একাধিক সার্টিফিকেট ও মেডেল হাতে যুবক

Bangla Video: কথা বলতে না পারলেও দুর্দান্ত ফুটবল খেলেন কৌশিক, ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পরিবার

নদিয়া: ছোটবেলা থেকেই মুক ও বধির। তবে বাবা-মা তা বুঝতে দেননি। আর পাঁচটা সাধারণ ছেলেমেয়ের মতই সাধারণ বিদ্যালয় থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন মাজদিয়ার পূর্ণগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা কৌশিক মিত্র। এরপর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৩০। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরিক অক্ষমতাকে ভুলে ছোটবেলা থেকেই ফুটবল ভালোবাসেন এই যুবক। স্কুল এবং কলেজের হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। কৃতিত্বের সঙ্গে বিভিন্ন মেডেল ও ট্রফি ও জিতেছেন।

শুধু তাই নয়, ১৮ তম ওয়েস্ট বেঙ্গল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেফ ফুটবল প্রতিযোগিতায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন কৌশিক মিত্র। তবে এত সাফল্যের মধ্যেও তাঁকে ঘিরে পরিবারের উৎকণ্ঠা ক্রমশই বাড়ছে।

আর‌ও পড়ুন: হ্যান্ডমেড রাখি তৈরি করে স্বনির্ভর হওয়ার বার্তা গৃহশিক্ষকের

বাবা শঙ্কর মিত্র রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী ছিলেন। বেশ কয়েক বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন পেনশনের টাকাতেই কোন‌ওরকমে সংসার চলে তাঁর। আর সেই কারণেই বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাঁদের অবর্তমানে মুখ ও বধির একমাত্র সন্তানের দেখভাল কী করে চলবে এই নিয়েই সর্বক্ষণ চিন্তায় থাকেন তাঁরা।

কৌশিকের বাবা শঙ্কর মিত্র জানান, ছেলেকে বরাবরই আর পাঁচটা সাধারণ ছেলের মতই মানুষ করেছেন। তিনি একজন সাধারণ সরকারি কর্মচারী ছিলেন। বর্তমানে পেনশনের টাকায় সংসার চলে। কিন্তু ছেলের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কাতর আবেদন জানান ছেলের একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।

কৌশিকের মা সর্বানি মিত্র জানান, আমি আমার ছেলেকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। আমার ছেলে মুক ও বধির। বর্তমানে আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ। ও রাজ্যের হয়ে ফুটবল খেলে এসেছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। খেলাধুলোয় খুবই ভাল ছোটবেলা থেকেই। আমাদের অবর্তমানে ও একেবারেই অনাথ হয়ে যাবে। বর্তমানে কৌশিক কম্পিউটারে টুকটাক কাজকর্ম করে। যদিও তাতে ভবিষ্যৎ কিছু দেখতে পান না কৌশিকের বাবা-মা। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীকে তাদের কাতর আবেদন, তাঁদের সন্তানের জন্য যেন একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

মৈনাক দেবনাথ