Tag Archives: Tokyo Olympic 2020

Tokyo Olympics 2020: ২০০৮-র পর ১৩ বছর পার অলিম্পিক্সের মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীত, দেখুন শিহরণ জাগানো দুই মুহূর্ত

#টোকিও: ভারতের জন্য শনিবার ৭ অগাস্ট গৌরবের দিন৷ পাশাপাশি সেটা খুশিতে ভরা৷ পুরো দেশ অধীর আগ্রহে যে মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিল সেই মুহূর্ত এল৷ টোকিও অলিম্পিক্স (Tokyo Olympics) জ্যাভলিন থ্রোতে নীরজ চোপড়া  (Neeraj Chopra)  ইতিহাস তৈরি করলেন৷ ১০০ বছরে প্রথমবার ভারত থেকে কেউ অ্যাথলেটিক্সে (ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে) পদক জয় করল৷ পাশাপাশি এদিনের এই মুহূর্তে আরও বিশেষ হল কারণ ১৩ বছর বাদে অলিম্পিক্সে মঞ্চে বাজল জাতীয় সঙ্গীত৷

হরিয়ানার পানিপথের বাসিন্দা আর্মি ম্যান নীরজ চোপড়া জ্যাভলিন থ্রো (Javelin Throw)  তে সোনা জিতল৷ এটা টোকিও অলিম্পিক্সে ভারতের প্রথম ব্যক্তিগত ইভেন্টে ওভারঅল দ্বিতীয় সোনার পদক৷ এঁর আগে বেজিং এ অভিনব বিন্দ্রা  (Abhinav Bindra) ২০০৮ সালে অলিম্পিক্সে সোনা জিতে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন৷ যা ভারতের হয়ে প্রথম ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা ছিল৷

এবার যখন ভারতীয় অ্যাথলিটরা একের পর এক পদক জিতছিলেন তখন সমস্ত দেশবাসীরা সকলেই চাইছিলেন দেড়শো কোটির দেশে সোনা আসুক৷ শনিবারের বারবেলায় নিজের অতি চমৎকার পারফরম্যান্সে দেশের মানুষের ইচ্ছা পূরণ করলেন৷

নীরজ চোপড়া অ্যাথলেটিক্সে অলিম্পিক পদক জয়ী  প্রথম খেলোয়াড় হলেন৷ নীরজ চোপড়া ফাইনালে ৮৭.৫৮  মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুঁড়েছিলেন৷ আর তাতেই সোনা নিশ্চিত হয়ে যায় তাঁর৷ ফাইনালে কোনও অ্যাথলিট নীরজ চোপড়া (Neeraj chopra javelin thrower) কাছারাছিও ছুঁড়তে পারেননি৷ নীরজ চোপড়া একমাত্র যে ৮৭ মিটারের বেশি ছুঁড়েছিল৷ চেক প্রজাতন্ত্রের দুই খেলোয়াড় রূপো ও ব্রোঞ্জ পান৷

ভারতীয় সেনায় কর্মরত নীরজ অলিম্পিক্সের শুরুতেই পদকের দাবিদার মনে করা হচ্ছিল৷ ২৩ বছরের অ্যাথলিট নিজের প্রত্যাশা পূরণে পুরোপুরি সফল৷ যোগ্যতা অর্জন পর্বে নিজের প্রথম অ্যাটেম্পটে ৮৬.৫৯ ছুঁড়েছিলেন তিনি৷ তিনি গ্রুপ থেকে শীর্ষে থেকে ফাইনালে পৌঁছেছিলেন৷ ফাইনালে প্রথমবারেই ৮৭.০৩ মিটার ছুঁড়ে প্রথম স্থান ধরে রেখেছিলেন তিনি৷ ভারত একশ বছর প্রথমবার অ্যাথলেটিক্সে অংশ নিয়েছিল আর তারপর ২০১৬ অবধি কখনও এই বিভাগে পদক পায়নি৷

Tokyo Olympics 2020: ব্রোঞ্জেই খুশি হতে হবে ভারতীয়দের, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কাছে লড়ে হার Lovlina Borgohain

#অসম: টোকিও অলিম্পিক্সের সেমিফাইনালে অসমের ছোট্ট গ্রামের মেয়ে লাভলীনা৷ কিন্তু সেমিফাইনালে বিশ্বের এক নম্বরের কাছে ৫-০ তে হারলেন তিনি৷ খেলার ফল ৩০-২৬, ৩০-২৫, ৩০-২৫, ৩০-২৫, ৩০-২৫ এ৷ বুসেনাজ সুরমেনেলি এদিন রিংয়ে কার্যত অপ্রতিরোধ্য ছিলেন৷ তবুও অসমের তরুণী লড়াই করেন কিন্তু বুসানেজের কাছে পৌঁছতে আরও বেশি স্ট্র্যাটেজিক ও আগ্রাসী হতে হত৷

এদিকে লাভলিনার রিংয়ের লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছে সকলেই অনুরাগ ঠাকুর লিখেছেন নিজের সেরাটা দিয়েছেন লাভলিনা৷

এদিকে আগেই ইতিহাস তৈরি করে ফেলেছেন পদক নিশ্চিত করে সেমিফাইনালে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই, এবার আরও বড় চ্যালেঞ্জ৷ টোকিও অলিম্পিক্সের (Tokyo Olympics 2020) ৬৯ কেজি বিভাগে তাঁর প্রতিপক্ষ বর্তমানের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বুসেনাজ সুরমেনেলি (Busenaz Surmeneli)৷ অলিম্পিক্সে পদক নিশ্চিত করা লাভলিনা এই মুহূর্তে প্রতিপক্ষ কে তা নিয়ে ভাবতে চান না, তিনি চাইছেন এই মেগা সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে৷ ২০০৮ সালে বিজেন্দর সিং . ২০১২ সালে মেরিকম ইতিমধ্যেই বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন৷ লাভলীনার পদক ৯ বছরে অলিম্পিক্সের মঞ্চে বক্সিংয়ে ভারতের প্রথম পদক হবে৷ তবে ফাইনালে পৌঁছনোর লক্ষ্য এই অসমিয়া তরুণী দেখছেন যা আজ অবধি কোনও ভারতীয় বক্সার করতে পারেননি৷ কিন্তু সেই লাভলীনাও  ব্রোঞ্জেই সন্তুষ্ট রইলেন৷ এদিকে লাভলীনার ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচার দেখতে অসম বিধানসভার কাজ স্থগিত রাখা হয়েছিল ২০ মিনিটের জন্য৷

এদিকে লাভলীনার বাবা জানিয়েছিলেন তিনি মেয়ের ঐতিহাসিক সেমিফাইনাল ম্যাচ দেখবেন না৷ অসম বিধানসভা স্থগিত রাখার বিষয়ে জানিয়েছেন মন্ত্রী পীযূষ হজারিকা৷ সমস্ত বিধায়ক যাতে বক্সিং রিংয়ে লাভলীনার লড়াইয়ের সাক্ষী হতে পারেন৷ এদিকে এর আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব লাভলীনার সাফল্য কামনায় পুজোর আয়োজন করেছিলেন৷

পুজো আয়োজিত হয়েছিল নেহেরু স্টেডিয়ামে, প্রদীপ জ্বেলে হয়েছিল পুজো, এছাড়া প্রদেশের বিভিন্ন মন্দির, মসজিদ ও চার্চেও লাভলীনার জন্য প্রার্থনা করা হয়৷  কারণ লাভলীনা অসমের প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে পদক জিতবেন৷

২৩ বছরের লাভলীনা অলিম্পিক্সে এখনও অবধি নিজের সহজাত খেলা ধরে রেখেই একের পর এক বাধা টপকেছেন৷ তিনি এবছরেই অনুর্ধ্ব ২৩ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সোনা জিতেছেন৷

Tokyo Olympics 2020: India vs Belgium: অলিম্পিক্স সেমিফাইনালে হকিতে কাঁটায় কাঁটায় টক্করেও হার, এবার লক্ষ্য ব্রোঞ্জ মেডেল ম্যাচ

#টোকিও: সোমবার সকাল থেকেই  টিভি ও মোবাইল স্ক্রিনে চোখ লাগিয়ে বসেছিলেন ভারতীয় হকি ফ্যানরা৷ ৪১ বছর বাদে দেশ অলিম্পক্সের সেমিফাইনালে (semifinal)! কিন্তু পেনাল্টি বক্সে ডিফেন্সের ভুলে গাদা গাদা পেনাল্টি কর্নার পায় বেলজিয়াম দল (India vs Belgium) আর তারই হাত ধরে সেমিফাইনালে ৫-২ গোলে ভারতকে হারিয়ে টোকিও অলিম্পিক্সের (Tokyo Olympics 2020) ফাইনালে পৌঁছে গেল বেলজিয়াম৷ ভারতকে এবার খেলতে হবে ব্রোঞ্জ মেডেলের লক্ষ্যে৷

এদিন শুরুর প্রায় দু মিনিটের মধ্যেই প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় বেলজিয়াম৷ যদিও দেরি করেনি ভারত হরমনপ্রীতের গোলে সমতা ফেরায়৷ এর আট মিনিটের মধ্যে ফের গোল৷ এবার গোল করেন টিম ইন্ডিয়ার মনদীপ সিং৷ বিশ্ব মঞ্চে বিশ্বমানের প্রদর্শন এই তরুণের৷ ২-১ এগিয়ে প্রথম কোয়ার্টার শেষ করে ভারত৷

এরপর একের পর এক পেনাল্ট কর্নার পেতে থাকে বেলজিয়াম৷ গোলের নিচে পুরো টুর্নামেন্টের মতোই এদিনও শ্রীজেশের দক্ষতা অতুলনীয়৷ তবে নিজের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে নিজেদের পঞ্চম পেনাল্টি কর্নারে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায় তারা৷

তৃতীয় কোয়ার্টারে দুই দলই গোলের জন্য একের পর এক আক্রমণ শানায় কিন্তু গোলমুখ খুঁজে পায়নি কোনও পক্ষই৷ চতুর্থ কোয়ার্টারে বেলজিয়াম পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে ফের এগিয়ে যায়৷ চতুর্থ কোয়ার্টারের সাত মিনিট বাকি থাকতে এবার পেনাল্টি পায় বেলজিয়াম৷ ফলে ফের একটি গোল৷ ৪-২ গোলে পিছিয়ে যায় ভারত৷ খেলার একদম শেষ মিনিটে আরও একটা গোল করে বেলজিয়াম৷ খেলার ফল দাঁড়ায় ৫-২৷  সেখান থেকে আর ফিরতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া৷ এবার ভারতের লক্ষ্য হবে ব্রোঞ্জ মেডেল ম্যাচ জিতে হকিতে মেডেল খরা কাটানো৷

ভারতীয় পুরুষ হকি দল টোকিও অলিম্পিক্সে (Tokyo Olympics) সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল৷ ১৯৮০ -র পর এবারই প্রথম ভারতীয় পুরুষ হকি দল শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে৷ দল কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জেতে৷ ভারতীয় পুরুষ হকি দল সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই নেমেছিল৷

অলিম্পিক্সে ইতিহাস তৈরি করেছিল ভারতীয় হকি দল৷ ১১ মেডেল জিতে আসে৷ ৮ টি সোনা জিতেছিল তারা৷ ১৯২৮, ১৯৩২, ১৯৩৬, ১৯৪৮, ১৯৫২, ১৯৫৬, ১৯৬৪, এবং ১৯৮০ সালে সোনা পায়৷ এছাড়া ১৯৬০ সালে রুপোর মেডেল পায় হকি দল৷ ১৯৬৮, ১৯৭২ সালে ব্রোঞ্জও পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া৷ কিন্তু গত ৪১ বছরে কোনও মেডেল আসেনি অলিম্পিক্স থেকে৷ ভারতীয় দল এই লম্বা মেডেল খরা এবার শেষ করতে বদ্ধপরিকর৷ টোকিও ভারত এখনও অবধি ৬ টি ম্যাচ খেলেছে এবং ৫ টি জিতেছে৷ একটি ম্যাচ তারা হেরেছে সেটা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে৷ এদিনের জয় পরপর চারটি ম্যাচ জিতল তারা৷

এদিকে বেলজিয়ামের কথা বললে তারা এখনও অবধি হকি অলিম্পিক্সে কখনও সোনার পদক জেতেনি৷ তাঁরা দুটি মেডেল পেয়েছে, ২০১৬ তে রিও অলিম্পিক্সে রুপো পেয়েছে এবং ১৯২০ তে তারা ব্রোঞ্জ জিতেছিল৷ তবে এবারের অলিম্পিক্সে তারা একটিও ম্যাচ হারেনি বেলজিয়াম৷ ৬টি ম্যাচের ৫ টি ম্যাচ জিতেছে তারা, একটি ড্র করেছে৷ কিন্তু অলিম্পিক্স মেডেলের হিসেবে ভারতীয় হকি দল বহুগুণে এগিয়ে আছে পুরনো পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে৷ ব্রিটেন , বেলজিয়ামের সঙ্গে ২-২ ড্র করেছিল৷ সেই ব্রিটেনকে হারিয়েই শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে ভারতীয় হকি দল৷