মুর্শিদাবাদ: গঙ্গার ভাঙন জলন্ত সমস্যা মুর্শিদাবাদ জেলার। বিশেষ করে জঙ্গিপুর মহকুমার লালগোলা, রঘুনাথগঞ্জ-২, সুতি-১ ও সামসেরগঞ্জ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙন প্রবণ। এই ভাঙন প্রতিরোধে কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে ছিলেন এই এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের পেশ করা বাজেটে গঙ্গার ভাঙন প্রতিরোধে কোনও অর্থই বরাদ্দ করা হয়নি। ফলে প্রবল হতাশ এখানকার মানুষ।
চোখের সামনেই গত কয়েক বছরে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙনে ভিটে মাটি হারিয়েছেন কয়েক মুর্শিদাবাদের কয়েকশো বাসিন্দা। এই ভাঙনের যা ব্যাপকতা তা মোকাবিলা করার রাজ্য সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এনিয়ে গত সোমবার বাজেট অধিবেশনে সরব হয়েছিলেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান। কিন্তু তারপরেও বাজেটে কোনও অর্থই বরাদ্দ করলেন না অর্থমন্ত্রী। ফলে ভাঙন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ক্রমেই চিন্তা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি, কী বলছে স্বাস্থ্য দফতর?
ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা আনন্দ সাহার কথায়, গত বছর রাজ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল ভাঙন রোধের জন্য। রাজ্যে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাজেটে ভাঙন প্রতিরোধের কোনও দিশা পাওয়া গেল না। এদিকে বিঘের পর বিঘে জমি, বাড়ি হারিয়ে কার্যত সর্বস্বান্ত হচ্ছে এখানকার মানুষ।
উল্লেখ্য, তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর মোদী সরকারের প্রথম বাজেট ছিল। মঙ্গলবার বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর মুখে বিহার ও অন্ধপ্রদেশের জন্য দরাজ ঘোষণা শোনা গিয়েছে। তবে বাংলার জন্য প্রায় কিছুই ছিল না এই বাজেটে, এমনই অভিযোগ রাজ্যে শাসক দল তৃণমূলের। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। অন্ধ্রপ্রদেশের অমরাবতীকে ঢেলে সাজানোর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। বিহার পেয়েছে সড়ক, বিমানবন্দর, মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু করে সার্বিক পরিকাঠামোগত উন্নয়নের বরাদ্দ। পড়শি রাজ্য বিহার যখন এত কিছু পাচ্ছে, তখন বাংলার জন্য বিশেষ কিছুই দেখা গেল না বাজেটে। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গা ভাঙনে আর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সকলেই।
কৌশিক অধিকারী