মালদহ: দু’চোখেই দেখতে পায় না। রাইটার নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল আফরিদা পারভীন। চমকে দেওয়ার মত ফল করে সকলের মধ্যমণি এখন দৃষ্টিহীন এই মেয়ে। তার এই সাফল্যের সকলেই উচ্ছ্বসিত।
দৃষ্টিহীন হলেও কোনও ব্লাইন্ড স্কুলে পড়েনি আফরিদা পারভীন। সাধারণ স্কুলে আর পাঁচটা পড়ুয়ার সঙ্গে বসেই ক্লাস করেছে সে। সেখান থেকেই মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে আফরিদা। যদিও এই নম্বরে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় আফরিদা। তার বক্তব্য, আরও ভাল পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে প্রত্যাশার থেকে কম নম্বর পেয়েছে। মোট দুজন রাইটারের সাহায্য নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল বলে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: জল উঠছে নদী বাঁধের কাছে, আতঙ্কে সুন্দরবন
মালদহের ইংরেজবাজারের শোভানগর পঞ্চায়েতের মাদিয়া বাধাগাছ এলাকায় বাড়ি আফরিদার। বাবার নাম মহম্মদ পিয়ার আলি। আফরিদা জন্ম থেকেই সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তিহীন। দু’চোখেই দেখতে পায় না। তার কাছে গোটা জগৎটাই অন্ধকারময়। তাই চোখের অন্ধকার দূর করতে শিক্ষার আলোকে আলোকিত হয়ে ওঠার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে সে অধ্যাপিকা হতে চায়। যার প্রথম ধাপ হিসেবে এবছর শোভানগর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস বলেন, আমাদের স্কুলের গর্ব আফরিদা। শুধুমাত্র দৃষ্টিহীন নয়, অন্যান্য বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদেরও অনুপ্রেরণা। পড়াশোনার পাশাপাশি ভাল আবৃত্তি করে। বাবা মা তাকে স্কুলে দিয়ে যেত নিয়মিত।
দুজন রাইটারের সাহায্য নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। আফরিদা নজরকাড়া ফল করে। তার ঝুলিতে আসে ৫৬৪ নম্বর। আফরিদা ছোট বেলায় মঙ্গলবাড়ি আর পি রায় মেমোরিয়াল ব্লাইন্ড স্কুল থেকে পড়াশোনা করে। তারপর শোভানগর হাই স্কুল ভর্তি হয়। সেখান থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়।স্বভাবতই আফরিদার এই ফলাফলে বেজায় খুশি তার পরিবার সহ স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
হরষিত সিংহ