Tag Archives: Indian Super League

ইস্টবেঙ্গলের সামনে আজ ওড়িশা, প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় লাল হলুদ

#ভুবনেশ্বর: শেষবার যখন যুবভারতীতে ওড়িশার মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল দু গোলে এগিয়ে থেকেও চার গোল হজম করে হেরেছিল ম্যাচটা। কিভাবে এমনটা হতে পারে ভেবে কূলকিনারা পাননি অনেকেই। চলতি আইএসএলে টানা দু’টি ম্যাচে জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। গত ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি’কে হারিয়ে ঘরের মাঠে প্রথম জয় পাওয়ার পর লাল-হলুদ শিবিরে তৈরি হয়েছে আত্মবিশ্বাসের ফানুস।

শনিবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গলের সামনে ওড়িশা এফসি। কলকাতায় জোসেফ গোমবাউয়ের প্রশিক্ষণাধীন দলের কাছে লাল-হলুদ ব্রিগেডকে হারতে হয়েছে ২-৪ ব্যবধানে। সেই পরাজয়ের ক্ষত স্পষ্ট লাল-হলুদ শিবিরে। তাদের দলে এখন একটাই স্লোগান, ‘প্রথম ছয়ে শেষ করা।’

কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন কথায় কথায় গত মরশুমের উদাহরণ টেনে নিজেকে সফল প্রমাণিত করার চেষ্টায় রয়েছেন। এই দলের অধিকাংশ ফুটবলার বেছেছেন স্বয়ং কোচ। তাই পারফরম্যান্স খারাপ হলে দায় তিনি কর্তাদের দিকে ঠেলতে পারবেন না। পরিসংখ্যান বলছে, শেষ তিনটি ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে হার। একটিতে জয়। লাল-হলুদ জনতা তাই এই দল নিয়ে স্বপ্ন দেখাই ভুলে গিয়েছেন।

বলতে দ্বিধা নেই, কোচের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবকে।ওড়িশা ১২ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে টেবিলে রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। ইস্টবেঙ্গলের ১১ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট। ১৩ গোল দিয়ে হজম করেছে ২০ গোল। ফিটনেস সমস্যায় ভুগছে গোটা দল। অনেকেরই অল্পবিস্তর চোট-আঘাত রয়েছে। ব্রাজিলীয় ফরওয়ার্ড ক্লেটন সিলভা এই দলটার সম্পদ।

অন্য ব্রাজিলীয় এলেক্স লিমা আগের মত ছন্দে নেই। নতুন বিদেশি জার্ভিস এসে গেলেও এই ম্যাচে তার খেলার সম্ভাবনা নেই। কিরিয়াকু পারবেন কিনা কেউ জানে না। নিজেদের ঘরের মাঠে ওড়িশা অবশ্য পুরো পয়েন্ট পেতে অল আউট খেলবে।

ফিরতি ডার্বিতে প্রথমবার মোহনবাগানকে হারানোর প্রতিজ্ঞা ইস্টবেঙ্গলের সিলভার

#কলকাতা: ইস্টবেঙ্গল দলটার প্রধান চালিকাশক্তি তিনি। একমাত্র বিদেশি যিনি প্রতিপক্ষ শিবিরকে চিন্তায় রাখতে পারেন। ফুটবল সম্রাট পেলের শহর মিনাস গেরাইসেই জন্ম ক্লেটন সিলভার। তাই কিংবদন্তির প্রয়াণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার। ঘুরেফিরে বারবার তাঁর কথাবার্তায় উঠে এসেছে পেলের স্মৃতিচারণ।

পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ক্লেটন বলছিলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন সকালে দুঃসংবাদ পাই। পেলে শুধু ব্রাজিলের নয়, গোটা বিশ্বের। তাঁর দেখানো পথ ধরেই নিজেকে উন্নত করতে চাই। আইএসএলের লিগ টেবিলে আট নম্বরে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল।

আরও পড়ুন – আইপিএলের অর্ধেক নয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ! মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে বিদেশি ক্রিকেটাররা

আর ক্লেটনের গোলের সংখ্যা আপাতত ৭। গোলদাতার তালিকায় যুগ্মভাবে শীর্ষে রয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর লক্ষ্য, প্রথম ছয়ে লিগ শেষ করা। তাঁর সংযোজন, সর্বাধিক গোলদাতার থেকেও সুপার সিক্সে শেষ করতে পারলে খুশি হব। আগামী দু’টি ম্যাচ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

বেঙ্গালুরু এফসি থেকে আসা এই ব্রাজিলিয়ানের চোখ ২৫ ফেব্রুয়ারি আইএসএলের দ্বিতীয় ডার্বির দিকে। বললেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এখনও পর্যন্ত এটিকে মোহন বাগানকে হারাতে পারিনি। তাই ওদের হারিয়ে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার পথে হাঁটতে হবে। আশা করি, এবার ডার্বিতে তিন পয়েন্ট পাব।

ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাই ক্লেটনের প্রেরণা। গত ম্যাচে ক্লেটনের দু’গোলে বেঙ্গালুরু এফসি’কে হারিয়ে অক্সিজেন পেয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। এর মধ্যে ফ্রি-কিকে তাঁর দ্বিতীয় গোলটি সেরা গোলের আর্কাইভে স্থান পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে ৩৫ বছর বয়সি এই স্ট্রাইকার বলেন, প্র্যাকটিসেই বারবার এমন ফ্রি-কিক মেরে নিজেকে ধারালো করেছি। লেফট উইঙ্গার নাওরেম মহেশ সিংয়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো বোঝাপড়া। ও তুখোড় ড্রিবলার।

হতাশা বড় ম্যাচ জিতে কাটাতে চান তাঁরা। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হওয়া লাল-হলুদ রক্ষণের স্তম্ভ মিজোরামের লালচুননঙ্গা বলছেন, ওদের পেত্রাতোস, লিস্টন ও আশিক কুরুনিয়ন বিপজ্জনক ফুটবলার। তবে ইভান গঞ্জালেজের সঙ্গে আমার বোঝাপড়া ওদের থামানোর পক্ষে যথেষ্ট।

ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন অবশ্য মনে করেন ছেলেদের মাঠে আরও ধারাবাহিক থাকতে হবে। হাতে রয়েছে দুদিন সময়। তারপর খেলতে হবে ওড়িশার বিরুদ্ধে। শনিবারের ওই ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে লাল হলুদ।

মোহনবাগানের চাপ নিতে তৈরি উরুগুয়ের ফেডেরিকো, দলের শক্তি বাড়াবেন পুইতিয়া

#কলকাতা: মোহনবাগান সমর্থকদের চাহিদা ছিল এই দলে সব আছে। অভাব একজন পজিটিভ স্ট্রাইকারের। রয় কৃষ্ণ অথবা ডেভিড উইলিয়ামসের মতো একজনকে দরকার যিনি ফিনিশিং করতে পারবেন। কিন্তু স্প্যানিশ কোচ সেরকম ভাবেননি। জনি কাউকোর পরিবর্ত হিসেবে ফেডেরিকো গালেজোকে সই করাল এটিকে মোহনবাগান। উরুগুয়ান আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারের সঙ্গে ছ’মাসের চুক্তি সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের।

এর আগে নর্থইস্ট ইউনাইটেডে খেলেছেন তিনি। কেন গালেজো? এটিকে মোহন বাগানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই উরুগুয়ান বল ফিড করতে পারেন। একইসঙ্গে গোলগেটারও। গত মরশুমে হাঁটুর চোটের জন্য তিনি মাঝপথেই ছিটকে যান। নর্থইস্টের হয়ে ৪৭টি ম্যাচে তাঁর নামের পাশে ৯টি গোল। একইদিনে মিজোরামের প্রতিশ্রুতিবান মিডফিল্ডার লালথাতুঙ্গা খাওরিংয়ের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি হয়েছে মোহন বাগানের।

ভারতীয় ফুটবলে তাঁর পরিচিত নাম ‘পুইতিয়া’। এদিকে, শক্তিশালী যুব দল তৈরি করার লক্ষ্যে ছয় প্রতিভাবান ফুটবলারকে সই করিয়েছে এটিকে মোহন বাগান ম্যানেজমেন্ট। সবাই অনূর্ধ্ব ২০ এএফসি কাপে খেলেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন সৈয়দ জাহিদ (গোলরক্ষক), প্রীতম মিতাই (রাইট ব্যাক), আমনদীপ সিং (লেফট ব্যাক), শিবাজিৎ সিং (মিডফিল্ডার), টাইসন সিং (উইঙ্গার) ও সুহাল ভাট (ফরোয়ার্ড)।

সিনিয়র দলের কোচ হুয়ান ফেরান্দো জানিয়েছেন, প্রয়োজনে এদের মধ্যে থেকে দু-একজনকে সিনিয়র দলে সই করানো হবে। আইএসএলে এটিকে মোহন বাগান ১৪ জানুয়ারি ঘরের মাঠে খেলবে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে। ফেরান্দো ফুটবলারদের ছুটি দিয়েছেন। ৫ জানুয়ারি নিজেদের মাঠে অনুশীলন শুরু করবেন হামিল-প্রীতমরা। দ্বিতীয় লেগ থেকে সম্পূর্ণ ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে এটিকে মোহনবাগান। শুধু প্রথম তিনে থাকা নয়, শীর্ষে থাকা এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়া তাদের আসল লক্ষ্য।

দিমিত্রি, হুগো জুটিতে কঠিন ম্যাচে গোয়াকে হারিয়ে জয়ের সরণিতে ফিরল মোহনবাগান

এটিকে মোহনবাগান – ২
( দিমিত্রি, হুগো)

এফ সি গোয়া – ১
( আনোয়ার)

কলকাতা: বুধবার যুবভারতী স্টেডিয়ামে গোয়ার বিরুদ্ধে একদিক থেকে দেখতে গেলে প্রতিশোধ ম্যাচ ছিল এটিকে মোহনবাগানের। প্রথম সাক্ষাতে ০-৩ হারের যন্ত্রণা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সবুজ মেরুনকে। ৯ মিনিটের মাথায় গোল করে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। দিমিত্রি বক্সের ডান দিক থেকে একটা দুর্দান্ত শটে লক্ষ্যভেদ করেন। কিন্তু ২৬ মিনিটে এদুর ফ্রিকিক থেকে সমতা ফিরিয়ে আনেন আনোয়ার আলি।

শেষ দু’ম্যাচে জয় অধরা। একইসঙ্গে চোট-আঘাতের নাগপাশে এটিকে মোহনবাগান। বুধবার আইএসএলের ম্যাচে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ ছিল এফসি গোয়া। স্কোয়াড গঠন করতেই সমস্যায় ছিলেন সবুজ-মেরুন কোচ হুয়ান ফেরান্দো। সর্বসাকুল্যে তাঁর হাতে ছিল ১৬-১৭ জন ফিট ফুটবলার।

চোটের কবলে একাধিক প্লেয়ার মরশুমেরই বাইরে। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে রিজার্ভ বেঞ্চ ভরবে কাদের নিয়ে, ফেরান্দোর কপালে চিন্তার ভাঁজ। তবুও দুই স্প্যানিশ কোচের লড়াইয়ে কার্লোস পেনার দলকে হারাতে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সবুজ-মেরুন কোচ। জনি কাউকোর মতো স্কিমার-স্ন্যাচার এবং গোলগেটারের অভাব। ফিনল্যান্ডের ফুটবলার চোট পেয়ে দেশে ফিরে নিশ্চয়ই দেখছেন, মাঠে নামলে সতীর্থদের হাঁটু কীভাবে কাঁপছে।

দ্বিতীয়ার্ধ জিততে গেলে আক্রমনাত্মক হতেই হত মোহনবাগানকে। ৫৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোল তুলে নিল এটিকে মোহনবাগান। আশিকের বল ধরে দিমিত্রি বাড়ালেন হুগো বুমুকে। ফরাসি তারকা গোল করতে ভুল করেনি। কিন্তু আবার সুযোগ পেয়েছিল গোয়া। এডুর ফ্রিকিক থেকে আনোয়ারের শট ক্রসপিসে প্রতিহত হয়।

তবে এরপরেও দিমিত্রি পাস থেকে আশিক অবিশ্বাস্য মিস না করলে মোহনবাগানের পক্ষে জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারত। গোয়া অবশ্য শেষ পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে গেল। কিন্তু হামিল, প্রীতম, শুভাশিস, ম্যাক হিউরা আর ভুল করেননি। ফলে তীব্র প্রতিদ্বন্দিতামূলক ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জিতেই মাঠ ছাড়ে সবুজ মেরুন। ১২ ম্যাচ ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়ে গেল সবুজ মেরুন। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন দিমিত্রি।

এগারো দলের মধ্যে ৯ নম্বরে ইস্টবেঙ্গল! মিজো ডিফেন্ডারের চুক্তি বাড়িয়ে শুধু প্রচার

#কলকাতা: নতুন ইনভেস্টার সংস্থা কথা দিয়েছিল সেরা দল তৈরি হবে। তারা যে একেবারে চেষ্টা করেনি তা নয়। কিন্তু রেজাল্ট কোথায়? বছর ঘুরে যায়, কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ছবিটা বদল হয় না। কর্মকর্তারাও মুখেই দুনিয়া জেতার স্বপ্ন দেখিয়ে চলেছেন সেই কবে থেকে। গাল ভরা একাধিক কমিটি। কিন্তু খেলার শেষে হতাশাই প্রাপ্তি সমর্থকদের।

রবিবার ছিল ইস্টবেঙ্গলের উদীয়মান ডিফেন্ডার লালচুননুঙ্গার জন্মদিন। আর সেদিনই মিজোরামের এই তরুণ ডিফেন্ডারের সঙ্গে ২০২৫-২৬ মরশুম পর্যন্ত চুক্তি করল লাল-হলুদ ম্যানেজমেন্ট। লালচুননুঙ্গা উঠে এসেছেন আইজল এফসি’র জুনিয়র টিম থেকে। তারপর ২০১৯ সালে আইজলের সিনিয়র টিমের হয়ে আই লিগে তাঁর অভিষেক।

আরও পড়ুন – বিরাট কোহলির ব্যাটিং নিয়ে এবার বিরক্ত ছোটবেলার কোচ! বলছেন পুরোটাই ভুলে ভরা

পাহাড়ি দলটির জার্সি পরে নজর কাড়ায় ২০২১-২২ মরশুমের শুরুতে শ্রীনিধি ডেকান তাঁর সঙ্গে দু’বছরের চুক্তি করে। গত মরশুমে শ্রীনিধি ডেকানের হয়ে ভালো খেলায় তিনি ইস্ট বেঙ্গলের স্কাউটিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলারের নজরে পড়েন। আগস্টে তাঁকে এক বছরের জন্য লিয়েনে নেয় লাল-হলুদ।

রবিবার চুক্তির পর তিনি বলেন, ইস্টবেঙ্গল আমার পরিবারের মতো। লাল-হলুদের ঐতিহ্যই আলাদা। এমন ক্লাবের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করে আমি তৃপ্ত। নিজের সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য। উল্লেখ্য, লালচুননুঙ্গা এবার আইএসএলের সব ম্যাচেই প্রথম একাদশে ছিলেন। পুরো সময় খেলেওছেন। করেছেন ৪৭টি ক্লিয়ারেন্স, ১৮টি ব্লকিং ও ৩৪টি ট্যাকল।

ভারতীয় ফুটবলের আগামী দিনে এই ছেলেটি বড় ডিফেন্ডার হয়ে উঠতে পারেন এমন সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্ট। নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে হায়দারাবাদ এবং মুম্বইর কাছে ৫ গোল হজম করেছে ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে আবার নামছে লাল হলুদ।

লাস্ট বয় নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে হার মোহনবাগানের, বড়দিনের আগে হতাশা সবুজ মেরুনে

নর্থইস্ট ইউনাইটেড – ১
( জর্ডান)

এটিকে মোহনবাগান – ০

#গুয়াহাটি: ইন্ডিয়ান সুপার লিগে জয়ের হ্যাটট্রিক করার পর শেষ ম্যাচে ওড়িশার বিরুদ্ধে আটকে গিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। দলে বেশ কিছু চটাঘাত সমস্যা লেগেই ছিল। এমনিতেই তিনজন বিদেশিকে নিয়ে নেমেছিল সবুজ মেরুন। আজকেও ছিলেন না হুগো বুমু। নর্থইস্ট ইউনাইটেড সবচেয়ে নিচের দল। তাদের বিরুদ্ধে খাতায়-কলমে এগিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু ফুটবল খেলাটা খাতায় কলমে কম, মাঠে বেশি হয়।

অনেক দুর্বল দল ফেভারিট দলকে হারিয়ে চমকে দিতে পারে সেটা ফুটবলে নতুন কিছু নয়। প্রথমার্ধে আক্রমণ বেশি ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু বক্সের মধ্যে ফিনিশিং হচ্ছিল না। তার মধ্যেই প্রথমার্ধে জর্ডানের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। অন্যদিকে মোহনবাগানের পক্ষ থেকে দিমিত্রি, আশিক, লিস্টনরা অনেক সুযোগ তৈরি করেও কাজের কাজ করতে পারছিলেন না।

নর্থ ইস্ট দলটার কিছু হারানো ছিল না। তারা সাহসী হবে জানাই ছিল। ৬৯ মিনিটে সকলকে অবাক করে দিয়ে গোল পেয়ে গেল নর্থ ইস্ট। ডান দিক থেকে এমিল বেনির ক্রস হেড করে জালে জড়িয়ে দিলেন জর্ডান। গোলরক্ষক বিশাল চেষ্টা করেও আটকাতে পারেনি। মোহনবাগানের ২ ডিফেন্ডার প্রীতম এবং হামিল দর্শকের ভূমিকা ছিলেন।

যত সময় চলে যাচ্ছিল, ততই চাপ বাড়ছিল এটিকে মোহনবাগানের। এর মধ্যে দীপক এবং আশিক চোট পাওয়ার কারণে উঠে যেতে হয়। নামানো হয় কিয়ান এবং ফারদিনকে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হল না। একজন যোগ্য স্ট্রাইকারের অভাব এই মোহনবাগান দলটায় বড্ড বোঝা যাচ্ছে। সার্বিয়ার ডিফেন্ডারকে তারা সই করিয়েছে ঠিক কথা। কিন্তু জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে নতুন বিদেশি স্ট্রাইকার না নিলে সমস্যা মিটবে না।

তবে লাস্ট বয়ের কাছে হার সবুজ মেরুন শিবিরের কাছে লজ্জার। বড়দিনের আগে যেন শান্তা ক্লজের গিফট পেল উত্তর পূর্ব ভারতের দলটি। শেষ মুহূর্তে এমিল বিনির শট মোহনবাগানের গোলরক্ষক না বাঁচালে ব্যবধান আরো বাড়তে পারত নর্থ ইস্ট এর পক্ষে। তবে এই পরাজয় সবুজ মেরুনকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে বিরাট বড় বাধা সৃষ্টি করল সন্দেহ নেই। তিন নম্বরে রইল এটিকে মোহনবাগান। জিতেও শেষ স্থানেই রইল নর্থ ইস্ট।

মোহনবাগানের চাপ নিতে তৈরি! ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের আশ্বস্ত করলেন নতুন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার

#কলকাতা: ভারতীয় ফুটবলে তিনি নতুন নয়। আগে খেলে গিয়েছেন চেন্নাইন এফসিতে। একটা মরশুম থাকলেও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নিজের যোগ্যতা। ৬ ফুট ২ ইঞ্চির ডিফেন্ডার ফের আসতে চলেছেন ভারতীয় ফুটবলে। এবার গায়ে চাপাবেন সবুজ মেরুন জার্সি। অবশেষে ফ্লোরেন্তিন পোগবার বিকল্প ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি হল এটিকে মোহনবাগানের। জানুয়ারিতে ফিফার দ্বিতীয় উইন্ডো খুললেই সবুজ-মেরুনে যোগ দেবেন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার স্লাভকো ডামজানোভিচ।

তিনি এখন সার্বিয়ার সুপার লিগের ক্লাব নোভি পাজারে খেলছেন। মে মাসে বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে ফ্লোরেন্তিন পোগবাকে সই করিয়েছিল এটিকে মোহন বাগান। কিন্তু ডুরান্ড কাপে তাঁর খেলা দেখেই মনে হয়েছিল পুরো ফিট নন পল পোগবার দাদা। গত ছ’মাসে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন – Messi currency : আর্জেন্টিনার টাকায় এবার মেসি! সম্মান জানানোর বিশেষ ভাবনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আহত পোগবা দেশে ফিরে গিয়েছেন দু’সপ্তাহ আগে। ডামজানোভিচ ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন তিনি মোহনবাগানের চাপ নিতে তৈরি। ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম ঐতিহ্যশালী দলে খেলার চ্যালেঞ্জ কতটা কঠিন সেটা জেনেই সই করেছেন। কোচ এবং বাকি ফুটবলারদের বিশ্বাস অর্জন করার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

সার্বিয়ার এই ডিফেন্ডার এসে যাওয়ার ফলে মোহনবাগানের ডিফেন্স আগের থেকে শক্তিশালী হল সেটা বলাই বাহুল্য। অস্ট্রেলিয়ার ব্রেন্ডন হামিলের পর সার্বিয়ার স্লাভকো – দুজনে সবুজ মেরুন ডিফেন্সের প্রাচীর হয়ে উঠবেন এমন আশা করতেই পারেন সমর্থকরা।

পাশাপাশি একজন বিদেশি স্ট্রাইকারের সন্ধানে আছে এটিকে মোহনবাগান। এক্ষেত্রে একজন অস্ট্রেলিয়ান অথবা নাইজেরিয়ান ফুটবলার আসতে পারেন। কথা চলছে ভেতর ভেতর। বড়দিনের পরেই হয়তো নাম ঘোষণা হয়ে যাবে।

ওড়িশার বিরুদ্ধে গোল শূন্য ড্র, লিগ তালিকায় তিন নম্বরে থাকল এটিকে মোহনবাগান

ভুবনেশ্বর: টানা তিন ম্যাচ জিতে দারুণ ফর্মে ছিল এটিকে মোহনবাগান। বৃহস্পতিবার ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল তারা। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল দুই ক্লাব। শেষ ম্যাচে জামশেদপুরকে ১-০ গোলে হারায় মোহনবাগান। তবে এদিন প্রথম ধারে সকলকে অবাক করে দিয়ে হুগো বুমুকে রাখেননি জুয়ান ফেরান্ডো।

শুরু করেছিলেন তরুণ স্ট্রাইকার ফারদিন আলিকে রেখে। ৪-২-৩-১ খেলছিল মোহনবাগান। প্রথমার্ধে বলের দখল রাখার ক্ষেত্রে এগিয়েছিল ওড়িশা। জেরি, আইজ্যাক, পেড্র, মরিসিওরা বুদ্ধি করে আক্রমণ তুলে আনছিলেন সবুজ মেরুন বক্সে। কিন্তু ব্রেন্ডন হামিল, প্রীতম এবং শুভাশিস ভুল না করার কারণে প্রথমার্ধে গোল হজম করতে হয়নি সবুজ মেরুনকে।

সুযোগ পেলে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল মোহনবাগানও, তবে ম্যাক হিউর শট, দিমির প্রচেষ্টা নিশানায় থাকেনি। লিস্টন চেষ্টা করলেও ফাইনাল বল বাড়াতে পারছিলেন না। কিয়ানকে নিয়ে এল মোহনবাগান। কিন্তু উড়িষ্যার আক্রমণ বেড়েই চলেছিল। সেট পিস থেকে একের পর এক বিপদের সৃষ্টি করছিল ওড়িশা।

সবুজ সমর্থকরা ভাবছিলেন কখন নামানো হবে হুগোকে। এর মধ্যেই একবার দিমিত্রি শট নিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচিয়ে দেন ওড়িশার গোলরক্ষক। লিষ্টন শট নেন। আবার সেভ। ৭৯ মিনিটে হুগো এবং হানামটেকে নিয়ে আসেন সবুজ মেরুন কোচ। ওসামা মালিকের হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ভাগ্য খারাপ ওড়িশার।

শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য অবস্থায় খেলা শেষ হয়। ১০ ম্যাচে কুড়ি পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রইল এটিকে মোহনবাগান। চতুর্থ স্থানে থাকল ওড়িশা। মাঝে অবশ্য মাথা গরম করে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের কিছু ফুটবলার। তবে রেফারি শ্রীকৃষ্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেননি।

‘ইস্টবেঙ্গলের নতুন রোনাল্ডো’ ! ক্লেটন বলছেন আরও চমক বাকি আছে আইএসএলে

#জামশেদপুর: ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এবারে যে দল তৈরি করেছে ইস্টবেঙ্গল তার মধ্যে সেরা বিদেশি নিঃসন্দেহে তিনি। যখন বেঙ্গালুরু দলে খেলতেন, তখনই নিজের জাত চিনিয়েছিলেন তিনি। লাল হলুদ জার্সিতে ক্লেটন সিলভা প্রমাণ করে চলেছেন তিনি একাই দলকে টানার ক্ষমতা রাখেন যদি তলা থেকে সাহায্য পান। জামসেদপুরের মাঠে গিয়ে তাদের হারিয়ে আসা সহজ নয়। সেখানে ইস্টবেঙ্গল যেমন বড় ব্যবধানে জিতেছে, তেমনই সিলভা জোড়া গোল করেছেন।

তার আগে বেঙ্গালুর মাঠে গিয়ে তার গোলেই জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। ব্রাজিলিয়ান কিন্তু আনন্দে ভেসে যেতে রাজি নন। জামশেদপুর ম্যাচের পর জানিয়েছেন, আইএসএল যেভাবে হচ্ছে তাতে এবার অনেক চমক বাকি। ইস্টবেঙ্গল রোজ উন্নতি করছে, পরের ম্যাচগুলো আমরা আরও ভাল খেলব।

আরও পড়ুন – আজ সামনে উরুগুয়ে, প্রতিশোধ এবং নকআউট দুটোই চায় রোনাল্ডোর পর্তুগাল

তরুণ মনিপুরী ফুটবলার মহেশ যেভাবে ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে নিজেকে মেলে ধরছেন সেটা মুগ্ধ করেছে সিলভাকে। ব্রাজিলিয়ান বলছেন, মহেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। বয়স কম এবং শেখার ইচ্ছে আছে। ভারতে আসার পর থেকে আমি যে কজন প্রতিভাবান ভারতীয়কে দেখেছি, সেই তালিকায় ও থাকবে। দলের অধিনায়ক হিসেবে আমি নিজেকে চোটমুক্ত রাখতে চাই এবং প্রত্যেক ম্যাচে ভূমিকা রাখতে চাই।

ইস্টবেঙ্গলের তিনটে গোলের পেছনে অবদান রাখা মহেশ বলছেন, কোচ স্টিফেন আমাকে সব সময় উপদেশ দেন। অনুশীলন এবং মাঠের বাইরেও নিজেকে ধারাবাহিক করে তুলতে গেলে কি করতে হবে সেটা জলের মতো বুঝিয়ে দেন। কোচের কথা শুনেই এই জায়গায় এসেছি। লক্ষ্য ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।

ইস্টবেঙ্গল এর পরের ম্যাচ খেলবে, হায়দারাবাদ দলের বিপক্ষে। যুবভারতীতে যারা এটিকে মোহনবাগানের কাছে শেষ ম্যাচ হেরেছে। ক্লেটন বলছেন হায়দারাবাদ আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাবে। পূর্ণ শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কিন্তু আমরা দল হিসেবে আগের থেকে অনেক বেশি মজবুত।

ডিফেন্স, মাঝখান এবং আক্রমণ তিনটে জায়গাতেই উন্নতি হয়েছে। তাকে মজা করে ইস্টবেঙ্গলের রোনাল্ডো বলে ডাকছেন সমর্থকরা। মুখের আদল কিছুটা পর্তুগিজ মহাতারকার মত তাতে সন্দেহ নেই। ক্লেটন অবশ্য চান বিশ্বকাপ জিতুক তার দেশ ব্রাজিল। তবে রোনাল্ডো তার পছন্দ।

সিলভার জোড়া গোল, জামশেদপুরের মাঠে গিয়ে দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নিল ইস্টবেঙ্গল

জামশেদপুর – ১
ইস্টবেঙ্গল – ৩

#জামশেদপুর: স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন কথা দিয়েছিলেন একটু সময় পেলে তিনি ইস্টবেঙ্গল দলটাকে গুছিয়ে নেবেন। কথার কথা বলেননি সাহেব কোচ সেটা বোঝা যাচ্ছে এখন। শুরুর দিকে যতটা খারাপ খেলছিল দলটা, এই মুহূর্তে অনেক গুছিয়ে নিয়েছে লাল হলুদ। ফিটনেস, বল ধরে রাখার ক্ষমতা এবং ডিফেন্স আগের থেকে উন্নত। রবিবার যারা ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচটা দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই মানবেন লাল হলুদের খেলা তাদের আশ্বস্ত করছে।

ক্লেটন সিলভার জোড়া গোলে জামশেদপুরকে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। প্রথম বার টানা দু’টি অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতল তারা। বাকি যে ম্যাচটি জিতেছে, সেটিও গুয়াহাটিতে নর্থইস্টের হয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে। সোমবারের ম্যাচ দেখার পর ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা দাবি করতেই পারেন, তাদের বাকি সবক’টিই অ্যাওয়ে ম্যাচ হোক।

কারণ ঘরের মাঠে এখনও জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেয়ে যায় তারা। আক্রমণ শুরু হয় সেই ক্লেটনের থেকেই। তাঁর থেকে নাওরেমের মহেশের পায়ে বল যায়। তিনি ক্রস করেন বক্সের উদ্দেশে। সেখান থেকে অনবদ্য হেডে বল জালে জড়ান ভিপি সুহের।

প্রতি আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। বল পেয়ে একাই উঠতে থাকেন মহেশ। এক দিক দিয়ে ছুটছিলেন ক্লেটন। মহেশের নিখুঁত পাস থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন ক্লেটন। ৩৭ মিনিটে একটি গোল শোধ করে জামশেদপুর। বক্সের মধ্যে বিপক্ষের ফুটবলারকে ফেলে দেন লালচুংনুঙ্গা।

পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ করেন জে টমাস। বাঁ দিকে বল পেয়েছিলেন সেই মহেশ। একটু এগিয়ে তিনি বক্সের মধ্যে ক্লেটনকে উদ্দেশ্য করে পাস বাড়ান। বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ঘাড়ে নিয়ে গোল করেন ক্লেটন। এদিন ব্রাজিলীয় তারকা প্রমাণ করলেন ভারতবর্ষে বিদেশীদের মধ্যে তিনি অন্যতম ধারাবাহিক। পাশাপাশি জর্ডান, লিমা এবং ভারতীয় ফুটবলার হাওকিপ নজর কেড়েছেন।