বহরমপুরে বিষ্ণুপুর কালীবাড়ি

Kaushiki Amavasya: কৌশিকী অমাবস্যার অন্ধকার ঘুচিয়ে আলোয় ঝলমলে বিষ্ণুপুর কালীবাড়ি! কোথায় জানেন?

মুর্শিদাবাদঃ কৌশিকি অমাবস্যার বিশেষ দিনে শুধু তারাপীঠ নয়, মুর্শিদাবাদ জেলার বিষ্ণুপুর কালীবাড়ি মা কালী এখানে করুনাময়ী রুপে পুজিত হন। যদিও নিত্যদিন চলে মায়ের পুজো ও শনিবার মঙ্গলবার বিশেষ পুজো চলে দর্শনের জন্য। তবে সোমবার সারাদিন ধরেই কৌশিকি অমাবস্যা তিথিতে চলছে বিশেষ পুজো।

কথিত আছে ট্রেনের চালক ট্রেন থামিয়ে প্রনাম করে ট্রেন চালান ট্রেন চালক। নবাব সারফারাজ খানের আমলে কাজের সন্ধানে মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় আসেন এক ব্রাহ্মণ তার নাম কৃষ্ণ চন্দ্র শর্মা পরে তিনি হোতা উপাধি পান। পরে কাশিমবাজার নবাবের অধীনে তিনি কাজ পেয়ে যান কৃষ্ণ চন্দ্র হোতা। ৬০বছর বয়স পর্যন্ত তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য চিন্তা করেন কিন্তু তখন কৃষ্ণ চন্দ্র হোতা তিনি স্বপ্নাদেশ পান তোর কাছে আসছি তুই এখানে থাক। একবছর পর কন্যা সন্তান জন্ম দেন এবং তার নাম দেওয়া হয় করুনাময়ী, সেই করুনাময়ী দিনে দিনে বড় হতে থাকে। বাবা করুনাময়ী কে আগলে রাখতেন।

আরও পড়ুন: ভাসা জাল দিয়ে মাছ ধরেই হবে পুজোর নতুন পোশাক! কী এই ভাসা জাল?

এছাড়াও কথিত আছে যে, এই বিষ্ণুপুর ছিল জঙ্গল ও মহা শস্মান। দৈনিক অফিস থেকে ফেরার পথে কৃষ্ণ চন্দ্র হোতা তিনি ধ্যান করতেন বিষ্ণুপুরে বট বৃক্ষের তলায় এবং তার সামনে খেলা করতেন তার কন্যা। একদিন মনে পড়ে অফিসে কোনও জরুরি কাজ ফেলে এসেছেন। কাশিমবাজার আবার যেতে হবে। যদিও মেয়ে ক্লান্ত ছিল আর যেতে চাইনি। সেই সময় তার পিতা পরিচিত শাখারি যাচ্ছেন রাস্তা দিয়ে, দেখতে পান এবং তাকে বলা হয় তার সন্তান কে বাড়ি পৌঁছে দিতে। শাখারি সঙ্গে নৌকা করে যাওয়ার সময় হাত ছেড়ে জলের উপর বসে পড়ে করুনাময়ী। অনেক ডাকাডাকি করেও করুনাময়ী আর আসেননা এবং করুনাময়ী জেদ করে তার হাতে শাখা পড়িয়া দেওয়া হয়। সেই মতো শাখা পড়িয়ে দেন শাখারি। এই কথা জানতে পারে তার পিতা এবং জলে এসে শাখা পড়া দুটো হাত দেখতে পান এবং সেই দুটি হাত জলে আন্তরিত হয়ে যায়। হোতা মেয়ে শোকে বিষ্ণুপুর মহা শস্মানে ধ্যানস্থ, এবং তিনি মায়ের দর্শন পান এক গাছের কঠুরিতে এবং তার পরেই মাকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করা হয় দেবী কালীরুপে। লালগোলা রাজা যগেন্দ্র নারায়ণ রায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেই কাল থেকে আজও পূজো হয়ে আসছে। দেবী এখানে চতুভুজা রুপে পুজিত হন ।

আজকে মহা শস্মানে পরিবর্তে বসেছে বিশেষ আলোকসজ্জা তাই আজও বহু মানুষ আসেন এই মন্দিরে কালীপুজো পুজো দিতে। পাশাপাশি বছরের অন্যান্য সময় চলে পুজো। বিশেষ করে শনিবার ও মঙ্গলবার ভিড় জমান বহু সাধারণ মানুষ। তবে আজকে দিনভর চলছে বিশেষ পুজো বলেই জানা গিয়েছে ।

কৌশিক অধিকারী