জোরপাটকির শহীদবেদি

Lok Sabha Election 2024: ভোট মানেই জোরপাটকির কাছে আতঙ্ক, কেন্দ্রীয় বাহিনী যেন এখানে মূর্তিমান ‘যমদূত’!

কোচবিহার: ২১-এর বিধানসভা ভোটের তিন বছর পর এবার ২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। ১৯ এপ্রিল থেকে ভোট শুরু হয়ে যাবে দেশে। প্রথম দফাতেই নির্বাচন হবে বাংলার কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে। আবারও একটা ভোট আসতেই তিন বছর আগের স্মৃতি ভেসে উঠছে জোরপাটকির বুকে। সেই স্মৃতিতে শুধুই জড়িয়ে আছে কান্নার রেশ।

তিন বছর আগে এমনই এক ভোটে ছেলেকে হারিয়েছিলেন জোরপাটকির আমজাদ। সন্তান হারানোর সেই যন্ত্রণা আজও ভুলতে পারেন না। ২১-এর বিধানসভা ভোটে কোচবিহারে শীতলকুচির জোড়পাটকিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা আজ‌ও বড় দগদগে হয়ে বেঁধে মানুষগুলোর বুকে। সেদিনের স্মৃতি আওড়াতে গিয়ে গ্রামের একজন জানালেন, ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জোরপাটকি গ্রামের তিন যুবক। পাশের গ্রামের‌ও একজন ছিলেন। মূল ঝামেলাটা চলছিল বুথের থেকে কিছুটা দূরে। হঠাৎই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আর তারপরই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জ‌ওয়ানরা গুলি চালান। সঙ্গে সঙ্গে লুটিয়ে পড়েন চার যুবক।

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | Lok Sabha Election 2024 West Bengal

আর‌ও পড়ুন: মিনি টর্নেডো বিধ্বস্ত গ্রামে মেডিকেল ক্যাম্প, শিশুর চোখ থেকে বের হল পাথর

আবার একটা ভোট এসে পড়তেই সেই স্মৃতি খোঁচা দিচ্ছে এলাকার মানুষকে। কোচবিহারের জোরপাটকির ৫/১২৬ নম্বর ভোট গ্রহণ কেন্দ্র। এখানকার ভোটারদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, আবার তেমন কিছু ঘটবে না তো? নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে গিয়েছে সব জায়গায়। রাজ্যের অন্যত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখে মানুষ স্বস্তি পেলেও, জোরপাটকির ছবিটা কিছুটা ভিন্ন। এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দেখে আতঙ্কের স্মৃতি ফিরে আসছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।

সিআইএস‌এফ জ‌ওয়ানদের গুলিতে সেদিন জোড়পাটকির মণিরুজ্জামান, হামিদুল মিঞাঁ, ছামিয়ুল হক ও বোচাগারি গ্রামের নূর আলম মিঞার মৃত্যু হয়েছিল। মনিরুজ্জামানের বাবা আমজাদ হোসেন জানান, ভোট এলেই ছেলেকে হারানোর স্মৃতি বেশি করে মনে পড়ে। আর কারোর কোল যেন এইভাবে খালি না হয় সেই আর্জি রাখেন তিনি প্রশাসনের কাছে।

আর‌ও পড়ুন: স্কুলে যাওয়ার পথে অটো উল্টে গুরুতর জখম দুই শিক্ষক

গ্রামবাসীরা জানান, যে চার যুবকের সেই দিন মৃত্যু হয়েছিল তাঁরা কেউ সরাসরি কোন‌ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাঁদের ওই মর্মান্তিক পরিণতি সাধারণ ভোটারদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই ভয় দূর করার বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাতে জোরপাটকির মানুষ হয়ত ভোট দিতে যাবে, কিন্তু সঙ্গী হবে আতঙ্ক।

সার্থক পণ্ডিত