জৈব উপায়ে শসা চাষ করে দ্বিগুন লাভ

Organic Farming: বিশেষ পদ্ধতিতে জৈব সার দিয়ে শসা চাষ করে অবিশ্বাস্য ফলন পান! এই গরমে হবে বিপুল আয়

দক্ষিণ দিনাজপুর: রাসায়নিক সার ত্যাগ করুন। সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে বিশেষ উপায়ে শসা চাষ করে পান অবিশ্বাস্য ফলন। সেইসঙ্গে কৃষক ভাইদের হবে দুর্দান্ত আয়।

জৈব সারে শসার চাষ করে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গাসাগর এলাকার বাসিন্দা কালিদাস চৌধুরী। নদীর চড়ে প্রায় দু’বিঘা জমিতে গত কয়েক বছর ধরে জৈব পদ্ধতিতে প্রচুর শসার চাষ করছেন তিনি। এবার শসা গাছের চেহারাও বেশ ভাল হয়েছে। সারা বছর শসার চাহিদাও থাকে বাজারে। বিশেষ করে এই গ্রীষ্মকালে শসার বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়।

আর‌ও পড়ুন: কলেজ স্ট্রিটের হাতছানি মেটাচ্ছে ছোট্ট গ্রামের এই কফি হাউস

জৈব পদ্ধতিতে শসা চাষ করে ভাল ফলন পাওয়া প্রসঙ্গে কৃষক কালিদাস চৌধুরী জানান, গ্রীষ্মকালীন শসা চাষে জৈব সার ব্যবহারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এইসময় শসা চাষে জল সেচের পরিমাণ কমাতে হবে। জৈব পদ্ধতিতে চাষ করলে শসার গুণগত মান ভাল হয়। চাষ করার জন্য জমিতে গোবর সার, কম্পোস্ট সার, ছাই ইত্যাদি জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। শসা চাষের জন্য পশ্চিমী হাওয়ার পাশাপাশি মৌমাছির প্রয়োজন। এতে সবজির গুণাগুণও নষ্ট হয় না।

যে জমিতে শসা চাষ করা হবে, সেখানে দোঁয়াশ মাটি হলে চাষ ভাল হবে। এক বিঘা জমিতে অন্তত ৫০ কেজি খোল আর দুই কুইন্টাল গোবর সার দিতে হবে। খোল ও গোবর সার মাটিতে ভাল করে মেশাতে হবে। তারপর মাটিতে গর্ত করে শসার চারাগাছ লাগাতে হয়। সাতদিন পর গোচনা ও ১৫ দিন পর কেঁচো সার বা কুইক সার মাটির গোড়ায় দিতে হবে। চারা বোনার ৩০ দিনের মাথায় আর্দশ তরল সার গাছের গোড়ায় দিতে হবে। প্রায় ৩০ দিন পর ওই গাছ থেকে ধীরে ধীরে মাটি থেকে লতানো বের হয়ে শসা বাড়তে শুরু করবে।

আর‌ও পড়ুন: গরমে যাত্রীদের স্বস্তি দিতে স্টেশনে বিশাল আয়োজন রেলের, হাওড়া-শিয়ালদায় গেলেই জুড়োবে প্রাণ

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, শসা চাষের জন্য উঁচু, সুনিষ্কাশিত ও ভাল নিকাশী ব্যবস্থা সম্পন্ন জমি নির্বাচন করতে হবে। জমির পিএইচ ৫.৫ থেকে ৬.৫-এর মধ্যে হওয়া জরুরি। বীজ বপণের জন্য জমিতে লাইন তৈরি করে নিতে হবে। সেচ ও জল নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায় এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। জমি প্রথমে ভালভাবে চাষ ও মই দিয়ে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন জমিতে কোন‌ও আগাছা না থাকে। লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৬০ থেকে ৭৫ সেমি এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব ২৫ থেকে ৩০ সেমি রাখতে হবে। বীজ বপণের পর মাটি হালকাভাবে চাপা দিয়ে দিতে হবে। শসার বীজ অঙ্কুরোদগমের জন্য ১৮ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। এইভাবেই জৈব উপায়ে শসা চাষ করে দ্বিগুন লাভ সম্ভব।

সুস্মিতা গোস্বামী