Tag Archives: Blind People

Raksha Bandhan 2024: দৃষ্টিহীনদের রাখিতেও আরজি কর!

হুগলি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ ঠেকাতে রাখি বন্ধন উৎসব চালু করেছিলেন। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা যেমন আছে তেমনই আছে নারীদের প্রতি সম্মান। কিন্তু সম্প্রতি আরজি কর মেডিকেল কলেজের নারকীয় ঘটনা নারী নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজকে। কর্মক্ষেত্রে নারীর সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয় এই ঘটনা। নারী অধীকার নিয়ে আন্দোলন, আলোচনা চলে ঠিকই, তবুও এই সমাজে নারীদের দমন করতে চাওয়ার মত কিছু ঘৃণ্য মানুষ আজও থেকে গিয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবার রাখি বন্ধনে সামিল হলেন দৃষ্টিহীনরা। চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে সংহতির রাখি বাঁধলেন পথ চলতি মানুষের হাতে।

আর‌ও পড়ুন: ফুলের সিংহাসনে রাধা-কৃষ্ণ, ঝুলনে শান্তিপুরে উপচে পড়ল ভিড়

ঘড়ির মোড়ে বসে চাবি তৈরি করেন রবি পাল। দৃষ্টিহীন মানুষদের নিয়ে কাজ করেন। গত কয়েক বছর ধরে রাখি বন্ধন উৎসব করেন তাঁদের নিয়ে। তবে এবারের রাখি একটু আলাদা। রবি বলেন, আমার মা-বোনেরা যাতে সুরক্ষিত থাকে সেই কথাই বলছি। আরজি করে যে বোনের অকাল মৃত্যু হয়েছে সে আর ফিরবে না। তবে আাগামীতে রাজ্য তথা দেশে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্যই এমন পদক্ষেপ। পাশাপাশি দৃষ্টিহীনদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথা বলেন তিনি।

এমন মানুষদের নিয়ে কাজে রবিকে সাহায্য করেন পুলিশকর্মী সুকুমার উপাধ্যায়। তিনি বলেন, দৃষ্টিহীনদের সমস্যা অনেক। তারা অনেক সময় বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন না। আজ রাখি বন্ধনের দিনে তাঁদের নিয়ে কিছুটা সময় কাটালাম। একে অপরকে রাখি বেঁধে দিয়ে ভাই-বোনের সম্পর্ক আরও অটুট করতে চাইলাম।

রাহী হালদার

North 24 Parganas News: এই চশমাই বাঁচাবে অন্ধ ব্যক্তিদের , স্মার্ট চশমা তৈরি নবমশ্রেণীর ছাত্রদের

উত্তর ২৪ পরগণা: অন্ধ ব্যক্তিরাও চশমা পরবে, স্মার্ট চশমা তৈরি ৩ ছাত্রের। এবার অন্ধ মানুষদের পথ নির্দেশনা দেবে চশমা। বসিরহাটের তিন ছাত্রের স্মার্ট চশমা তৈরি। অন্ধ মানুষরাও এবার পরবে চশমা। শুনে অবাক হলেন! আসলেই তাই, অবাক হওয়ার মতই কথা। অন্ধ মানুষদের কথা ভেবে এবার বসিরহাটের তিন ছাত্র তৈরি করল স্মার্ট চশমা। এই চশমার সামনে কিছু এলেই সতর্কতামূলক শব্দ বেজে উঠবে।

আরও পড়ুনঃ হাতের জাদুতেই জিতেছিলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার, এখন কেমন আছেন সারতা গ্রামের পুষ্পরাণী?

উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাট মহাকুমার বসিরহাটের বেলের ধান্যকুড়িয়া হাইস্কুলের তিন ছাত্র বিজ্ঞান প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই স্মার্ট চশমা তৈরি করেছে। অন্ধ ব্যক্তিরা এই চশমা পরলে সামনে কোন কিছু আসলেই সতর্কতা বার্তা বেজে উঠবে। উদ্ভাবন করেছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পথচলায় সহায়ক এই চশমা।

স্মার্ট চশমা তৈরি করেছে বেলের ধান্যকুড়িয়া হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর তিন ছাত্র এই স্মার্ট চশমা তৈরি করেছে। সেন্সর, মাইক্রো স্পিকার এবং ব্যাটারির মতো বিভিন্ন উপাদান দিয়ে সজ্জিত এই চশমাকে স্মার্ট চশমা হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। মূলত চশমা ভিতরে একটি করে সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে এই চশমা ও লাঠির সামনে কিছু আসলেই নিজে থেকেই সেন্সর থেকে বার্তা গ্রহণ করে সতর্কতা মূলক শব্দ বেজে উঠবে। স্কুলের ল্যাবে পড়ানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে এই চশমা তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় ছাত্ররা। স্কুলের তিন ছাত্রের অভিনব চশমা তৈরিতে রীতিমতো সাড়া ফেলে ছাত্রছাত্রীদের থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে।

জুলফিকার মোল্যা

ওদের দৃষ্টি নেই, কিন্তু সৃষ্টির মায়াজাল আছে! কলকাতার বুকে এক অনন্য ‘প্রতিযোগিতা’

কলকাতা: ‘হাসির মধ্যে লুকিয়ে ক্ষত, তবুও বাঁচি ইচ্ছে মতো/ যন্ত্রণাটা ভীষণ গোপন, মনের ঘরে খুবই আপন..’–হ্যাঁ, ওদের হাসির মধ্যেও লুকিয়ে থাকে যন্ত্রণার ক্ষত, ওরা গোপন করে রাখে, কিন্তু ইচ্ছেকে কি গোপন করা যায়? তাই তো ওদের জন্যই এত আয়োজন! বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন দৃষ্টিহীন মানুষদের প্রতিভার খোঁজে সারা বাংলা সঙ্গীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় তাই প্রতিযোগিতা কম, বরং জীবনের জয়গান হল বেশি করে, অন্ধকারে আলোর খোঁজ পেল ওরা কতজন…

উত্তর কলকাতার দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী সংগঠন ‘শ্যামপুকুর আস্থা ও নতুন স্বপ্ন’ গত ৩০ জুন শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে আয়োজন করেছিল এমনই এক প্রতিযোগিতার, যেখানে প্রতিযোগীদের চোখের দৃষ্টি অবরুদ্ধ হলেও মনের সৃষ্টি বাঁধনছাড়া। ৩০ জুন, দিনভর ওরা গাইল, কবিতা পাঠ করল, সুরের মায়াজালে জড়িয়ে রাখল উপস্থিত সকলকে। অনুষ্ঠানে সভাপতির আসনে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের শেরিফ (২০১৩) স্বপন কুমার ঘোষ, আর ছিলেন অসংখ্য মুগ্ধ শ্রোতারা।

পুরস্কারের পালা...
পুরস্কারের পালা…

ওই অনুষ্ঠানে পুরুষ প্রতিযোগী ছিলেন ৬০ জন, মহিলা প্রতিযোগী ৪০ জন। হয়ত আক্ষরিক অর্থে তাঁরা প্রতিযোগী, কিন্তু প্রত্যেকেই যে একেকজন যোদ্ধা। জীবনের কঠিন পথে হাঁটতে গিয়ে তাঁদের হয়ত হোঁচট লাগে বেশি, কিন্তু ইচ্ছের মায়াজাল তাঁরা বুনে দিতে পারেন আমাদের মতো করেই। হয়ত বা আমরা যে সীমানার পর আর দেখে উঠতে পারি না, তাঁদের দৃষ্টি, সৃষ্টি ছাড়িয়ে যায় সেই সীমাবদ্ধতাকেও। তাই এ প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার কোনও নিছক একজন বা দু’জন নন, বরং প্রত্যেক প্রতিযোগীই বুঝিয়ে গেলেন, ‘আমরা সবাই রাজা…’