চলছে স্কুল

Free Class: গরিব ঘরের সন্তানরাও পাক শিক্ষার আলো

বীরভূম: সতীপীঠের অন্যতম কঙ্কালীতলায় গুরুকুল শিক্ষানিকেতনে শিক্ষা নিয়ে স্বপ্ন বুনছে খুদের দল। লক্ষ্য স্কুলছুট ও দিনমজুর পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা।

বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যায় কোথাও শিক্ষক নেই তো কোথাও আবার দেখা নেই পড়ুয়ার। শিক্ষক ও পড়ুয়ার সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই বীরভূম জেলাতেও। ইংলিশ মিডিয়াম বেসরকারি স্কুলগুলির দাপটে ধুঁকছে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলি। এমন অভিযোগ দেখা যায় প্রায়শই। অথচ ঠিক তার উল্টো চিত্র ধরা পড়ল এবার কঙ্কালীতলায়। স্কুলছুট, গরিব মেধাবী পড়ুয়াদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান ও এলাকার দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ার, ট্র্যাফিক কর্মী সহ এলাকার যুবক- যুবতীরা।

আর‌ও পড়ুন: পরপর দু’দিনে বাজ পড়ে পূর্ব বর্ধমানে আটজনের মৃত্যু

সতীপীঠ কঙ্কালীতলায় গড়ে উঠেছে গুরুকুল শিক্ষানিকেতন। এলাকার দিন আনি দিন খাওয়া আদিবাসী গরিব দুঃস্থদের কথা চিন্তা করেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মহম্মদ ওহিউদ্দিনও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আদিত্যপুর, গোপালপুর, সীতাপুর, পদ্মাবতীপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আদিবাসী ও তফসিলি জাতি পরিবারগুলির সদস্যরা সকাল হলেই বেরিয়ে পড়েন দিনমজুরির কাজে। সন্তানদের পড়াশোনার করানোর ক্ষেত্রে তেমন মন দিতে পারেন না। বাধ্য হয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি হলেও পেন খাতা ও যাবতীয় দেখাশোনার অভাবে স্কুলছুট হতে হয়। এই পরিস্থিতি বদলাতেই পেশা সামলে অবসর সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম শুরু করেছেন সিভিক ট্র্যাফিক কর্মী প্রাণকৃষ্ণ কৈবর্ত সহ এলাকার অরুণ মুখোপাধ্যায়, পিঙ্কি রুইয়ের মত যুবক- যুবতীরা।

হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়াকে নিয়ে পাঠশালা শুরু করলেও আজ পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় শতাধিক। দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনা পয়সায় পড়ানো হচ্ছে এই পাঠশালা। বোলপুর সংলগ্ন কঙ্কালীতলায় এমন অভিনব মহৎ উদ্যোগে খুশি সকলেই। বোলপুর থানার কর্মরত সিভিক ট্র্যাফিক কর্মী প্রাণকৃষ্ণ কৈবর্ত বলেন, এই পাঠশালায় পড়া ছাত্রছাত্রীদের পরিবারের অনেকেই রাজমিস্ত্রি, দৈনিক দিনমজুর, কেউ পরিচায়িকার কাজ করেন। আবার কেউ কোনও রকমে দিন গুজরান করেন। এঁদের পাশে না দাঁড়ালে হয়ত এতদিনে তারা পড়াশোনা ছেড়ে বাঁচার তাগিদে অন্য কোনও পেশায় চলে যেত। এমন উদ্যোগের ফলে শিক্ষার আলো দেখছে গরিব আদিবাসী পরিবারের ছেলে-মেয়েরা।

সৌভিক রায়