দক্ষিণবঙ্গ, বীরভূম Anubrata Mondal: বীরভূমের কেষ্ট মানেই শুধু চড়াম-চড়াম, গুড়-বাতাসা নয়! অনুব্রতর এই অজানা কথাগুলি শুনে চমকে উঠবেন Gallery September 25, 2024 Bangla Digital Desk অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। জেলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা তিনি। এতদিন পর্যন্ত জেলার লোকেরাই বলতেন, তাঁর নামে নাকি বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়। কিন্তু গোটা ছবিটাই বদলে গিয়েছিল ২০২২ সালে। বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যে জেলায় এতদিন অনুব্রতর নাম শুনলেই কাজ হয়ে যেত, সেই জেলার মাটিতে দাঁড়িয়েই একদিন তাঁকে গ্রেফতার হতে হয়েছিল। তবে কে এই অনুব্রত! হঠাৎ কী করে এত দাপট বেড়েছিল অনুব্রতর? সময়টা ছিল ১৯৯৮ সালে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে সব নেতারা কংগ্রেস ছেড়ে এসেছিলেন,সে তালিকায় নাম ছিল ‘কেষ্ট’র। রাজ্যে তখন বামেদের দাপট। তার মধ্যেই জেলায় একটু একটু করে সংগঠনকে শক্তিশালী করেন অনুব্রত। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে অনুব্রতও শক্তি বাড়ান। তবে ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের সময় বাংলা চিনেছিল বীরভূমের এই ‘বাহুবলী’ নেতাকে, যাঁর কাছে বিরোধীদের জন্য ভোটের ঢাকের বোল ছিল ‘চড়াম চড়াম’। স্টেজে তাঁর একটি ডায়লগ শোনার জন্য অপেক্ষা করতেন তাঁর কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা। জানা যায় ক্লাস এইট অবধি পড়াশোনা অনুব্রত মণ্ডলের। এরপর আর স্কুলমুখো হননি। পড়াশোনার প্রতি খুব একটা ইচ্ছে ছিল না অনুব্রতর। স্কুল ছেড়ে বসে পড়েন বাবার দোকানে। ছোট থেকেই গোলগাল চেহারা অনুব্রতর। অমন বিশাল চেহারা, গমগমে গলা। নজর এড়ায়নি সে সময় ক্ষমতার অলিন্দে থাকা কংগ্রেসের। নয়ের দশকের শুরুতে স্থানীয় এক যুব কংগ্রেস নেতার নজরে পড়েন অনুব্রত। সেখান থেকেই তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রীর সঙ্গে পরিচয় করানো। তবে দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ধরে অনুব্রত মণ্ডল ছিলেন তিহার জেলে বন্দী। মঙ্গলবার সকাল নটা নাগাদ স্বমহিমায় তিনি ফিরে এসেছেন বীরভূম। আর বীরভূমের সেই চেনা মাটি চেনা গন্ধ পেয়েই কার্যত আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। হেভিওয়েট সেই অনুব্রত বীরভূমে ফিরেছেন হেভি হালকা হয়ে। সূত্রের খবর, ১৮ মাসে ৩০ কিলো ওজন কমিয়ে বীরভূম ফিরেছেন অনুব্রত। প্রসঙ্গত, ১১ অগাস্ট মাঝরাতে অনুব্রতর বাড়ির পাশে রতন কুঠিতে গিয়ে ওঠেন এক দল সিবিআই আধিকারিক। ১০০-এর কাছাকাছি কেন্দ্রীয় জওয়ান। আর ১১ অগাস্ট ২০২২ সালে বোলপুরে নীচুপট্টি এলাকায় অনুব্রতর বাড়ি থেকে টেনে বের করে নিয়ে সোজা আসানসোল আদালত। ১০ দিনের সিবিআই হেফাজত। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তিহার জেলে। তিহার বন্দী থাকার সময় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেস দেখেছে অনেক উত্থানপতন। দীর্ঘ দু’বছর পর আবার পুরনো ছন্দে স্বমহিমায় ফিরে এসেছেন তিনি। তবে চেহারা আগের থেকে অনেকটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফিরে এই প্রথমে তিনি পুরো ফিল্মি স্টাইলে হাত নাড়িয়ে তাঁর কর্মী সমর্থকদের আশ্বাস দেন তিনি ফিরে এসেছেন। এরপরই তিনি তাঁর বাড়ির সেই চেনা চেয়ারে বসে উষ্ণ গরম চায়ে চুমুক দেন। তবে মঙ্গলবার তিনি সেই অর্থে কারও সঙ্গে দেখা করেননি। যে কয়েকজন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন তাঁরা একদম কাছের লোক। (রিপোর্টার– সৌভিক রায়)