বিদ্যালয়ের দেওয়াল

Bangla Video: দেওয়ালে পট চিত্র, মধুবনী পেইন্টিং, জানেন কোথায় আছে এমন বিদ্যালয়?

পশ্চিম মেদিনীপুর: বিদ্যালয়ের দেওয়াল জুড়ে আঁকা নানা ছবি। কোথাও বাংলার পটচিত্র, কোথাও আবার মধুবনী পেইন্টিং। কোথাও আবার বাংলা সংস্কৃতির নানা ছবি। প্রথম দেখে আর্ট গ্যালারি নাকি বিদ্যালয় চিনতেই পারবেন না। স্কুলের মধ্যে প্রবেশ করলে ভেতরের দেয়ালেও নানা ছবি। কোথাও নামতা, কোথাও অংক, আবার কোথাও ইংরেজি বর্ণমালার নানা ছবি। কোথাও সৌরজগৎ, ফুল, পাখির ছবি এঁকে ছাত্রছাত্রীদের কাছে এক আনন্দের বিদ্যালয় উপহার দিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। বিদ্যালয়ের প্রতি ভীতি কাটাতে ছাত্র-ছাত্রীদের মতকরে বিদ্যালয়েরকে সাজিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। রয়েছে খেলার বাগান, কিচেন গার্ডেন, এমনকি স্মার্ট ক্লাসও। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় এই বিদ্যালয় নজর কেড়েছে সকলের।

আরও পড়ুন: মিলছে না রোদের দেখা, ক্ষতি হলে আর্থিক সাহায্যের দাবি মৃৎশিল্পীদের

১৯৫৪ সালে মাটির ঘর থেকে পথ চলা শুরু পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের হরিবাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তবে ধীরে ধীরে তার পরিধি বাড়তে থাকে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় শতাধিক। প্রসঙ্গত, গ্রামীণ এলাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। তবে বিদ্যালয়ের প্রতি ছাত্রছাত্রীরা যাতে আকৃষ্ট হতে পারে সেই কারণে বিদ্যালয়ের ভেতরের এবং বাইরের দেওয়াল সাজিয়ে তোলা হয়েছে নানান ছবিতে। বিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে একদিকে দেখা যাবে ভারতের বিভিন্ন সংস্কৃতির ছবি, যেমন পটচিত্র, মধুবনী পেইন্টিং সহ নানান ছবি। এছাড়াও দেওয়ালে আঁকা রয়েছে বিভিন্ন দেশের ব্যবহৃত মুখোশ ও তাল পাতার সেপাইসহ বিভিন্ন লোকআচারের নানা ছবি।

মাটির বাড়ি থেকে পথ চলা শুরু হলেও হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবং সাহায্যে বদলে যায় বিদ্যালয়ের চালচিত্র। ২০১৩ সালে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের দেখে দাঁড়িয়ে যায়। বাচ্চাদের চকলেট কিনে দেওয়ার পাশাপাশি এক শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের সাহায্যের জন্য আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এরপর রাজ্যসভার সাংসদ তহবিল থেকে এবং সর্বশিক্ষা মিশনের আর্থিক সহায়তায় দু তল বিশিষ্ট এই বিদ্যালয়টি তৈরি হয়। ছোট থেকে বড় সকলের জন্য রয়েছে স্মার্ট এডুকেশন।

স্বাভাবিকভাবে প্রান্তিক এলাকার এই বিদ্যালয় একদিকে যেমন এলাকায় পড়াশোনার মান বৃদ্ধি করছে, এলাকায় সাক্ষরতার দিকেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। যখন গ্রামীণ এলাকায় ছেলেমেয়েরা বিদ্যালয়ের মুখী হতে তেমন চায়না, তখনই বিদ্যালয়ের এই অভিনব চিন্তা ভাবনাকে কুর্নিশ জানাতে হয়।

রঞ্জন চন্দ