Tag Archives: Economy

Indian Railways: অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ভারতীয় রেলের বড় উদ্যোগ, বিশেষ কাজ শুরু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে

নয়াদিল্লি: স্থানীয় অর্থনীতির আরও উন্নতির জন্য উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সময়ে সময়ে ব্যবসায়ী ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক ও বার্তালাপের আয়োজন করা হয়ে থাকে। পণ্য পরিবহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে তার সবগুলি ডিভিশনের পাশাপাশি জোনাল হেড কোয়ার্টার স্তরে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইউনিট (বিডিইউ)স্থাপন করা হয়েছে।

ট্রেনের দ্বারা পরিবহণের জন্য নতুন ট্র্যাফিক খুঁজতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির ট্রেড ও ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে এই বিডিইউগুলি প্রায়ই কথা বলে। সড়ক পথের তুলনায় রেল পথ হল দ্রুত ও সাশ্রয়ী পরিবহণ ব্যবস্থা, এর ফলে দেশজুড়ে বৃহৎ বৃহৎ বাজার তৈরি করে স্থানীয় অর্থনীতির বৃদ্ধি তথা উন্নয়ন সম্ভব। এই বিষয়ে একাধিক ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার বরিষ্ঠ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে  ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন: দেশের সেরা MBA কলেজ কোনটি? কলকাতার কোন কলেজ তালিকায়? ভর্তির আগে IIRF-এর তালিকা দেখুন

এই বৈঠকে ট্রাকের অভাব, শ্রমিকের উপলব্ধতা, পণ্য ভর্তি রেকের স্থাপন, এবং গুডস ইয়ার্ডের অবস্থার পাশাপাশি পণ্য ওয়াগনের ছাড়পত্রে বিলম্বের জন্য ডিমারেজ চার্জ ও ওয়্যারফেজ চার্জ ধার্য করা সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ৩৩ জন ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই বৈঠকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের আধিকারিকরা ব্যবসায়ীদের রেলওয়ের মাধ্যমে সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে পরিবহণের ব্যবস্থা করে স্থানীয় অর্থনীতির উন্নতির জন্য উপলব্ধ বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবগত করেন।

আরও পড়ুন: ড্রাই ফ্রুটস জলের বদলে দুধে ভেজালে কী হয় জানেন? এই স্ন্যাকস কি বেশি পুষ্টিকর? জরুরি কথা জানুন

পাশাপাশি রেলওয়ে হল পরিবহণের সবচেয়ে পরিবেশ অনুকূল একটি পদ্ধতি। এই বৈঠকে পণ্য্যবাহী সামগ্রীর ট্র্যাফিক পরিচালনা, অটোমোবাইল ট্রাফিক এবং অন্যান্য সামগ্রী পরিবহণের সুবিধা ও তার লাভ সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করা হয়।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইউনিট (বিডিইউ)-এর পদক্ষেপের জন্য সম্প্রতি অ্সমের ধেমাজি থেকে ২০ ওয়াগন বাঁশ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের তিনসুকিয়া ডিভিশনের দ্বারা প্রথমবারের জন্য মধ্য প্রদেশের আমলাইয়ে পরিবহণ করা হয়েছিল। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে সহজ ব্যবসা পদ্ধতি গড়ে তুলতে এবং বিভিন্ন গ্রাহক ও অংশীদারকে  উন্নত সুবিধা প্রদান করতে সমস্ত ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

আবীর ঘোষাল

North East frontier Railway: সীমান্ত রেলের কল্যাণে অর্থনৈতিক সূচকের বদল ঘটছে পণ্য পরিবহণে! গত বছরের তুলনায় কত বাড়ল?

কলকাতা: লোডিঙ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেল উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েতে। চলতি বছর জুন মাসে ০.৮৩৩ মিলিয়ন টন পণ্যসামগ্রী লোড করা হয়েছে। অন্যান্য সামগ্রী সহ ভাল মানের কন্টেনার, পি.ও.এল, সার, সিমেন্ট, খাদ্যশস্য লোডিংইয়ের অগ্রগতি নথিভুক্ত করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় যা অনেকটাই বেশি। সিমেন্টের লোডিং ২০২৩ সালের জুন মাসে ০.০০১ মিলিয়ন টন ছিল। সেটিই ২০২৪ সালের জুন মাসে বেড়ে হয়েছে ০.০৩২ মিলিয়ন টন। সার লোডিঙ গত বছর ছিল ০.০১১ মিলিয়ন টন, সেটিই এ বছর জুন মাসে বেড়ে হয়েছে ০.০২২ মিলিয়ন টন। খাদ্যশস্য লোডিঙে ২০২৩-এর জুন মাসে ০.১২৬ মিলিয়ন টন থেকে ২০২৪ সালের জুন মাসে বেড়ে ০.২৫৪ মিলিয়ন টন হয়েছে।

সব মিলিয়ে, উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েতে জুন ২০২৩ সালের তুলনায় জুন ২০২৪ সালে মোট ২০.১% মার্জিনসহ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি নথিভুক্ত করেছে। শুধু লোডিংইয়ে নয়, পণ্য আনলোডিংইয়েও উন্নতি অব্যাহত রেখেছে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে। এপ্রিল মাসে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের দ্বারা ১১৩০টি পণ্যবাহী রেক আনলোড করা হয়েছে। তাতে এফসিআই চাল, চিনি, লবণ, খাদ্য উপযোগী তেল, সার, সিমেন্ট, কয়লা, সবজি, অটো, ট্যাঙ্ক মতো পণ্যসামগ্রী ও অন্যান্য সামগ্রী একই মাসে পরিবহণ করেছে এবং নিজস্ব অধিক্ষেত্রের অধীনে বিভিন্ন গুডস শেডে সেগুলি আনলোড করেছে। এপ্রিল, ২০২৪ সালে অসমে পণ্যবাহী ট্রেনের ৫৪০টি রেক আনলোড করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৩৫টি রেকে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী লোড ছিল।

আরও পড়ুন- ভোররাতে আইসক্রিমের গোডাউনে আগুন! দাউদাউ জ্বলছে যশোর রোড, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম দমকল

এপ্রিলে ত্রিপুরায় ২৫টি রেক, নাগাল্যান্ডে ১৮টি রেক, অরুণাচল প্রদেশে ৯টি রেক, মণিপুরে ৩টি রেক এবং মিজোরামে ৫টি রেক আনলোড করা হয়। এছাড়াও, একই মাসে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধিক্ষেত্রের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৭৬টি পণ্য রেক ও বিহারে ৬৯টি পণ্য রেক আনলোড করা হয়। কেবল সাধারণ মানুষের অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্যই নয়, সেই অঞ্চলের স্থানীয় অর্থনৈতিক কার্যকলাপ গতিশীল ও বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং অন্যান্য পণ্যগুলি নিয়মিত পরিবহন করা হচ্ছে। মাল লোডিংয়ের অগ্রগতি থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পণ্য রাজস্ব উৎপন্ন হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে পণ্যলোডিং বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি থেকে সমগ্র এলাকার অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের পরিসংখ্যানও পাওয়া যায়। যা বেশ আশানুরূপ বলেই মনে করছেন রেলের কর্মকর্তারা।

Bangla Video: এই প্রকল্প দিনের আলো দেখলে পাল্টে যেত বাঁকুড়া

বাঁকুড়া: রুক্ষ নদী গন্ধেশ্বরী। এক ফোঁটা জল নেই নদীতে। একটি নদী পাড়ের যে সুযোগ সুবিধা বাঁকুড়া শহরের মানুষের পাওয়ার কথা তার একটাও পাচ্ছেন না তাঁরা। প্রতিবছর একটু একটু করে বাড়ছে গরম! একপ্রকার শুকিয়ে যাচ্ছে ছোট্ট নদী গন্ধেশ্বরী। গন্ধেশ্বরী নদীকে বাঁচানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল ‘গন্ধেশ্বরী বাঁচাও কমিটি’।

বাঁকুড়া শহর এবং গন্ধেশ্বরী ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্থানীয় কিছু দূরদর্শী মানুষ তৎকালীন সেচ মন্ত্রী গণেশ মণ্ডলকে লিখিতভাবে জানান। ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষে বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী বিষয়টি বিধানসভায় তোলা হয়। এরপর ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে দুটি বাজেট করে রাজধানীতে পাঠানো হয়।

আর‌ও পড়ুন: ভোটের আগে কী চাইছে ময়ূরেশ্বরের মানুষ?

দিল্লি থেকে অনুসন্ধান করে রিপোর্ট তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয় আইটি খড়গপুরকে। আইআইটি খড়গপুরের বিশেষজ্ঞরা কীভাবে গন্ধেশ্বরী নদীকে ব্যবহার করে বাঁকুড়ার সেচের জলের অভাব এবং পানীয় জলের অভাব দূরীকরণ করা যায় তার একটি প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করেন। সেই নকশা আবার সংশোধিত হয়ে ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে বিধানসভায় পাস হয়। এই প্রজেক্টটির জন্য বরাদ্দ করা হয় টাকা। প্রজেক্টটির মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল দ্বারকেশ্বর নদ এবং গন্ধেশ্বরী নদী। তবে গন্ধেশ্বরী নদীতে আলোকপাত করলে জানা যাবে, মাত্র ৩২ কিলোমিটার লম্বা গন্ধেশ্বরী। শালতোড়া যেতে কলুর বাঁধ থেকে উৎপত্তি হয়ে এই নদী এসে দ্বারকেশ্বর নদে মিলেছে বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন বাঁকি গ্রামের দুমওনি ঘাটে। তৎকালীন সময়ে গ্রামাঞ্চলে নদীর চিত্র অন্যরকম হলেও শহরাঞ্চলে প্রবেশ করতেই যেন নদীর গলা টিপে ধরা হয়েছিল। একটু একটু করে সচেতনতার অভাবে নদী বুজতে শুরু করেছিল। সেই কারণেই ২০০৮ সালে শুরু হয় গন্ধেশ্বরী নদীকে বাঁচিয়ে তোলার বিরাট পরিকল্পনা।

ছাতনার ঝুঁঝকা গ্রামের কাছে গন্ধেশ্বরী নদীর ওপর তৈরি করার কথা ছিল একটি ড্যাম। সেই ড্যাম থেকে বেরিয়ে যাবে দুটি ক্যানাল। কথা ছিল, একটি ক্যানেল চলে যাবে বাঁকুড়ার প্রাচীনতম এবং ঐতিহ্যবাহী কেঞ্জাকুড়া জনপদের দিকে। ওপর ক্যানেল বয়ে যাবে দক্ষিণ দিকে। এরপর নদীর যে অংশটি বয়ে বাঁকুড়া শহরের দিকে ডুকছে, সেই সেই অংশটি এসে মিশছে দ্বারকেশ্বর নদের সঙ্গে দোমওনি ঘাটে। এই দ্বারকেশ্বর নদ এবং গন্ধেশ্বরী নদীর সংযোগস্থলে আরও একটি ড্যাম হওয়ার কথা ছিল। কথা ছিল দুর্গাপুর ব্যারেজের মত অনুকরণ করে তৈরি করা হবে বাঁকুড়াতে ব্যারেজ। আটকে রাখা হবে জলকে, সেই জলই পরবর্তীকালে ব্যবহার করার কথা ছিল পানীয় জল হিসেবে এবং সেচের কাজে।

আর‌ও পড়ুন: অফ সিজনে ব্যস্ততা তুঙ্গে! মৎস্যজীবীদের হঠাৎ হলটা কী?

পুরো পরিকল্পনাটি স্বপ্নের মত মনে হলেও একসময় সত্যি হবে বলে ভাবা হত। ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে যখন বাঁকুড়ার গরম অসহ্য, তার সঙ্গে ভৌম জলস্তর ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে, তখন মনে হতেই পারে এই বাঁধ যেন আবারও জাগিয়ে তুলত গোটা শহরটাকে। উন্নতি হতে পারত আর্থসামাজিক দিক দিয়ে। পরিবর্তন হত আবহাওয়ার। মিটত জলে সমস্যা। মেদিনীপুর শহরেও কংসাবতী নদীর উপর তৈরি হয়েছে অ্যানিকেট ড্যাম। পাল্টে গেছে শহরের চিত্র। সবুজ হয়েছে ধরিত্রী। বাঁকুড়ায় এই প্রকল্প রূপায়িত না হওয়ার হতাশা এখনও অনুভব করছেন সাধারণ মানুষ।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী