯৫ বর্গকিলোমিটার), সাইপ্রাস (৯২৫১ বর্গকিলোমিটার), ব্রুনাই (৫৭৬৫ বর্গকিলোমিটার), বাহরিন (৭৭৮ বর্গকিলোমিটার), সিঙ্গাপুর (৭২৬ বর্গকিলোমিটার) সহ আরও অনেক।
কোন মন্ত্রণালয়ের জমি সবচেয়ে বেশি? আপনি যদি মন্ত্রক-ভিত্তিক তথ্যের দিকে তাকান, তাহলে রেলওয়ের সর্বাধিক জমি রয়েছে। ভারতীয় রেলের সারা দেশে ২৯২৬.৬ বর্গ কিলোমিটার জমি রয়েছে। এর পরেই রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (সেনাবাহিনী) এবং কয়লা মন্ত্রক (২৫৮০.৯২ বর্গ কিমি)। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় চতুর্থ (১৮০৬.৬৯ বর্গ কিমি), ভারী শিল্প (১২০৯.৪৯ বর্গ কিমি জমি) পঞ্চম এবং নৌপরিবহন (১১৪৬ বর্গ কিলোমিটার জমি) ছয় নম্বরে রয়েছে।
ভারত সরকারের পরে জমির দিক থেকে কে দ্বিতীয়? সুতরাং কোনও নির্মাতা বা রিয়েল এস্টেট নেই সেই তালিকায়। ক্যাথলিক চার্চ অফ ইন্ডিয়া ভারত সরকারের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম জমির মালিক। এটি সারা দেশে হাজার হাজার গির্জা, ট্রাস্ট, দাতব্য সংস্থা, সোসাইটি, স্কুল, কলেজ এবং হাসপাতাল পরিচালনা করে। ক্যাথলিক চার্চ অফ ইন্ডিয়া ১৯৭২ সালের ইন্ডিয়ান চার্চ অ্যাক্টের পরে প্রচুর জমি অধিগ্রহণ করেছিল, যার ভিত্তি একসময় ব্রিটিশরা স্থাপন করেছিল। ব্রিটিশরা যুদ্ধের পরে তাদের দখল করা জমি সস্তায় আলোচনার জন্য ইজারা দিত যাতে তারা খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতে পারে।
গির্জার জমির মূল্য কত? মিডিয়ামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ক্যাথলিক চার্চ সারা দেশে ১৪৪২৯ টি স্কুল ও কলেজ, ১০৮৬ টি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ১৮২৬ টি হাসপাতাল এবং ডিসপেনসারি পরিচালনা করে। একটি অনুমান অনুযায়ী, ক্যাথলিক চার্চের মোট জমির মূল্য ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
আরও পড়ুনঃ Knowledge Story: পেনের বাংলা তো কলম, কিন্তু পেনসিলের বাংলা কী বলুন তো? উত্তর অজানা ৯০ শতাংশের
জমির নিরিখে তিন নম্বরে রয়েছে ওয়াকফ বোর্ড। ১৯৫৪ সালের ওয়াকফ আইনের অধীনে গঠিত ওয়াকফ বোর্ড একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। এটি সারা দেশে হাজার হাজার মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান পরিচালনা করে এবং এই জমিগুলির মালিক। মিডিয়ামের মতে, ওয়াকফ বোর্ডের কমপক্ষে ৬ লক্ষেরও বেশি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। বেশিরভাগ ওয়াকফ জমি এবং সম্পত্তি মুসলিম শাসন কালে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল।