প্রাচীন পুজো

Durga Puja 2024: কত স্মৃতি,কত গল্প…বহু ইতিহাসের সাক্ষী বারাসতের সাড়ে চারশো বছরের প্রাচীন এই পুজো

উত্তর ২৪ পরগনা: প্রায় ৪৫৩ বছরেরও বেশি প্রাচীন বারাসতের দক্ষিণপাড়ার শিবকুঠির দুর্গাপুজো। কথিত আছে, মোঘল সম্রাট আকবর ১২ ভুইঁয়াদের মধ্যে ১১ জনকে বশে এনেছিলেন। কিন্তু, যশোরের অধিপতি প্রতাপাদিত্যকে বাগে আনতে পারেননি। প্রতাপাদিত্যর প্রধান সেনাপতি ছিলেন সর্দার শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। মোঘল সম্রাটের উদ্দেশ্য ছিল  প্রতাপাদিত্যকে পরাস্ত করা। ছলে-বলে-কৌশলে রাজা প্রতাপাদিত্য ও শঙ্করকে বন্দি করে দিল্লি নিয়ে যান মোঘল-রা। সঙ্গে নিয়ে যান যশোরেশ্বরী কালীর মূর্তিও। বন্দি অবস্থায় প্রতাপাদিত্যের মৃত্যু হয়।ততদিনে আকবরেরও মৃত্যু হয়েছে। আকবর-পুত্র জাহাঙ্গিরের নির্দেশে শঙ্করের আমৃত্যু কারাবাসের সাজা হয়। বন্দি শঙ্কর সম্রাটের কাছে তর্পণ করার আর্জি জানান। সেই আবেদন নাকচ করে দেন আকবর পুত্র জাহাঙ্গির।

ব্যথিত শঙ্কর কারাগারেই আমরণ অনশন শুরু করেন। তখন, আকবরের স্ত্রী যোধাবাঈ-ও। মন্ত্র শুনে মুগ্ধ হন তিনিও। সেই রাতেই রাজমাতা স্বপ্নে দেখেন, তিনি দুর্গাপুজো করছেন। স্বপ্ন ভেঙে যেতেই তাঁর মনে পড়ে শঙ্করের কথা। কারাগারে গিয়ে তিনি শঙ্করকে দুর্গাপুজো করার নির্দেশ দেন। শিবের উপাসক শঙ্কর প্রথমে রাজি হননি। পরে তিনি পুজো করতে শুরু করেন। শঙ্করের পিতৃভিটে ছিল বারাসতে। শিবের উপাসক হয়েও তিনি দুর্গাপুজো করেছিলেন বলে এই পুজো শিবের কোঠার দুর্গাপুজো নামেই পরিচিত। আজও পুজোয় যোধাবাঈ-সহ এলাকার মানুষের মঙ্গলকামনায় হয় সংকল্পদান। পুজোর ক’দিন প্রতিদিনই বাড়িতে ভোগ হয়, কিন্তু দশমীর দিন ঊমা কৈলাশে ফেরেন পান্তা ভাত ও কচু শাক খেয়ে।

সন্ধ্যা হওয়ার আগেই দেবী প্রতিমা বিসর্জন দিতে হয়। বিসর্জন দিয়ে এসে সত্যনারায়ণের পুজো করে তবেই হয় বিজয়া দশমী। এমনটাই জানালেন চট্টোপাধ্যায় পরিবারের বর্তমান সদস্য মুকুল চট্টোপাধ্যায়। প্রাচীনকালের পুরনো কাঠামোতেই আজও হয় পুজো। আগে বলিদানের প্রথা ছিল। এখন তা বন্ধ হয়েছে।  জেলার প্রাচীন পূজাগুলির মধ্যে বারাসতের এই চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো অন্যতম।

Rudra Narayan Roy