নদীর জলে ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি

River Erosion: নদীর গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট! কলকাতার কাছে বলাগড়ে ভয়াবহ অবস্থা

হুগলি: বলাগড়ে আজও ভাঙছে নদী পাড়। ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গার তীরবর্তী এলাকা। নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে বসেছে রাস্তাঘাট এমনকি মানুষের ঘর-বাড়িও। ভাঙন নিয়ে দুশ্চিন্তায় বলাগড় গ্রামবাসীরা। ভাঙনের কারণে রাতের ঘুম উড়েছে।

বলাগড় চাঁদরা কলোনি এলাকায় নদী পাড় ভাঙনের ফলে গ্রামের রাস্তা তলিয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে গুপ্তিপাড়া-১ পঞ্চায়েতের নদীর পার ভেঙে জলে তলিয়ে যায়। এই এলাকার বাসিন্দারা মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গেছে চাষের জমি, ঘরবাড়ি। বলাগড়ের ভাঙন সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যা কবে মিটবে, আদৌ মিটবে কিনা জানা নেই বলাগড়বাসীর।

আর‌ও পড়ুন: cগরম পড়তেই চওড়া হাসি বাঁকুড়ার সদানন্দের মুখে! দাবদাহ বাড়লে খুশি বাড়ে

ভোট এলেই দেখা মেলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের, মেলে প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু আদতে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না বাসিন্দাদের। গুপ্তিপাড়া-১ পঞ্চায়েতের ফেরিঘাট সংলগ্ন গঙ্গা পাড়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেইমত ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে রাজ্য সরকার গঙ্গা ভাঙন রোধে কাজ করছে। বোল্ডার ফেলে, বালির বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা হয়। স্থানীয়দের দাবি, যেভাবে গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে একদিন পুরো এলাকাটাই গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যাবে। অভিযোগ, রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার সম্পূর্ণভাবে উদাসীন। বড় প্রকল্প না হলে গঙ্গা ভাঙন রোধ করা যাবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা টিঙ্কু বৈদ্য জানান, বর্ষা এলেই শুরু হয় গঙ্গার ভাঙন। প্রায় বিঘার পর বিঘা জমি গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যায়। একসময় যে জায়গায় চাষ হত এখন সেই জমি গঙ্গা-বক্ষে তলিয়ে গিয়েছে। গুপ্তিপাড়া, চরকৃষ্ণবাটি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এই গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে। বাম আমল থেকেই মেলে প্রতিশ্রুতি, বর্তমান সরকারের আমলেও মিলেছে সেই প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। বিদায়ী বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেও কোন‌ও সমস্যার সমাধান হয়নি। ফেরিঘাট পার হয়ে যাতায়াত করতেও সমস্যা হয়। আবার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে ভোট। তাই যেই জিতুক তাঁর কাছে দাবি থাকবে গঙ্গা ভাঙন রোধ করার।

আর‌ও পড়ুন: বাবা-মাকে শ্রদ্ধা জানাতে যে কাণ্ড ঘটান পাঁচলার এই চিকিৎসক!

গুপ্তিপাড়া-১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই গঙ্গার ভাঙন চলছে। তারমধ্যে ফেরি ঘাটের ডানদিকে প্রায় ১৫০ মিটার ও বাঁদিকে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে রোধ করা সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ভাঙন রোধে কাজ করা প্রয়োজন। হুগলি লোকসভায় যারা প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের কাছে করজোরে আবেদন, বলাগরবাসীর পাশে দাঁড়ান।

রাহী হালদার