পূর্ব বর্ধমান: রঘু ডাকাত, এই নাম প্রায় সকলেরই জানা। বিভিন্ন গল্পের বই থেকে শুরু করে সিনেমার পর্দাতেও রঘু ডাকাতের নাম পাওয়া যায়। এখনও কান পাতলে শোনা যায় রঘু ডাকাতের বিভিন্ন গল্প কাহিনী। রঘু ডাকাতের বিভিন্ন ঘটনাবলী ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রান্তে। তবে কথিত আছে, রঘু ডাকাত ছিল মা কালীর ভক্ত। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে সে মা কালীর পুজো দিয়ে, তারপর রওনা দিত ডাকাতির উদ্যেশ্যে।
সেরকমই পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও এক জায়গা রয়েছে, যেখানে মা কালীর পুজো করত রঘু ডাকাত নিজে! কথিত আছে, বেশ কয়েক যুগ আগে রঘু ডাকাত পার্শ্ববর্তী জেলা নদীয়া থেকে ব্রিটিশ পুলিশের তাড়া খেয়ে কেতুগ্রামের অট্টহাসের জঙ্গলে তার আস্তানা গেড়েছিল। বর্ধমান,বীরভূম, মুর্শিদাবাদে দাপটের সঙ্গে ডাকাতি করত রঘু । এমনকী অট্টহাস মন্দির সূত্রে জানা যায়, ডাকাতি করতে যাবার আগে রঘু ডাকাত এই অট্টহাস জঙ্গলে মা কালীর পুজো করে রওনা দিত।
আরও পড়ুন: ঘন-ঘন অসুখে পড়ছেন? ঠিক নিয়মে বাসন মাজছেন তো? না হলেই বড় বিপদ
কেতুগ্রামের এই জায়গায় ঈশাণী নদীর তীরে জঙ্গলের মধ্যেই বেশ কয়েকবছর কাটিয়েছিল রঘু ডাকাত। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের অট্টহাসের সতীপীঠে রঘু ডাকাতের স্নেহের মা কালী আজও পূজিত হয় মহা ধূমধামে। এই প্রসঙ্গে অট্টহাস সতীপিঠের সেবক রামজি মহারাজ জানিয়েছেন, “আমাদের এখানে আছে রটন্তী কালী মন্দির। ওইটাকেই রঘু ডাকাতের কালি বলে। কথিত আছে রঘু ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ওখানে পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত। তবে আমি ডাকাত বলতে রাজি নই তার কারণ সে গরিবদের জন্য ডাকাতি করতে যেত।”
পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম সংলগ্ন দক্ষিণডিহি গ্রামের শেষ ভাগে রয়েছে অট্টহাস সতীপীঠ। মন্দিরের সেবকের কথায় এখানে দেবী স্বয়ংভু। তাই এই মন্দিরের সঠিক বয়স বলা যায় না। জঙ্গলাকীর্ণ, নিরিবিলি এই স্থানে দেবীর মূল মন্দির ছাড়াও রয়েছে নাট মন্দির, কালীমন্দির এবং পঞ্চমুণ্ডির আসন। প্রতিবছর দোল পূর্ণিমার সময় মহাপুজো অনুষ্ঠিত হয় এই মন্দির চত্বরে। অপার সবুজ আর নির্জন ঈশানী নদীর বাঁকে মন শান্ত করা পরিবেশে ঘুরে আসতে পারেন পূর্ব বর্ধমান জেলার এই শক্তিপীঠ থেকে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী