নয়ন ঘোষ, পানাগড়, পশ্চিম বর্ধমান : আমাদের দেশে রয়েছে একাধিক নামী শিব মন্দির। সামনেই রয়েছে শিবরাত্রি। তার জন্য সমস্ত শিব মন্দিরগুলিতেই মহা ধুমধামে এই পুণ্যতিথি পালনের প্রস্তুতি চলছে। আর এমন সময় দর্শন করুন পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শিব মন্দির। যে মন্দিরে মহাদেব সারা বছর থাকেন সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায়। পশ্চিম বর্ধমান জেলার ক্ষেত্রপাল মন্দির। যা আদতে মহাদেবের মন্দির। যদিও মন্দির চত্বরে দেবী কালী, গণেশ, বৈষ্ণোদেবী, বজরঙ্গবলীর মন্দিরও রয়েছে। মন্দিরের চতুর্দিকে বাঁধা আছে একাধিক ছোট বড় নানা মাপের ঘন্টা। যে কারণে এই মন্দিরের অপর নাম ঘণ্টা বাবার মন্দির।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে ঘণ্টা মানত করলে তা পূরণ হয়। তার পর তারা মন্দিরে এসে ঘণ্টা বেঁধে যান। আর এমন একটি মন্দির সারা বছর থাকে সেনাবাহিনী নিরাপত্তায়। এই মন্দিরটি পানাগড়ের সেনাঘাঁটিতে অবস্থিত। যদিও মন্দিরটি যে জায়গায় বর্তমানে অবস্থান করছে, সেই জায়গায় আগে হাসোয়া নামের একটি গ্রাম ছিল। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই জায়গায় সেনাবাহিনীর ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে মন্দিরটি সরানো যায়নি। প্রথমে এই মন্দির ছিল একটি তেঁতুল গাছের নীচে। পরে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে সেখানে মন্দির তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন : খননকাজে বেরিয়ে পড়ে এই প্রাচীন মন্দির, ঘুরে আসুন শিবরাত্রির পুণ্যতিথিতে
এই মন্দিরে ভক্তদের যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু এই মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলে মানতে হয় একাধিক নিয়ম। সেনাঘাঁটির তিন নম্বর গেট অর্থাৎ চাণক্য দ্বার দিয়ে এই মন্দিরে প্রবেশ করা যায়। তবে মন্দিরের প্রবেশের পথেই রয়েছে সিকিওরিটি চেকিং। সেখানে পরিচয়পত্র জমা দিয়ে মন্দিরে যেতে হয়। ফেরার সময় সংগ্রহ করতে হয় সেই পরিচয়পত্র। এই মন্দির যেহেতু সেনা ঘাঁটির মধ্যে অবস্থিত, তাই কোনওভাবেই এখানে ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফির অনুমতি সেনার তরফ থেকে দেওয়া হয় না।
প্রত্যেক সোমবার এই মন্দিরে প্রচুর ভক্তদের ভিড় হয়। তাছাড়া শ্রাবণ সোমবার এবং শিবরাত্রিতে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। মন্দির চত্বরে রয়েছে পুজোর সামগ্রীর দোকান। মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এখানে বিভিন্ন শুভ অনুষ্ঠানেরও ব্যবস্থা করা হয়। তবে তার জন্য অবশ্যই নিতে হয় অনুমতি। সারাদিন এখানে পুজো পাঠ চলতে থাকে। থাকেন পুরোহিতরা। তাছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময় মহাদেবের বিশেষ আরতি, যজ্ঞ চলে এই মন্দিরে। আপনিও চাইলে যে কোনওদিন ঘুরে আসতে পারেন এই মন্দির থেকে। তবে সেনাঘাঁটিতে প্রবেশ করার জন্য যা যা নিয়ম মানা প্রয়োজন, তা আবশ্যিকভাবে মানতে হবে।