পূর্ব বর্ধমান: শীতের মরশুমে বিক্ষিপ্ত অকাল বর্ষণ। ক্ষতির আশঙ্কায় জেলার আলু চাষিরা। রাজ্যের মধ্যে পূর্ব বর্ধমানের পরিচিতি শস্যভাণ্ডার হিসেবে। তবে ধান ছাড়াও এই জেলায় চাষ হয় অন্যান্য নানা ফসলও। যার মধ্যে অন্যতম আলু।
জেলার একটা বড় অংশে আলু চাষ করা হয়। পূর্ব বর্ধমান জেলার পুর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় পোখরাজ আলুর চাষ হয়। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বরম্ভা, সরডাঙ্গা, ধিতপুর-সহ বিভিন্ন এলাকা। তবে এবার আলু চাষে দুশ্চিন্তার মেঘ চাষিদের কপালে।
আরও পড়ুন: খেতে ভাল লাগুক বা না লাগুক, কলা গাছের থোড় এই ভয়ানক রোগ থেকে রেহাই দেবেই! জানুন
গত শীতে নিম্নচাপ, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। শীতের মরশুমে অকাল বর্ষণের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলু চাষ। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য অধিকাংশ আলু গাছেই ধসা লেগেছে। ফলে অন্যান্য বারের তুলনায় আলুর ফলন একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। স্বভাবতই ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এই এলাকার কৃষকেরা।
আরও পড়ুন: দামি দামি মশার তেল-ধূপ বাদ দিন, পাতিলেবুতে ‘এই’ জিনিসটি জ্বালান! মশার বংশ খুঁজে পাবেন না
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় এক আলু চাষির দাবি, এবছর তাঁদের আলু চাষ ভাল হবে না, একদমই ফলন নেই। গতবারের তুলনায় বহু কম। নিম্নচাপের কারণে আলু গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আবার খরচ অনেক বেড়েছে। জানা গিয়েছে এই এলাকারই অনেক কৃষকই মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন। কেউ মহাজন, কেউবা ব্যাঙ্ক থেকে এই ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু আলু চাষে ক্ষতির প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় , দুশ্চিন্তার কালো মেঘ তাঁদের মনে।
এই বিষয়ে আরও এক আলু চাষি জানান, তাঁর প্রায় ১২ বিঘা জমির আলু নষ্ট হয়েছে। তারই মধ্যে থেকে অল্প ফলন হয়েছে। তিনি বলেন ১ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, গতবারের তুলনায় ফলন অনেক কমে গিয়েছে। অন্যদিকে, এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় আলু চাষ হয় ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছর ৬৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল।
এবছর প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে । জেলা কৃষি দফতর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে , বৃষ্টিপাতের কারণে এবং শীত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার কারণে জেলার কিছু কিছু জায়গায় আলু চাষে ক্ষতি হলেও হতে পারে। তবে এখন জমি থেকে ফসল তোলা হচ্ছে। জানা গিয়েছে মার্চ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত ফসল তোলার কাজ চলবে। এবং ২০ তারিখের পরেই জেলার আলু চাষের কী অবস্থা সেই ধারণা পরিষ্কার হবে । বর্তমানে স্বভাবতই খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জেলার একাধিক আলু চাষি।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী