মিষ্টি সবজির পরিবর্তে করলা, লঙ্কা,বেগুন উৎপাদন করছেন জঙ্গলমহলের সবজি চাষিরা 

Bangla Video: হাতির হানা থেকে সবজি রক্ষা করতে চাষে আমূল পরিবর্তন জঙ্গলমহলের চাষিদের 

ঝাড়গ্রাম : হাতির হাত থেকে সবজি রক্ষা করতে জঙ্গলমহলের সবজি চাষিরা বদলে ফেলেছে তাদের সবজি চাষের ধরণ। ফলস্বরূপ হাতি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে বা চাষের জমিতে ঢুকে পড়লেও অক্ষত থাকছে সবজি ক্ষেতের সবজি । দীর্ঘদিন ধরে হাতির খাদ্য রুচির উপর নির্ভর করেই এমন পদক্ষেপ সবজি চাষিদের।

জানা গিয়েছে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে খাবারের সন্ধানে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির দল। জমিতে থাকা ফসল খেয়ে সবাড় করে দিচ্ছে। সবজির খেতে হানা দিয়ে লাউ, কুমড়া,ঝিঙে ,বরবটি, টমেটোর এই ধরনের সবজি লুটেপুটে খাচ্ছে হাতির দল। কিন্তু করলা, ঢেঁড়স , লঙ্কা এবং বেগুন এই সমস্ত সবজি গুলিকে তারা ছুঁয়েও দেখেনা। এই থেকে গ্রামবাসীদের অনুমান হাতি মিষ্টি সবজি খাচ্ছে তেঁতো, ঝাল ও কাঁটা জাতীয় সবজিতে তাদের অনীহা রয়েছে। তারপরেই হাতির হাত থেকে নিজেদের সবজি রক্ষা করতে এবং আর্থিক পরিস্থিতি স্বচ্ছ রাখার জন্য মিষ্টি সবজির বদলে তেতো, ঝাল ও কাঁটাযুক্ত সবজির চাষ শুরু করেছে জঙ্গলমহলের সবজি চাষিরা।

আরও পড়ুন: বড় দেবীর দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন হয় এই দিঘীতে! দিঘীর বেহাল দশায় দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা

আঙ্গারনালী গ্রামের বাসিন্দা সুশীল কুমার মাহাতো বলেন, “খাবারের সন্ধানে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আমাদের এলাকায় হাতি হানা দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত ব্যাপক পরিমাণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি করছে। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি লাউ,কুমড়া, বরবটি,শসা এই সমস্ত ফসল খেয়ে হাতি শেষ করে দিচ্ছে। টমেটোর এর খেতে হাতি এমন ভাবে হানাদেই যে চোরে চুরি করলো দু-একটা পড়ে থাকে কিন্তু হাতির হানায় একটাও টমেটোর খুঁজে পাওয়া যায় না। অপরদিকে আমরা দেখেছি করলা, লঙ্কা, বেগুন এবং ঢেঁড়স এই সমস্ত সবজি হাতি খাচ্ছে না। তখনই আমরা বুঝতে পারলাম তেতো, ঝাল এবং কাঁটাযুক্ত সবজি হাতি খেতে পছন্দ করে না। তাই আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে এই সমস্ত সবজি গুলি চাষ করছি\”।

ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের পাথরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আঙ্গারনালী থেকে শুরু করে একাধিক জঙ্গল লাগুয়া গ্রামগুলিতে এভাবেই চলছে সবজির উৎপাদন। খড়গপুর বন বিভাগের অন্তর্গত কলাইকুন্ডা রেঞ্জের জঙ্গলগুলিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি হাতির দল যেগুলি প্রতিনিয়ত খাবারের সন্ধানে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আর্থিক অবস্থা স্বাভাবিক রাখতে পারছে এলাকার সবজি চাষিরা।

বুদ্ধদেব বেরা