দেবী মূর্তি

Durga Puja 2024: দেবী দুর্গা এখানে ‌রাজবংশী কন্যা রূপেই পূজিতা! জাঁকজমকের পরিবর্তে আন্তরিকতা ও আভিজাত্যই মুখ্য

সুরজিৎ দে, জলপাইগুড়ি: গা ভরা অলংকার, চমকপ্রদ সাজসজ্জায় নয় এখানকার দেবী প্রতিমা যেন ঘরের মেয়ে। সজ্জায় ঠিক যেন গ্রামের মাঠে ঘাটে গোয়ালে কাজ করা এক গৃহবধূ। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির আমগুড়িতে এমনই অভিনব রূপে দেবী দুর্গা পূজিত হয়ে আসছেন বহু বছর ধরে। এ বছরও অন্যথা হবে না। উত্তরবঙ্গের অন্যতম জনজাতি রাজবংশী। আর সেই রূপই ফুটে ওঠে জলপাইগুড়ির বসুনিয়া পরিবারের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোর দেবী প্রতিমায়।

রাজবংশী জনজাতির আদলেই তৈরি হয়, এখানকার উমা। এলাকার আর পাঁচটা রাজবংশী বাড়ির মতোই তৈরি হয় উমার মণ্ডপ। অসাধারণ নয়, একেবারে সাধারণ রূপেই পূজিতা হন দেবী দুর্গা। প্রাচীন ঐতিহ্য পালিত হয় বসুনিয়া বাড়ির দুর্গাপূজা উৎসবে। বর্তমানে বসুনিয়া বাড়ি বংশধর সুনীল কুমার বসুনিয়া এই দুর্গাপুজো করে থাকেন। জানা যায়, এই দুর্গাপূজা, ১৮১০ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বসুনিয়া বাড়িতে।

তৎকালীন সময়ে রাজরোষে কোচবিহার রাজসভা থেকে বিতাড়িত হয়ে ফালাকাটা হয়ে জলপাইগুড়ি আমগুড়ির অন্তর্গত চাপগড় বসবাস শুরু করতে থাকে ধনবর বসুনিয়া। আমগুড়ি তখন ছিল গভীর জঙ্গল বাঘ ভাল্লুকের। সেই সময় ব্যবসা-বাণিজ্য ভালকরার জন্য বসুনিয়া পরিবার দুর্গাপূজা শুরু করে। এ পুজোও যেন টক্কর দেয় কোচবিহার রাজবাড়ির দুর্গা পুজোকেও।

আরও পড়ুন : ২ ইঞ্চি আদা! ২ কাপ জল! তাড়িয়ে দেয় মেদের স্তর, গাটের ব্যথা, ঋতুস্রাবের ব্যথাকে! এভাবে খেতে হবে দিনের এই সময়ে

এ বছর এই পুজো ২১৪ বছরে পদার্পণ করবে। জন্মাষ্টমীর পর নন্দ উ‍তসবে কাদাখেলার মধ্য দিয়েই সূচনা হয়ে গিয়েছে এ বছরের পুজোর প্রস্তুতি। এবারের পুজো প্রসঙ্গে বসুনিয়া পরিবারের সদস্য সুশীলকুমার বসুনিয়া বলেন, যে সময় এই পুজোর যাত্রা শুরু সেই সময় এই অঞ্চলে কোনও মৃৎশিল্পী ছিল না, গ্রামের মানুষ নিজে হাতেই গড়ে নিতেন মা দুর্গার মূর্তি। আজ আর সেই জাঁকজমক নেই, তবে আজও মায়ের মুখ তৈরি হয় রাজবংশী গৃহবধূর আদলেই। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষের ভিড় জমে ঘরের মেয়ে উমাকে দেখতে।