বিদ্যালয়ের এক কোনে লাইব্রেরি 

School Library: অজ গ্রামের স্কুলে এলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবেন

পশ্চিম মেদিনীপুর: গ্রামীণ এলাকায় ছোট্ট একটি একচালা প্রাথমিক বিদ্যালয়। হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ। বাইরে থেকে তেমন বোঝা না গেলেও বিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে এক আলাদা অনুভূতি দেবে আপনাকে। বিদ্যালয়ের একটি কোণে একটি ছোট্ট আলমারি। লাইব্রেরি হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে একটি দিক। যেখানে রয়েছে নানান গল্পের বই এবং খেলার সামগ্রী। ছাত্রদের মধ্যে বই পড়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ তৈরি করতে একচালা এই বিদ্যালয়কে সাজানো হয়েছে নতুনভাবে। দেওয়াল জুড়ে শিক্ষাদানের নানা বিষয়বস্তুকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গ্রামের এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলছুট রুখতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন অভিনব ভাবনা আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

স্কুলের পাঠ্য বইয়ে থাকা বিষয়গুলো কি কেবলই মুখস্তের জন্য? নম্বর তোলার ইঁদুর দৌড়ে কিছু বুঝে বা না বুঝে মুখ বুজে পড়ে যাওয়া বর্তমানে একটি ক্ষতিকারক সমাজিক ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই চাপ এসে পড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি ভীতি কাটাতে এবং সকল ছেলেমেয়েদের কাছে একটি আনন্দের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে বিদ্যালয়কে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সাজানো হয়েছে নতুনভাবে। দেওয়ালে নানান ছবি, সঙ্গে বর্ণপরিচয়কে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পড়ুয়াদের কাছে। রয়েছে ইংরেজি বর্ণমালা থেকে মাস কিংবা বিভিন্ন দিনের নাম।

আর‌ও পড়ুন: হিউয়েন সাং, মেগাস্থিনিস’র মত পরিব্রাজক হতে চান তারকেশ্বরের যুবক, সাইকেলে পাড়ি বাংলাদেশ

বিভিন্ন গল্প অবলম্বনে আঁকা হয়েছে নানান ছবিও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের প্রান্তিক এক এলাকা রাধামোহনপুরে এমনই বিদ্যালয় নজর কেড়েছে জেলার মানুষের। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অন্যরকমভাবে শিক্ষাদানের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ডেবরা ব্লকের রাধামোহনপুর হাটপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। একচালা স্কুল হলেও শিক্ষকদের উদ্যোগে এক লহমায় বদলে গিয়েছে গোটা স্কুলের পরিবেশ। মজার ছলে শিশুরা শিখতে পারছে তাদের প্রাথমিক পাঠ।

যখন প্রান্তিক এলাকায় সরকারি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করার প্রবণতা কমছে, তখনই এই স্কুলে এলে আপনিও মুহূর্তেই বদলে যাবেন। শিক্ষার যাঁতাকলে বাচ্চাদের ফেলে রাখা নয়, তাদের মধ্যে আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা এবং খেলাধুলোর মানসিকতা গড়ে তুলতে এমন উদ্যোগ সকলের প্রশংসা পেয়েছে। গতানুগতিক সরকারি স্কুলের সেই ছবির বাইরে শিক্ষকদের সদিচ্ছা এবং গ্রামের মানুষের সহায়তায় এমন যে স্কুলের রূপ দেওয়া সম্ভব তা প্রমাণ করেছে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার এই প্রাথমিক স্কুল।

রঞ্জন চন্দ