গোলাপ ফুল ভালবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জলবায়ুতে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারে গোলাপ। আপনার বাড়ির আশেপাশে যদি জায়গা থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আর যদি না থাকে তাহলে ছাদের উপরে টবে কিংবা ব্যালকনিতে টবের মধ্যে চাষ করতে পারেন গোলাপ। (প্রতিবেদন :অনির্বাণ রায়)
শিলিগুড়ি বরদাকান্ত বিদ্যাপীঠ শিক্ষক পুলক জোয়ারদার দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে গোলাপ ফুলের বাগান করে আসছেন নিজের বাড়ির ছাদেই। তিনি বলেন, “সব ফুলের মধ্যে গোলাপ ফুলকেই ফুলের রাজা হিসেবে ধরা হয়। এই ফুল দেখলে মন ভরে যায় মানুষের। সেই ভালোবাসা থেকেই গোলাপ ফুল চাষ করা শুরু করেছিলাম।”
তাঁর কথায়, গোলাপ ফুল চাষ করতে একটু ধৈর্যের দরকার। সঠিক পরিচর্যা করলে বাড়িতে একটি গাছেই প্রায় ১০০ গোলাপ ফুটবে।
উত্তরবঙ্গ থেকে জাতীয় স্তরে পুষ্প প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলেন পুলকবাবু। তবে তিনি মাটির মধ্যে এত গোলাপ ফুল ফুটিয়ে সত্যি অবাক করেছেন সকলকে। তাঁর টবের গাছে প্রায় ১৭০ টি গোলাপ ফুটেছে।
তিনি বলেন, মূলত অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত গোলাপের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। আট ইঞ্চি টব নিতে হবে। ছয় থেকে আট ঘণ্টা রোদ পায় এমন স্থানে রাখতে হবে। তবে গ্রীষ্মকালের প্রখর রোদ থেকে গাছ বাঁচানোর জন্য মাঝেমাঝে ছায়ায় রাখুন।
টবের মাটি তৈরি করার জন্য দোআঁশ মাটি, গোবর সার, পাতা পচা সার, বালি, সরষের খোল, সামান্য ডিমের খোসা গুঁড়ো মিশিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ রেখে দিন। মাঝে মাঝে ব্যবহৃত চা পাতা শুকনো করে মাটিতে মিশিয়ে রাখতে হবে।
চারা বসানোর আগে মরা ডালপালা ছেঁটে দিন। দু-তিনদিন অন্তর অন্তর জল দিতে হবে। জল দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন কখনওই জল জমে না থাকে। মাঝে মাঝে গাছ কেটে দেওয়ার পরে গাছ থেকে কিছুটা দূরে চারিদিকে গোবর সার দিয়ে দিতে হবে।
পুলকবাবুর বলেন, “গোলাপগাছের রোগবালাই প্রায়ই হয়ে থাকে। বিশেষ করে পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়। জলের মধ্যে রসুন থেঁতো করে এবং গুঁড়ো লঙ্কা দিয়ে আগের দিন রাতে ভিজিয়ে পরেরদিন গাছে স্প্রে করুন।’’
‘‘খেয়াল রাখবেন যেখানে গোলাপের চারা লাগাচ্ছেন সেই জায়গাটি যেন পরিষ্কার থাকে। এই ভাবে যত্ন করতে পারলে আপনি একটি গাছ থেকে গড়ে ৪০-৫০ টি ফুল পেতে পারেন।” বলছেন গোলাপ চাষ বিশেষজ্ঞ পুলক জোয়ারদার।
Post navigation
Just another WordPress site