ঝাড়গ্রাম : “স্বাভাবিক গতিতে চালালে গাড়ি সুস্থ শরীরের ফিরবে বাড়ি”। “ফোন করতে করতে চালান যদি গাড়ি, তাহলে আপনি নাও ফিরতে পারেন বাড়ি”। মানুষের জীবন রক্ষা এবং তাদেরকে সচেতন করার লক্ষ্যে এবার বিশ্বকর্মা পূজার মন্ডপেও ফুটে উঠল রাজ্য সরকারের সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচি বার্তা । পুরো পুজো মণ্ডপ জুড়েই পথ নিরাপত্তার একাধিক বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা পেট্রলপাম্প সংলগ্ন সাবিত্রী সিনেমা হল মোড় মিনি গাড়ি স্ট্যান্ডের বিশ্বকর্মা পুজোয়। এই বছর এই পুজো ১৯ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে পুজোর উদ্বোধন করেন ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডি, উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা পুজো কমিটির সভাপতি বিদ্যুৎ ঘোষ সহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন: আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্বকর্মা পুজোতে এ কী থিম? মুহূর্তে ভাইরাল, দেখুন
জানা গিয়েছে, গাড়ির চালকদের প্রতিমুহূর্তে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গাড়ি নিয়ে যেতে হয়। সামান্য ভুল ত্রুটি হলেই ঘটতে পারে বড় বিপত্তি । কারওহয়তো জীবনের বাতি নিভে যেতে পারে। সেই জায়গায় সমস্ত চালককে এবং পথ চলতি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচিকেই হাতিয়ার করেছে বিশ্বকর্মা পুজোর উদ্যোক্তারা। সাবিত্রী সিনেমা হল মোড় মিনি গাড়ি স্ট্যান্ড এর সভাপতি বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন,” পণ্যবাহী গাড়ি হোক বা যাত্রীবাহী গাড়ি সব সময় চালককে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দৌড়াতে হয়। চালকের মাথার উপর থাকে নিজের নিরাপত্তার পাশাপাশি গাড়িতে থাকা যাত্রীদের। চালকের একটু ভুল হলেই ঘটতে পারে বড় বিপত্তি। তাই বিশ্বকর্মা পুজোয় গাড়ির চালকদের এবং পথ চলতি সকল সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্যই আমাদের এই ভাবনা চিন্তা।
আরও পড়ুন: বাড়তি সতর্কতা! আবহাওয়ার উন্নতি হতেই ব্যস্ত কুমোরপাড়া
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচিকে মাথায় রেখেই মন্ডপ প্রাঙ্গণে ফেস্টুন এবং ব্যানারের মাধ্যমে পথ নিরাপত্তার বিষয়টি সকলের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। চালকদের একটু সামান্য ভুলে ঘটে যেতে পারে বড় বিপত্তি। তাই নিজেদেরকে প্রতি মুহূর্তে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অবগত রাখতে এবং সাধারণ মানুষকে পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করতে বিশ্বকর্মা পূজোয় উদ্যোক্তাদের এই ভাবনা-চিন্তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনেও।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
বুদ্ধদেব বেরা
যন্ত্রের দেবতা বিশ্বকর্মা৷ প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর আরাধনা হয়৷ মূলত কল কারখানা বা যেখানে যন্ত্র নির্ভর কাজ হয়, সেখানে এই পুজো হলেও বিভিন্ন মন্দিরে, পাড়ায় এই পুজোর রীতি রয়েছে৷
বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটিকে বিশেষ শুভ বলে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন, এমন ব্যক্তিরাও পালন করুন দিনটি।
লেক কালী বাড়িতেতে হল বিশ্বকর্মা পুজো৷ আরতি ও পুষ্পাঞ্জলীতে ভক্তদের ভিড় ছিল। যেহেতু এই পুজোর দিনে যানবাহন পুজোর চল রয়েছে তাই লেক কালীবাড়ির সামনে গাড়ির ভিড় ছিল৷ মন্দির প্রাঙ্গণে হল গাড়ি পুজোর পর্ব।
এবছর লেক কালীবাড়ির বিশ্বকর্মা পুজো ২২ বছরে পড়ল৷ পুজোতে উপস্থিত ছিলেন প্রধান সেবাই চন্দ্র বসু।
এর আগে লেক কালীবাড়ির দুর্গাপুজোর কাঠামো পুজো হয় জন্মাষ্টমীর দিন। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এই পুজো অনুষ্ঠান করেন সেবাইত শ্রী নিতাই চন্দ্র বসু।
গত ৩ বছর ধরে লেক কালীবাড়ির উল্টো দিকের মাঠে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। এর আগে ১০ বছর পুজো হত মূল মন্দিরের ভিতরে।
বিশ্বকর্মা পুজোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ভগবান বিশ্বকর্মাকে দেবতাদের স্থপতি বলা হয়। বলা যায় ভগবান বিশ্বকর্মাও পৃথিবীর প্রথম প্রকৌশলী। ভাদ্রপদ মাসে, যখন সূর্য দেবতা কন্যা রাশিতে প্রবেশ করেন, সেই সময়ে বিশ্বকর্মার জন্ম হয়। তাই বিশ্বকর্মা জয়ন্তীর উৎসব প্রতি বছর সূর্য ট্রানজিটের দিনে পালিত হয়।
রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো৷ প্রতিবছর বিশ্বকর্মা পুজো শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট তারিখে পালিত হয়। প্রতি বছর ১৭ই সেপ্টেম্বর সারাদেশে ধুমধাম করে পালিত হয়।
পণ্ডিত কমলেশ ব্যাস বলেছেন যে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সূর্য কন্যা রাশিতে প্রবেশ করবে ০৭:৪৭ মিনিটে।
সন্ধ্যায় বিশ্বকর্মার পূজা হয় না। এই বছর বিশ্বকর্মা পুজোর উৎসব অর্থাৎ বিশ্বকর্মা জয়ন্তী পালিত হবে ১৭ সেপ্টেম্বর। এই দিনে, বিশ্বকর্মার পুজোর শুভ সময় হল সকাল ১১:০৮ থেকে ০১:৪৩ পর্যন্ত।
পণ্ডিত কমলেশ ব্যাস বলেন, বিশ্বকর্মা জয়ন্তীর দিন সকালে পুজো করলে উপকার হয়৷ এবং বিশ্বকর্মার পুজো নিষ্ঠাভরে করলে অর্থের অভাব হয় না এবং পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে৷
বিশ্বকর্মা পুজোর পর হাতে ফুল ও অক্ষত নিন। ভগবান বিশ্বকর্মাকে উত্সর্গীকৃত মন্ত্রগুলি তিন বা চারবার জপ করুন। এরপরে, আপনার হাতে উপস্থিত অক্ষতটি বাড়ির চার দিকে ছিটিয়ে দিন। বাড়িতে ইতিবাচকতা থাকবে এবং পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হতে শুরু করবে।
রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো৷ প্রতিবছর বিশ্বকর্মা পুজো শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট তারিখে পালিত হয়। প্রতি বছর ১৭ই সেপ্টেম্বর সারাদেশে ধুমধাম করে পালিত হয়।
বিশ্বকর্মা পূজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ভগবান বিশ্বকর্মাকে দেবতাদের স্থপতি বলা হয়। বলা যায় ভগবান বিশ্বকর্মাও পৃথিবীর প্রথম প্রকৌশলী। জেনে নিন দেওঘরের জ্যোতিষীর কাছ থেকে। কোন উপায়ে ভগবান বিশ্বকর্মার পুজো করলে দ্বিগুন লাভবান হওয়া যায়, তা জেনে নিন৷
দেওঘরের বিখ্যাত জ্যোতিষী পণ্ডিত নন্দকিশোর মুদগাল জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বিশ্বকর্মা পুজোর উৎসব পালিত হয়। এই উৎসবের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই দিনে মেশিন, যানবাহন ও কলকারখানার পুজো করা হয়।
পুজোর দিন সম্পূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে করতে হবে। এই দিনে স্নান করে পবিত্র করার জন্য উপাসনালয়ে গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিন। একটি প্ল্যাটফর্মে একটি হলুদ কাপড় বিছিয়ে লাল রঙের কুমকুম দিয়ে একটি স্বস্তিক প্রতীক তৈরি করুন। গণেশকে মনে মনে স্মরণ করুন।
এরপর ষোদপুচার পদ্ধতিতে পুজো করুন। এই পদ্ধতিতে পুজো করলে ভগবান বিশ্বকর্মা খুব খুশি হন এবং সব কাজে উন্নতি হয়। বিশ্বকর্মা তুষ্ট হলেই কাটবে আর্থিক সঙ্কট, ঘরে থাকবে সুখ-শান্তি৷
সুপারি, রোলি, হলুদ অশ্বগন্ধা, হলুদ, লবঙ্গ, মৌলি, কাঠের পদ, হলুদ কাপড়, মাটির পাত্র, নবগ্রহ, পবিত্র সুতো, এলাচ, সুগন্ধি, শুকনো নারকেল, নারকেল, ভগবান বিশ্বকর্মা পূজার জন্য ধূপকাঠি, অক্ষত ফল, মিষ্টি, কর্পূর, দেশি ঘি, হবন কুণ্ড, আম কাঠ, দই, ফুল এবং শসা অবশ্যই পুজোর সময় রাখবেন।
বিশ্বকর্মা প্রযুক্তির দেবতা৷ প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো হয়। এই দিনে, প্রতিটি কারখানা ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত অফিসে বিশ্বকর্মার আরাধনা করা হয়৷ এই দিনে কর্মরত শ্রমিকরা কাজ করেন না, দিনভর ব্যবহার না করে বিশ্বকর্মার বন্দনায় ব্যস্ত থাকেন৷ এই দিনে কারখানার সমস্ত মেশিন ও যন্ত্রাংশের পুজো করা হয়।
বিশ্বকর্মা পুজো আসা মানেই দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। এই পূজার মূল উদ্দেশ্য ভগবান বিশ্বকর্মাকে উৎসর্গ করা। যাকে দেব শিল্পী বলা হয়।
২০২৪ সালের বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর, বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যা হয়, ৩১ ভাদ্র। দিনটি মঙ্গলবার৷
ভাদ্র সংক্রান্তির আগের দিন উনুনকে পুজো করা হবে ৷ তার পর সারারাত তাতে রান্না করা হবে কচুর শাক, চালকুমড়োর ঘণ্ট, মটর ডাল এবং চালতার টক ৷ সঙ্গে ইলিশ ও চিংড়ির পদ ৷ ভাত রান্না করে সারারাত জল ঢেলে ভিজিয়ে রাখা হবে ৷ কোনও খাবারেই পেঁয়াজ রসুন দেওয়া হবে না ৷ রান্নার পর ফ্রিজেও তোলা হবে না ৷ পান্তাভাত-সহ সব রান্না খাওয়া হবে পর দিন, অর্থাৎ ভাদ্র সংক্রান্তিতে বিশ্বকর্মা পুজোতে ৷ সে দিন উনুন ধরা বা ছোঁওয়া যাবে না ৷ যেমন উনুন, পড়ে থাকবে তেমনই ৷ তার পরের দিন উনুন আবার ফিরবে চেনা ব্যস্ততায় ৷ এরই নাম রান্নাপুজো বা অরন্ধন। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিনই এটি পালিত হওয়ার নিয়ম।
দিনটি বিশুদ্ধ সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়। পূর্ব ভারতের রাজ্য যেমন ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে বিশ্বকর্মা দিবসে বিশ্বকর্মা পূজা হয়।
বিশ্বকর্মার পুজোর দিন ভাদ্র সংক্রান্তি অর্থাত্ ভাদ্র মাসের শেষ তারিখ। বিশ্বকর্মা পুজোর যে তারিখটি বাংলা পঞ্জিকা মতে বেরোয়, তা ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১৭ সেপ্টেম্বরেই পড়ে।
বিশ্বকর্মা পুজোর তিথি স্থির করা হয়, সূর্যের গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। যখন সূর্য সিংহ থেকে কন্যা রাশিতে গমন করে, তখন উত্তরায়ণের সময় আসে।
বিশ্বকর্মা পুজো কন্যা সংক্রান্তিতে পড়ে। এই দিনটি সৌর বর্ষপঞ্জি এবং ভাদ্র মাসের শেষ দিন। এই ভাদ্র সংক্রান্তির আগেই বাংলা পঞ্জিকায় ৫ মাসের উল্লেখ মেলে, যার দিন সংখ্যা ১৫৬ দিন। তাই বিশ্বকর্মা পুজোর বাংলা তারিখ ইংরাজি ক্যালেন্ডারে ১৭ সেপ্টেম্বর পড়ে।
৫ মাসের মধ্যে যদি কোনও মাস ২৯ বা ৩২ দিন থাকে, সেক্ষেত্রে বিশ্বকর্মা পুজোর তারিখ এগিয়ে বা পিছিয়ে যায়। যেমনটা হয়েছিল গত বছর।
(Disclaimer: প্রতিবেদনের লেখা তথ্য News18 বাংলার নিজস্ব মত নয় ৷ সঠিক ফল পাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ )
বিশ্বকর্মা পুজো হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। এদিন বিভিন্ন মেশিন ও গাড়ির পুজো করার রীতিও প্রচলিত আছে। এখনকার দিনে আমরা প্রায় সবাই কোনও না কোনও মেশিন বা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করি।
কম্পিউটার, স্মার্টফোন, টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন আমাদের প্রায় সবার ঘরেই থাকে। বিশ্বকর্মা পুজোয় আপনি ব্যবহার করেন এমন সব মেশিনেরই পুজো করা উচিত। তা হলে এগুলি হঠাত্ খারাপ হয়ে গিয়ে আপনাকে বিপাকে ফেলবে না বলে মনে করা হয়। যাঁদের নিজস্ব গাড়ি আছে, বিশ্বকর্মা পুজোয় তাঁদের কয়েকটি কাজ অবশ্যই করা উচিত।
জ্যোতিষবীদ সুদীপ শাস্ত্রী জানাচ্ছেন, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন অবশ্যই নিজের গাড়ি পরিষ্কার করবেন। যদি নিজে পরিষ্কার করার সময় না পান, তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে, বা যেখানে গাড়ি ধোওয়া হয় সেখানে গিয়ে একদিন আগে গাড়ি পরিষ্কার করে নিন। আর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন একটা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে একবার গাড়ি ভাল করে মুছে নিন।
সবে যন্ত্রে বিশ্বকর্মার বাস। তাই তাঁর পুজোর দিন আপনার গাড়িরও পুজো করুন। গাড়ির ইঞ্জিনে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকুন। ফুল, মালা ও চাল নিবেদন করে পুজো করুন। লাল ও হলুদ সুতোয় একটি সুপারি জড়িয়ে নিয়ে সেটি হাতে নিয়ে আপনার গাড়িকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখার জন্য বিশ্বকর্মা দেবের কাছে প্রার্থনা করুন। এর ফলে আপনার গাড়িতে কোনও অশুভ প্রভাব পড়বে না বলে মনে করা হয়।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আপনার গাড়ি ভুলেও আর কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না। একে অশুভ বলে মনে করা হয়। এর ফলে গাড়ি নিয়ে নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হতে পারে আপনাকে।
মনে রাখবেন গাড়ির পুজো করার সময় ইঞ্জিন একবার স্টার্ট দিয়ে নেবেন এবং বিশ্বকর্মার কাছে গাড়ি ভাল রাখার জন্য প্রার্থনা করবেন। এর ফলে আপনার গাড়ি কখনও মাঝরাস্তায় বিগড়ে গিয়ে আপনাকে সমস্যার মধ্যে ফেলবে না বলে প্রচলিত বিশ্বাস।
হিন্দু ধর্মে ভগবান বিশ্বকর্মার একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ব্রহ্মা যখন এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছিলেন, তখন এটিকে সাজানো ও সুন্দর করার দায়িত্ব ভগবান বিশ্বকর্মার উপর অর্পিত হয়েছিল। এজন্য তাকে মহাবিশ্বের স্থপতিও বলা হয়। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, ভাদ্রপদ মাসে সূর্য দেবতা যখন কন্যা রাশিতে প্রবেশ করেন, তখন ভগবান বিশ্বকর্মার জন্ম হয়।
এ কারণে প্রতি বছর সূর্য কন্যা রাশিতে প্রবেশের দিন বিশ্বকর্মা জয়ন্তী উৎসব পালন করা হয়। এর পাশাপাশি জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে কিছু বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে তা আপনার জীবনে সুখ আনতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নেই এই ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে।
ভোপালের বাসিন্দা জ্যোতিষী পণ্ডিত যোগেশ চৌরে জানান, বিশ্বকর্মা জয়ন্তীর দিন সকালে পূজা করা অত্যন্ত উপকারী। যদি আপনার জীবনে অর্থের অভাব হয় বা পরিবারে শান্তির অভাব থাকে তবে এই দিনে ভগবান বিশ্বকর্মার বিশেষ ভাবে পূজা করা উচিত। এর জন্য সকালে স্নান করার পর সবার আগে বাড়ির মন্দিরে ভগবান বিশ্বকর্মার ছবি স্থাপন করুন।
তারপর বিশ্বকর্মার ছবির সামনে ঘট রাখুন এবং তা জল দিয়ে ভর্তি করুন। এরপর ভগবানকে অক্ষত ফল, ফুলের মালা, চন্দন, সুপারি এবং হলুদ সর্ষে অর্পণ করুন। এই পুজো যদি নিষ্ঠা মনে করা হয়, তাহলে শীঘ্রই সমস্ত ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ভগবান বিশ্বকর্মার পূজা করার আগে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করা আবশ্যক। এরপর ঘরের চার কোণে হলুদ সর্ষে ছিটিয়ে দিন। এই প্রতিকার ঘরের নেতিবাচক শক্তি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, পুজোর সময় বাড়ির প্রতিটি সদস্যের হাতে রক্ষা সূত্র বেঁধে দিন। ধর্মীয় বিশ্বাস আছে যে এই প্রতিকারের মাধ্যমে ধনলাভের পথে আসা সমস্ত বাধা দূর হয় এবং ঘরে সুখ শান্তি বজায় থাকে।
পুজোর পর হাতে ফুল ও অক্ষত নিন এবং ভগবান বিশ্বকর্মাকে উৎসর্গ করা মন্ত্রগুলি তিন থেকে চারবার জপ করুন। এর পরে, আপনার হাতে রাখা অক্ষতটি বাড়ির চার দিকে ছিটিয়ে দিন। এতে করে ঘরে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চালন হয় এবং পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে থাকে।
আর মাত্র কয়েকদিন, তারপরেই বিশ্বকর্মা পুজো৷ পুরীর কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষী ডক্টর গণেশ মিশ্রের মতে , এই বছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে দুটি শুভ যোগ তৈরি হবে। যা হবে সুকর্ম যোগ ও রবি যোগ। যেদিন কন্যা সংক্রান্তি হয় সেদিন বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।
এই দিনে ভগবান বিশ্বকর্মার পুজো করা হয়। বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষ্যে কলম, কালি, খাতা, যানবাহন ইত্যাদিরও পুজো হয় কারখানা ও দোকানে মেশিন, টুল ইত্যাদির। কোন সময় বিশ্বকর্মা পুজো করলে মনস্কামনা পূর্ণ হবে এবং পুজোর শুভ সময় কি? জেনে নিন জ্যোতিষীর কাছ থেকে৷
এই বছর কন্যা সংক্রান্তি ১৬ সেপ্টেম্বর, তাই বিশ্বকর্মা পুজো ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার পড়েছে। সেই দিন, সূর্য দেবতা কন্যা রাশিতে প্রবেশ করবেন।
এবার বিশ্বকর্মা পুজোয় দুটি শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে সুকর্ম যোগ ও রবি যোগ গঠিত হচ্ছে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সকাল থেকে ১১.৪২ পর্যন্ত সুকর্ম যোগ। এর পর ধৃতি যোগ গঠিত হবে। যেখানে রবি যোগ সন্ধ্যা ৪:৩৩ টায় শুরু হবে এবং এটি ১৭ সেপ্টেম্বর পরের দিন সকাল ৬:০৭ টা পর্যন্ত বৈধ থাকবে।
১৬ সেপ্টেম্বর সুকর্মা যোগে বিশ্বকর্মা পুজো করতে পারেন। শুভ সময় সকাল ৬.২৩ থেকে ৯.১৪ পর্যন্ত। সেই দিনের শুভ সময় বা অভিজিৎ মুহুর্তা হল সকাল ১১টা ৫১ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন, লাভ-উন্নতি মুহুর্তা সকাল ৬:২৩ AM থেকে ৭:৪৯ AM পর্যন্ত, তারপর অমৃত-সর্বোত্তম মুহুর্তা ৭:৪৯ AM থেকে ৯:১৪ AM পর্যন্ত। বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে ধনীষ্ঠা নক্ষত্র সকাল থেকে বিকাল ৪.৩৩ মিনিট পর্যন্ত থাকে, তারপরে শতভিষা নক্ষত্র। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে বিশ্বকর্মা পূজা করা একজন ব্যক্তিকে ব্যবসায় উন্নতি করতে সহায়তা করে। ভগবান বিশ্বকর্মার আশীর্বাদে ব্যবসায় উন্নতি হয়।
উত্তর ২৪ পরগনা: ১২ বছর ধরে চলে আসছে ট্রেন পুজো। শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও, এই পুজোর মধ্যে দিয়েই এলাকায় ঘটছে না, আর কোনও ট্রেন দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দু’বছরে পরপর এলাকার ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ট্রেনলাইনে। তারপর থেকেই এই দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি পেতে ১২ বছর আগে কদম্বগাছি এলাকার মানুষজন শুরু করেছিলেন অকাল বিশ্বকর্মা পুজো।
সেই থেকে এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। প্রতিবছরই বিশেষ দিনে হয় এই পুজো। সকালবেলা চলন্ত ট্রেন দাঁড় করিয়ে দুধ-গঙ্গা জল দিয়ে রেললাইন ধুয়ে দিয়ে, ট্রেনের গায়ে বেঁধে দেওয়া হল কলাগাছ। ফুলের মালা পড়িয়ে ফল মূল-সহযোগে ধূপ, ধুনো জ্বেলে শঙ্খ বাজিয়ে করা হল ট্রেন পুজো।
আরও পড়ুন- বলুন তো, স্ত্রী-রা কি রাখি পড়াতে পারেন স্বামীকে? ৯৯ শতাংশই ‘এই’ ভুলটা করেন, আপনিও কি তাই করছেন? আজই শুধরে নিন…
পাশাপাশি, ট্রেন লাইন পার্শ্বস্ত এলাকার মানুষদের ও যাত্রীদের মঙ্গল কামনা করা হয় পুজোর মধ্যে দিয়ে। কড়েয়া কদম্বগাছি রেল স্টেশন থেকে ৮ নম্বর রেলগেটের মাঝে এই ট্রেন লাইনকে তাই ভয় পেতেন এলাকার মানুষজন।
আরও পড়ুন- বিরাট ক্ষতিকর…! ‘তেলাপিয়া’ মাছ-ই ডেকে আনছে ভয়ঙ্কর বিপদ, যা বলছেন গবেষকরা, শুনলে আঁতকে উঠবেন
তবে এই অকাল বিশ্বকর্মা পুজোর পর থেকে আর ঘটছে না কোনও দুর্ঘটনা বলেই দাবি স্থানীয়দের। পুজো শেষে করা হয় প্রসাদ বিতরণ ও যাত্রীদের মিষ্টিমুখ। এদিনের এই বিশেষ ট্রেন পুজো দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন স্থানীয় এলাকার সব বয়সের মানুষজন।
Rudra Narayan Roy
Vishwakarma Puja 2024: বিশ্বকর্মা দিবস বা বিশ্বকর্মা জয়ন্তী বা বিশ্বকর্মা পুজোর মূল উদ্দেশ্য ভগবান বিশ্বকর্মাকে উৎসর্গ করা। যাকে দেব শিল্পী বলা হয়।
Vishwakarma Puja 2024: বিশ্বকর্মা দিবসে প্রতি বছর ভগবান বিশ্বকর্মার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৬ বা ১৭ সেপ্টেম্বর পালন করা হয়।
Vishwakarma Puja 2024: দিনটি বিশুদ্ধ সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়। পূর্ব ভারতের রাজ্য যেমন ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে বিশ্বকর্মা দিবসে বিশ্বকর্মা পুজো হয়।
Vishwakarma Puja 2024: সারা দেশের কারিগরদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিহার এবং উত্তরের কয়েকটি রাজ্যে দীপাবলির পরে উৎসবটি উদযাপিত হয়।
Vishwakarma Puja 2024: ২০২৪ সালের বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর, বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যা হয়, ৩১ ভাদ্র। দিনটি মঙ্গলবার৷
Just another WordPress site