ছবি আঁকছেন তাপস

Famous Painter: কোভিডে চাকরি হারানো সাপে বর হয়েছে! মহামারীতে সব খাওয়ানো তাপস আজ বিখ্যাত চিত্রশিল্পী

শিলিগুড়ি: কোভিডের সময় আরও অনেকের মত চাকরি চলে গিয়েছিল তাপস চৌধুরীর। কিন্তু তারপর যা ঘটল সেটা অবিশ্বাস্য। এমনটাও হয়! চাকরি চলে যাওয়ায় অনেকে গত তিন বছরে আর সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। অনেক সচ্ছল পরিবার এই হঠাৎ আসা ধাক্কা সামলাতে না পেরে পরিবার কার্যত ভেসে গিয়েছে। কিন্তু মাটিগাড়ার বাসিন্দা তাপস চৌধুরীর জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে সেই চাকরি চলে যাওয়া। কার্যত মিরাকেল ঘটে গিয়েছে। কোভিডে চাকরি হারানো তাপসবাবু এখন শহরের একজন নামকরা চিত্রশিল্পী। তাঁর ছবি এখন দেশ-বিদেশে বিক্রি হয়। আন্তর্জাতিক স্তরেও তাঁর যথেষ্ট পরিচিতি তৈরি হয়েছে।

শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকায় বাড়ি তাপস চৌধুরীর। একটি কর্পোরেট সংস্থায় কাজ করে দিব্যি চলছিল সংসার। কিন্তু কাল হল কোভিড এসে। চাকরি চলে যায়। চাকরি হারিয়ে প্রথমটায় কী করবে বুঝে পাচ্ছিলেন না। বলতে গেলে হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন। একদিন সোফায় বসে বসে কাগজ-কলম নিয়ে তাপস’বাবু নিজের দিদির হুবহু ছবি এঁকে ফেলেন। সেটা দেখে দিদি খানিকটা আফসোস করেই বলেছিলেন, তুই কর্পোরেটে চাকরি না করে ছবি আঁকলে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতি।’ ব্যস এই কথাটাই মনে লেগে যায় তাঁর। তারপরই শিল্পী হওয়ার পথে যাত্রা শুরু।

আরও পড়ুন: বেতন পাচ্ছে না শ্রমিকরা, বকেয়া সমস্যায় বন্ধের মুখে আরও এক চা বাগান

তবে প্রথমটায় সবকিছু এত সহজ ছিল না। কারণ তাপস চৌধুরী কোন‌ওদিন প্রথাগত আঁকা শেখেননি। ফলে বাধ সাধল রং-তুলি ব্যবহারের প্রাথমিক জড়তা। তবে শিলিগুড়ির বেশ কিছু শিল্পীর সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়ে একটা পর্যায়ের জ্ঞান লাভের পর ছবি আঁকার পথে তিনি দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাওয়া শুরু করেন। সেই সময় আঁকা ছবিগুলো নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করলে ৮০ শতাংশ ছবিই বিক্রি হয়ে যায়। এরপর তিনি আর থেমে থাকেননি।

বর্তমানে তাপস চৌধুরী পোর্ট্রেট আর্টিস্ট হিসেবে বিখ্যাত হয়েছেন। পাশাপাশি ল্যান্ডস্কেপ, অবস্ট্রাক্ট সব ধরণের ছবিই আঁকেন। তাঁর আঁকা ছবির চাহিদা এমন যে বিদেশ থেকেও তাঁর কাছে অর্ডার আসছে ছবি আঁকার। তাপস বাবুর কথায়, আমি কোন‌ওদিনও ভাবিনি যে কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে ছবি আঁকা শুরু করব! আগামী দিনে আরও বেশ কিছু বড় পরিকল্পনা আছে এই শিল্পীর।

অনির্বাণ রায়