Tag Archives: Tabla

Poor Artist: নজরুলের সামনে তবলা বাজিয়ে তারিফ পেয়েছিলেন, দুরাবস্থায় জীবন কাটছে বিখ্যাত তবলিয়ার

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এক সময় কাজী নজরুল ইসলামের সামনে বসে তবলা বাজিয়েছিলেন। সঙ্গীতশিল্পী সুপ্রভা সরকার থেকে শুরু করে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, আরতী মুখোপাধ্যায়দের সঙ্গে‌ও তবলায় সঙ্গত দিয়েছিলেন জয়নগরের কানাইলাল ভট্টাচার্য। তাঁর বয়স এখন ৮২ বছর। জয়নগর-মজিলপুরের ভূমিপুত্র বিপ্লবী কালাচাঁদ ভট্টাচার্যের ভাইপো তিনি। দরমার বেড়া আর অ্যাসবেস্টাসের ছাউনির ঘরে কোনরকমে জীবনযাপন করেন এই প্রবীণ তবলিয়া।

সরকারি বার্ধক্য ভাতা ও খুদে শিক্ষার্থীদের তবলা শেখানোর সামান্য পারিশ্রামিক‌ই এই শেষ জীবনে ভরসা কানাইবাবুর। সারা জীবনে এত বিখ্যাত মানুষদের সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেছেন, কিন্তু শেষ জীবনে এসে এইভাবে কাটাতে হওয়ায় স্বভাবতই মুষড়ে থাকেন। নিজের কথা বলতে গিয়ে চোখে জল চলে আসে তাঁর। জানান, আবাস যোজনার ঘরের জন্য আবেদন করলেও তাঁর নাম তালিকায় ওঠেনি। বৃষ্টি এলেই এই ভাঙা ঘরের ছাউনি চুঁইয়ে জল পড়ে।

আর‌ও পড়ুন: পানের জন্য দুর্গন্ধযুক্ত জল সরবরাহ হচ্ছে! ক্ষেপে গিয়ে রাস্তায় বসে পড়ল বসিরহাটের মানুষ

জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কানাইলাল ভট্টাচার্য। তাঁর ছোট ঘরে কাকা কালাচাঁদ ভট্টাচার্যের মূর্তি আছে। বাবা শশধর ভট্টাচার্যের ছবি শোভা পাচ্ছে ঘরের দেওয়ালে। এঁরা ছিলেন পাঁচালি গানের শ্রষ্টা। ঘরের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কানাইবাবুর পাওয়া বিভিন্ন মানপত্র। বহু গুনীজনের সঙ্গে তাঁর ছবি দেওয়াল ভর্তি। এক কোণে সযত্নে রাখা তিনটি তবলা। বয়স থাবা বসিয়েছে কানাইবাবুর শরীরে। চোখেও কম দেখেন। কিন্তু তবলার সঠিক তাল এখনও চিনতে ভুল হয় না। সকাল থেকেই চলে তাঁর তবলার কসরত।

জয়নগরের অজিত ভট্টাচার্যের কাছে ১৩ বছর বয়সে তবলার হাতেখড়ি হয়েছিল কানাইবাবুর। এরপর বেনারসের বিষ্ণুসেবক মিশ্র, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, কানাই দত্তদের মত প্রবাদপ্রতিম শিল্পীদের কাছে তবলায় তালিম নিয়েছিলেন। টানা ২২ বছর তবলা শেখেন। সঙ্গীত জগতের বড়দি সুপ্রভা সরকারের গানের সঙ্গে তবলা বাজাতেন।তিনি কাজী নজরুল ইসলামের ছাত্রী ছিলেন। সেই সুত্রেই কাজী নজরুল ইসলামকে চোখের দেখা দেখেছিলেন। তাঁর সামনে বসে তবলা বাজানোর সুযোগ‌ও হয়।

পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী বন্ধুর মত ছিলেন বলে জানিয়েছেন কানাইবাবু। কানাইবাবু বলেন, মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আমার ছাত্র-ছাত্রীরা যথেষ্ট সন্মান করে। তাঁদের দেওয়া সামান্য পারিশ্রামিকে ও বার্ধক্যভাতার এক হাজার টাকাই আপাতত ভরসা। তবে এই বর্ষাকালকে বড় ভয় পান। কারণ ভাঙাচোরা ঘরে বর্ষাকালে অবিরত জল পড়তে থাকে। তাঁর সবচেয়ে বড় ভয় সাধের তবলাদের ঘিরে। বৃষ্টির জল একবার লাগলে শেষ বয়সের সঙ্গী তবলাগুলো যে নষ্ট হয়ে যাবে!

সুমন সাহা

মাটি নাকি ধাতু, কী ধরনের ডুগি তবলা কিনলে চলবে বহুদিন? কীভাবে নেবেন যত্ন? এই নিয়মগুলি মেনে চলুন, বংশের পরম্পরায় ব্যবহার করতে পারে

দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান : অনেকের বাড়িতেই নিয়মিত গান বাজনার চর্চা হয়। অনেকেই বিভিন্ন মুহূর্তে গান বাজনা নিয়ে চর্চা করতে ভালবাসেন। স্বভাবতই অনেকের বাড়িতেই রয়েছে নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র। যার মধ্যে হারমোনিয়াম, ডুগি তবলা অন্যতম। কিন্তু ক ধরনের ডুগিতবলা নেওয়া উচিত? মাটির তৈরির ডুগিতাবলা নেওয়া ভাল নাকি ধাতুর তৈরি? কিভাবে যত্ন নিতে হয় এই বাদ্যযন্ত্র গুলির? জানিয়েছেন বাদ্যযন্ত্রের এক বিশেষজ্ঞ।

দীর্ঘদিনের বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসায়ী শুভেন্দু রুইদাস বলছেন, ডুগিতবলা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে বুঝতে হবে কি কারণে ডুবি তবলা নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ সেই ডুগিতবলা দিয়ে বাড়িতে রেওয়াজ করা হবে, নাকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। তিনি বলছেন, মাটির তৈরি ডুগি তবলার আওয়াজ বেশি মিষ্টি। এই ডুগিতবলার আওয়াজ ভাল। ফলে অনেকেই এটা পছন্দ করেন। কিন্তু মাটির তৈরি হওয়ার ফলে এটিকে খুব সাবধানে রাখতে হয়। বাইরে নিয়ে যাওয়া আসার ক্ষেত্রে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যদিকে ধাতুর তৈরি ডুগিতবলার আওয়াজও খারাপ নয়। তবে এই ডুগিতবলা বহন করা বেশি সুবিধাজনক।

আরও পড়ুনIndian Railways: একটি রেলস্টেশনের দুটি ভিন্ন নাম! দুটির মধ্যে দূরত্ব ২ সেকেন্ড! খাস বাংলায় রয়েছে, জানেন কোথায়?

তাই এই বিষয়ে শুভেন্দু বাবু বলছেন, বাড়িতে ব্যবহার করতে চাইলে মাটির ডুগিতবলা নেওয়া উচিত। অন্যদিকে অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করতে চাইলে নেওয়া উচিত ধাতুর তৈরি ডুগিতবলা। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, বাড়িতে চামড়ার তৈরি কোনও বাদ্যযন্ত্র থাকলে, সেগুলি নিয়মিত যত্ন করা উচিত। সপ্তাহে অন্তত একবার বাজিয়ে দেখা উচিত। তাছাড়া বর্ষাকালে এই সমস্ত বাদ্যযন্ত্রগুলিকে বিশেষভাবে সাবধানে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বর্ষাকালে টানা বৃষ্টি হলে, রোদের দেখা পাওয়া মাত্রই এগুলিকে ০৫ থেকে ১০ মিনিট রোধে রাখার কথা তিনি বলেছেন। এছাড়াও বাদ্যযন্ত্রের কোনও সমস্যা বুঝলে শিক্ষকের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলির মেরামতি করার প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

নয়ন ঘোষ