তৈরি করে দেওয়া পাকা বাড়ি 

Bangla Video: সরকার নয়, মাথায় ছাদ দিলেন দুই প্রতিবেশী যুবক! অবাক কাণ্ড সাগরদিঘি’তে

মুর্শিদাবাদ: রয়েছে দুই ছেলে এক মেয়ে। কিন্তু মা ডাক শোনেনি ছেলে-মেয়ের মা। কারণ বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা। মাথার উপর একটা ছাদ রে নেই। না দিতে পেরেছে কেন্দ্র, না পেরেছে রাজ্য সরকার। আর সেটাকেই কপাল বলে মেনে নিয়েছিলেন সাগরদিঘির বাসিন্দা মুসা দেওয়ান। তিন সন্তানই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। তাদের মুখে খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা।

বারবার প্রশাসন কে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। তাই ভাঙাচোরা বাড়ি থেকে টোটো নিয়ে সকালে বেরিয়ে যাওয়া, বিকালে ফিরে এই গল্পটা বদলে দিলেন এলাকারই দুই যুবক সঞ্জীব দাস ও সাবির মণ্ডল। সাগরদিঘির ওসি বিজন রায়ের বিশেষ সহযোগিতায় ভাঙাচোরা মাটির বাড়ি ভেঙে পাকা বাড়ি করে দিলেন।

আরও পড়ুন: রায়মঙ্গলের পাড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে সুন্দরবনের শিশু উদ্যান

সাগরদিঘির জগদ্দলের মুসা দেওয়ান। পেশায় টোটো চালক। স্ত্রী সেলিনা ইয়াসমিন। তাঁদের তিনটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তান নিয়ে সংসার। বড় ছেলে ঈসান দেওয়ান বয়স ১২ বছর, মেয়ে মেহেক দেওয়ান বয়স ১০ বছর ও আনাস দেওয়ান বয়স ২ বছর। কোনও রকমে দু’মুঠো অন্ন জোটে সংসারে। এই পরিবারকে দেখে স্থানীয় যুবক সঞ্জীব ও সাবির নেমে পড়েন ময়দানে। চাঁদা তোলা শুরু করেন। নিতে থাকেন অনুদানও। যোগাযোগ করেন সাগরদিঘি থানার ওসি বিজন রায়ের সঙ্গে। দেওয়ান পরিবারের কথা জানতে পেরে সেখানে সটান হাজির হন ওসি। ভাঙা মাটির দেওয়াল, ছাদের খড় অধিকাংশ ঝড় বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই বাড়িতেই তিন প্রতিবন্ধী নাবালক সন্তানকে নিয়ে দেওয়ান দম্পতির অসহায়তার ছবি দেখে বিচলিত হয়ে পরেন তিনিও। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বাড়ি ফিরে যান। যুবক সঞ্জীব দাসের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন দেওয়ান দম্পতিকে বাসযোগ্য একটি বাড়ি গড়ে দেওয়ার। কিন্তু বাড়ি তৈরির দেখভাল স্থানীয় যুবকদের নিতে হবে।

বিজনবাবুর উৎসাহে সঞ্জীব ও তার বন্ধু সাবির মণ্ডল কোমর বেঁধে কাজে নেমে পড়েন। জেসিবি মেশিন দিয়ে ভেঙে ফেলা হয় তাদের বাড়ি। ইট, পাথর, রড, সিমেন্ট জোগাড় করে শুরু হয় বাড়ি তৈরির কাজ। মুসা দেওয়ান জানান, বহুবার পঞ্চায়েত ও বিডিও দফতরের আবেদন জানিয়েও গীতাঞ্জলি বা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি। সেখানে দেবদূতের মত পাড়ার দুই ছেলে ও ওসি এগিয়ে এসে পাকা বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন।

কৌশিক অধিকারী