আনারস ভর্তি করা হচ্ছে ট্রাকে

Health Benefits of Pineapple: আম-কাঁঠালের দিন শেষ, বর্ষার রাজা আনারসের এই গুণগুলি জানেন?

নদিয়া: আম, কাঁঠাল ফলে বাংলার প্রায় প্রতিটি জেলাতেই। তবে অতিথি ফল তরমুজের কদর সদ্য শেষ হয়েছে গ্রীষ্ম ফুরনোর পর। আর বর্ষাকালে মরশুমী ফল হিসেবে বাজার দখল করতে প্রতি বছরের মতন এবারও চলে এসেছে আনারস। এই আনারস দিয়ে ফ্রুট স্যালাড, চাটনি, জেলি, আচার, জুস ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া হয়ে থাকে। এই ফল মূলত চারা রোপণের ১৫-১৬ মাস পর মাঘ মাসের মাঝামাঝি থেকে চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে আনারস গাছে ফুল আসে। জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে আনারস পাকে।

আনারসের ইংরেজি নাম পাইন অ্যাপেল। জানা যায় পাইন গাছের এক শুষ্ক ফলের মত দেখতে হওয়ার কারণে এইরকম নামকরণ। দক্ষিণ আমেরিকা উচ্চস্থল হলেও ক্রান্তীয় বিভিন্ন অঞ্চল এবং পাহাড়ি অঞ্চলেও প্রচুর চাষ হচ্ছে ইদানিং।

আর‌ও পড়ুন: জংলি বাবার মন্দিরে শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালত হাতি!

আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরা। সেই কারণে একাধিক রোগ প্রতিরোধ বাড়ানো থেকে শুরু করে ওজন কমানো, ইত্যাদি বহু উপকারী ফল হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে আনারস। মূলত পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে আনারসের চাষ করা হয়ে থাকে। আনারসের গাছগুলি একসাথে গুল্ম আকারের হয়ে থাকে। একটি গাছের উপরে একটি মাত্র আনারস ফলে।ল আনারসের চাষ করতে অধিক পরিমাণে জমির সার, ওষুধ এবং কৃষি শ্রম লাগে। সেই কারণে অন্যান্য ফলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কিছুটা দাম বেশি হয়। ফল পাকলে পরে তার সড়ক পথ এবং রেলপথে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা ও অন্যান্য জেলায় রফতানি করা হয়। ব্যবসায়ীদের থেকে জানা যায়, গত বছরের মত এ বছরও একই দাম রয়েছে আনারসের। পাইকারি বড় সাইজের আনারসের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ছোট সাইজের ২০ থেকে ৩০ টাকা হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। যদিও ব্যবসায়ীরা জানান জ্বালানির খরচ বাড়ার ফলে সবজির দামের পাশাপাশি মরসুমী ফলের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণেই তুলনামূলকভাবে কিঞ্চিৎ বেশি দাম এই বছর আনারসের।

চিকিৎসকদের মতে আনারসে রয়েছে একাধিক উপকারী উপাদান। আনারসে ভিটামিন ছাড়াও একাধিক রোগ এছাড়াও বাড়ে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। তবে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে অধিক পরিমাণে আনারস খেতেও বারণ করছেন চিকিৎকেরা। তার কারণ অতিরিক্ত আনারস খেলে বিশেষ করে রাতে শোয়ার আগে আনারস খেলে হতে পারে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও। এমনটাই মত চিকিৎসকদের। জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন শিলিগুড়ি ও অন্যান্য কিছু জেলা থেকে আমদানি হচ্ছে আনারসের। এবং তারপর সেখান থেকে ব্যবসায়ীরা পাইকারি হারে কিনে ছড়িয়ে পড়ছেন বিভিন্ন জায়গায়।

যদিও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আগের তুলনায় বিক্রি কম আনারসের, এমনটাই জানালেন খুচরো ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, আগে ১০০ থেকে ১৫০ আনারস বিক্রি করতে এক ঘণ্টা সময় লাগলে এখন সেই পরিমাণে আনারস বিক্রি করতে গোটা দিন লেগে যাচ্ছে। দাম খানিকটা কমলে পরে আশা করা যাচ্ছে বিক্রিও কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পাবে।

মৈনাক দেবনাথ