বাউল শিল্পী বিশ্বরূপ

Baul Artist: বিশ্বরূপের নেই দুই হাত এক পা, তারপরেও সব পারেন তিনি

বাঁকুড়া: নেই দুই হাত, এক পা। তা সত্ত্বেও বাইক চালিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাঁকুড়ার বাউল শিল্পী বিশ্বরূপ সুর। এছাড়াও কাটছেন কাঠ, খেলছেন ক্রিকেট, ধরছেন ক্যাচ এবং পুকুর পারে গাইছেন হৃদয় নিংড়ানো লোকসংগীত। জন্ম থেকেই নেই দুই হাতের কব্জি থেকে আঙুল পর্যন্ত এবং একটি পা, তবুও অভিযোগ নেই তাঁর। গান গেয়ে, নিজের কাজ নিজে করে গ্রামবাসীদের চোখের মণি বিশ্বরূপ। তবে তাঁর বুকে জমে আছে গভীর কষ্ট এবং দীর্ঘশ্বাস। স্ত্রী মারা গেছেন, বিশ্বরূপ থাকেন মা এবং ৫ বছরের পুত্র ও আড়াই বছরের কন্যার সঙ্গে।

কন্যা স্বাভাবিক হলেও বিশ্বরূপের শিশুপুত্র বিশেষভাবে সক্ষম, উঠে বসতে পারে না। কথাও বলতে পারে না ছেলে। সেইসঙ্গে বিশ্বরূপকে ছাড়া থাকতেও পারে না সে। নিজের এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাবা এবং মা দু’জনেরই ভূমিকা অবলীলায় পালন করে চলেছেন বাউল শিল্পী বিশ্বরূপ। তাঁর ধ্যান জ্ঞান এখন শুধুমাত্র ছেলে। বিশ্বরূপ বলেন, যখন মনের কষ্ট আর বাধা মানতে চায় না, যখন সবকিছু অসহ্য হয়ে ওঠে তখন গলা খুলে পুকুরপাড়ে গান ধরেন।

আর‌ও পড়ুন: ভোট উৎসব শেষ, ফের ভিন রাজ্যের পথে পরিযায়ী শ্রমিকরা

বাঁকুড়া-২ ব্লকের আইনা গ্রামের বিশ্বজিৎ যখন যেখানে ডাক পান গান গেয়ে দুটো রোজগার করেন। সেই রোজগার যেন মরুভূমির বালির মত। ভবিষ্যৎ কী হবে? বিশেষভাবে সক্ষম পুত্রের কী হবে? চিকিৎসা? পড়াশোনা? এত প্রশ্ন, এত অনিশ্চয়তা মনের মধ্যে নিয়েই সব সময় মুখে চওড়া হাসি দেখা যায় বিশ্বরূপের। বিকেলে পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ক্রিকেট খেলে। এভাবেই খুঁজে পান মানসিক শান্তি। আগে লটারি বিক্রি করতেন বিশ্বরূপ, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পুত্রকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়ার চেষ্টা করেন।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী