জলপাইগুড়ি: তাল পাতার পাখা নাকি প্লাস্টিকের পাখা, জামাইষষ্ঠীতে বাজিমাত করবে কে? বছরের ঠিক এই সময়টায় হঠাৎ করেই অনেকটা কদর বেড়ে যায় হাতপাখার। আর সেইটা নিয়েই প্রতিযোগিতা চলে পুরনো তালপাতার হাতপাখা ও আধুনিক প্লাস্টিকের তৈরি হাত পাখার মধ্যে।
আর ক’দিন পরেই জামাইদের পার্বণ। কোঁচা বেঁধে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে হাজির হবেন জামাইরা। শ্বশুর বাড়িতে এই দিন জামাইয়ের জন্য থাকে এলাহি ব্যবস্থা। সঙ্গে ফল, মিষ্টি থেকে শুরু করে নানান সুস্বাদু খাবারের আয়োজন। তীব্র গরমে জামাইকে স্বস্তি দিতে থাকে হাত পাখার শীতল বাতাস। তাই শ্বশুর বাড়িতে জামাইয়ের জন্য একখানা হাতপাখা রাখা পুরা কালের ঐতিহ্য। আগে সেই পাখা ছিল একেবারে অনন্য সাজে বিভিন্ন নকশায় কারুকার্যময় তালপাতার পাখা। তবে দিনকাল বদলেছে। তাই এখন অনেকে প্লাস্টিকের হাতপাখা দিয়েই কাজ সেরে ফেলেন।
তবে আজও শাশুড়িদের মধ্যে প্রবণতা থাকে তালপাতার পাখা দিয়ে জামাইষষ্ঠীতে জামাইকে হাওয়া করার। এ বছর জলপাইগুড়ির বাজারে জামাইষষ্ঠীর আগেই রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে তালপাতার হাত পাখা। ৩০ টাকা দরে দেদার বিক্রি হচ্ছে এই পাখা। পাল্লায় অবশ্য খুব একটা পিছিয়ে নেই প্লাস্টিকের পাখাও। মাত্র ১০ টাকা দাম সেই পাখার। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বছরে অন্য সময় চাহিদা না থাকলেও জামাইষষ্ঠীর আগে কদিন অন্তত প্লাস্টিকের হাতপাখা প্রতিযোগিতায় হেরে যায় তালপাতার তৈরি হাতপাখার কাছে। ফলে হাসি ফোটে বিক্রেতাদের মুখেও।
হরষিত সিংহ, মালদহ: আমের ফলনে ব্যাপক ঘাটতি। সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারে লিচু। মালদহের ফুটপাত থেকে বিভিন্ন এলাকায় এখন শুধু দেখা যাচ্ছে লিচুর পশরা। আবার ঠেলাগাড়িতে করেও মালদহ শহরের বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাকা লিচু। এই গরমে সস্তায় এবার মিলছে রসাল ফল লিচু। বাজারে দেদার বিক্রি শুরু হয়েছে লিচু। দেশি প্রজাতির গুটি থেকে বোম্বাই প্রজাতির লিচু দেদার বিক্রি হচ্ছে মালদহের বাজারে।
দামেও সস্তা এবার লিচু। কারণ মালদহের বাগানগুলিতে এবার ব্যাপক ফলন হয়েছে এই ফলের। মালদহের লিচু ইতিমধ্যে পাড়ি দিচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা-সহ ভিন রাজ্যে। মালদহের বাজারে মাত্র ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে লিচু। তবে গুটি প্রজাতির লিচুর দাম কিছুটা কম হয়েছে। কারণ ইতিমধ্যে পাকতে শুরু করেছে বোম্বাই প্রজাতির লিচু। জামাইষষ্ঠীর আগেই বাজারে অনেকটাই সস্তায় মিলছে লিচু। আগামী কয়েকদিনে বাজারে আরও বেশি পরিমাণে বিক্রি শুরু হবে বোম্বাই প্রজাতির লিচু। মালদহ জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, ‘‘লিচুর ফলন ভাল হয়েছে আর রেকর্ড ফলনের সম্ভাবনা। বাজারে এখন থেকে কিছু কম দামে বিক্রি হচ্ছে, মালদহের লিচু ভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে।’’
এই বছর লিচুর ফলন বেশি হয়েছে। তাই অনেকটাই সস্তায় মিলছে এবার লিচু। মালদহের কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে সব থেকে বেশি লিচুর চাষ হয়। এছাড়াও ইংরেজবাজার, মানিকচক ও রতুয়া ব্লকে লিচুর চাষ হয়ে থাকে। চলতি মরশুম প্রথম থেকেই লিচু চাষের পক্ষে অনুকূল। এই বছর মালদহে লিচুর রেকর্ড ফলন হয়েছে। এই বছর মালদহ জেলায় ১৪ হাজার মেট্রিক টন লিচুর ফলন হয়েছে। এখন বাগানগুলিতে লিচু পাকতে শুরু করেছে। বিক্রিও শুরু হয়েছে বাজারে। প্রথম দিকে দাম বেশি থাকলেও বর্তমানে ধীরে ধীরে দাম কমতে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনে মালদহের বাজারে আরও কম দামে লিচু বিক্রি হতে পারে।