Tag Archives: Mansa Puja

Mansa Puja: মা মনসার অপরূপ সাজ, ভক্তির সাগরে ভাসেন ভক্তরা, পুজোর আগেই এক ঝলক

পুরুলিয়া : দোড়গড়ায় পুরুলিয়ার মনসা পুজো। এই পুজো উপলক্ষ্যে মেতে ওঠে আপামর মানভুমবাসী। এই সময় জেলার মানুষের আনন্দ উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যায়। মনসা পুজোর জন্য অধীর আগ্রহে সারাটা বছর অপেক্ষা করে জেলার মানুষেরা। জেলা পুরুলিয়ার অন্যতম উৎসব এই মনসা পুজো। এই পুজোয় মা মনসার চালা অনেকখানি অন্যরকম দেখতে হয়।

মূলত ডাকের সাজে সাজানো হয় মা মনসাকে। একেবারেই অন্যরকম দেখতে হয় পুরুলিয়া বাঁকুড়ার মনসা মূর্তি। একচালা মা মনসার প্রতিমা গড়েন শিল্পীরা সাজানো হয় ডাকের সাজ দিয়ে। রাজ্যের অন্যান্য জেলায় মনসা পুজো হলেও সেই মূর্তি সঙ্গে পুরুলিয়া বাঁকুড়ার মনসা মূর্তি অনেকখানি অন্যরকম দেখতে হয়। খানিকটা দুর্গা প্রতিমার আদলে সাজানো হয় মা মনসাকে। ‌

আরও পড়ুনSawan Somwar 2024: টাকায় মুড়ে যাবেন, শ্রাবণ শেষে ৩টি রীতি মানুন মন দিয়ে, মহাদেবের আশীর্বাদের হাত থাকবে আপনার মাথায়, হাতে রয়েছে আরও একটা দিন

এ বিষয়ে এক মৃৎশিল্পী বলেন , তিনি দীর্ঘদিন ধরে মূর্তি তৈরি করছেন। অন্যান্য মূর্তিতে চালা না থাকলেও চলে কিন্তু পুরুলিয়া বাঁকুড়ায় এই মনসা পুজোয় মা মনসার মূর্তি চালা থাকতেই হবে এবং তা ডাকের সাজে সাজানো হবে।। তা না হলে এই মূর্তি পূজিত হবে না। এটা পুরুলিয়া বাঁকুড়ার নিয়ম। সেই নিয়মেই পুজো হয়ে আসছে বহু বছর ধরে।

দেবী মা মনসা এই সময় মহা ধুমধাম এর সঙ্গে পূজিত হন জঙ্গলমহলের এই জেলায়।‌ যেন উৎসবের চেহারা নেয় গোটা পুরুলিয়া বাঁকুড়া জেলা। দুর্গাপুজোর থেকেও বেশি ধুমধাম হয় পুরুলিয়ার এই মনসা পুজোয়। জঙ্গলমহলের ঐতিহ্য এই মনসা পুজো।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি

Mansa Puja: শ্যাওড়া, ঘেটু ও ডুমুর গাছ‌’ই দেবতা! বুড়ো বাবা আর দেবী মনসার পুজো এখানে মিলেমিশে একাকার

নদিয়া: একধারে তারকাটার বেড়া অন্যদিকে বয়ে চলেছে ইছামতি নদী। ফতেপুর, ঘোষ কমলপুর, মোবারকপুর, পেপুল বেরিয়া, ছুটিপুর প্রভৃতি অঞ্চলের মানুষের কাছে ফতেপুর জনপদ একটি দর্শনীয় ও ভক্তির স্থান। এই স্থানকে ঘিরে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ঘোড়ামারি ডাঙা ও ঘোড়ামারির মাঠে বসে মেলা। মূলত কৃষি জমির মধ্যে ঘোড়ামারির মাঠ নামে রয়েছে এক চিলতে জমি। সেই জমিতেই গোসাই বাবা বা সাধুবাবার থান রয়েছে। এই স্থানটিকে কেউ বলেন পাগলা বাবার ধাম আবার কেউবা বলেন বুড়ো বাবা ধাম।

চারপাশে প্রায় দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনও বসতি নেই। অথচ প্রতিবছর এই দিনে সকাল থেকে সন্ধেয় মানুষের ঢল নামে এই স্থানে। এই অঞ্চলের মানুষেরা এখানে মনসা পুজো করেন। অবশ্য মূর্তি নেই মা মনসার। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল এই পুজোর নেই কোনও নিয়ম বিধি। এখানকার গ্রামবাসীরা আগের দিন রাতে ভাত রান্না করে জল দিয়ে রাখেন, আর পরের দিন দশহরা তিথিতে সেই ভাত খেয়ে থাকেন। বলা যেতেই পারে এদিন গ্রামে অরন্ধন দিবস পালিত হয়। বুড়ো বাবার পুজোর সঙ্গে মনসা দেবীর পুজো মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এই স্থান।

আর‌ও পড়ুন: চেনা পোশাকে অচেনা ভূমিকায় এসডিপিও

ফতেপুরবাসীরা বাবার স্থানের কোনও গাছের একটি পাতাও কেউ ছেঁড়ে না। এর কারণ একইসঙ্গে ভয় এবং ভক্তি। তাই এখানে গেলে শ্যাওড়া, ঘেটু ও ডুমুর গাছ দেখতে পাবেন ছাতার মতো ঘিরে রেখেছে পুরো জায়গাটিকে। পুজোর প্রসাদ বলতে খিচুড়ি, ল্যাবড়া, সবজি আর পায়েস। আশপাশের কোন‌ও গ্রামেই এই বিশেষ দিনে কেউ দুধ বিক্রি করেন না। যত দুধ হয় সব এই স্থানে নিয়ে গিয়ে পায়েস তৈরি করে এবং ভক্তদের উদ্দেশ্যে বিতরণ করা হয়। গ্রামের মানুষেরা স্বতস্ফূর্ত হয়ে চাল, ডাল, দুধ, চিনি দান করেন। বিভিন্ন জায়গায় রান্না করা হয় এবং ভক্তদের ও দর্শনার্থীদের বসিয়ে পেট পুরে খাওয়ানো হয়। গ্রামবাসীদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বিএসএফ জওয়ানরা।

পুণ্যার্থী ও ভক্তদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য তাঁরা পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন। বর্তমান সমাজে গ্রাম বাংলাতে এইরকম দৃশ্য বিরল। মেলায় নেই কোন‌ও আড়ম্বর, নেই কোনও হই হুল্লোর। তবে আছে এই মেলাকে কেন্দ্র করে মানবতা। বলা যেতেই পারে স্থানীয় বাসিন্দারা এই লোক উৎসবের মাঝে খুঁজে পান তাঁদের পুরনো দিনের স্মৃতি।

মৈনাক দেবনাথ

Manasa Puja: জাগ্রত মনসা পুজো! স্টেশন ছাড়াই বছরে একদিন এখানে থামে ট্রেন! জানলে অবাক হবেন

পশ্চিম মেদিনীপুর: মাঠের মাঝে দেবী মনসার অবস্থান। মাথার উপর কোনও ছাদ বা আচ্ছাদন না থাকলেও বছরের চৈত্র মাসে নির্দিষ্ট একটি দিনে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমে এই মন্দিরে। দূর দূরান্ত থেকে বহু ভক্ত আসেন মনস্কামনা জানিয়ে পুজো দিতে। বেশ কয়েক বছর ধরে জাঁকজমক আরও বেড়েই চলেছে। সারা বছরের সবদিনই ভক্তের ভিড় থাকে এখানে, তবে এই নির্দিষ্ট দিনে মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে হয় বিশাল মেলার আয়োজন, থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।ভক্তদের জন্য এই দিন মন্দিরের সোজাসুজি দাঁড়াতে হয় ট্রেনকে। বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড, কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু ভক্ত আসেন এই দিন।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর গ্রামীন থানার অন্তর্গত মাদপুরে রয়েছে প্রাচীন মনসা মন্দির। দিন দিন দেবীর মাহাত্ম্য ক্রমশ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন ভক্তের আনাগোনা থাকলেও বাংলার বছরের চৈত্র মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার বেশ ভিড় জমে এই মন্দিরে। দেবীর কাছে পুজো দেওয়ার আশায় আগের দিন থেকেও বহু ভক্ত আসেন মন্দিরে। তবে মঙ্গলবার লক্ষাধিক ভক্তের ভিড় জমে ছিল এখানে। মনস্কামনা জানিয়ে পুজো দেন বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা মানুষজন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠানের নানান ইতিহাস, লোককথা থাকলেও ধীরে ধীরে দেবীর মাহাত্ম্যের ব্যপ্তি ঘটেছে। নিজেদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ হওয়ায় নির্দিষ্ট এই পুজোর দিনে বহু ভক্ত আসেন এখানে।

আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল থেকে পিরিয়ডের সমস্যা! বহু জটিল রোগের ওষুধ রান্না ঘরের এই চেনা মশলা!

জানা যায়, সন্তান ধারণ, বিভিন্ন গৃহপালিত পশু হারিয়ে যাওয়া বা প্রিয়জন নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মত ঘটনায় মিলেছে সুরাহা। স্বাভাবিকভাবে মাদপুরের মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে বেশ জাঁকজমক থাকে। বছরে একটি নির্দিষ্ট দিনে বড় পুজো হলেও সারা বছর ভিড় থাকে মন্দিরে। এছাড়াও এই পুজোকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরেই হয় মেলা। থাকে নানান সাংস্কৃতিক আয়োজনও। বর্তমানে মন্দিরের সামনে পুকুর এবং মন্দিরের সংস্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘড়ি কেন বাম-হাতে পরা হয়? উত্তর জানেন না বহু মানুষ!

সোমবার সন্ধ্যায় মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা দেব। স্বাভাবিকভাবে মাঠের মাঝে গরমের সময়ে এই মেলায় ভক্তদের বিশ্বাস মিলেমিশে একাকার। মন্দিরকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন এবং মন্দির কর্তৃপক্ষ বেশ তৎপর থাকেন এই মেলার দিনে।

রঞ্জন চন্দ