প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো

Pranab Mukherjee: তিনি নেই, মিরিটির বাড়ির পুজো হারিয়েছে জৌলুস! গ্রামজুড়ে শুধুই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির স্মৃতি

বীরভূম: বছর ঘুরে বাপের বাড়ি ফিরেছেন উমা। নিয়ম মেনে হবে পুজো। হবে মা দুর্গার চণ্ডীপাঠ। কিন্তু যাঁর চণ্ডীপাঠের জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন সবাই, বাড়ির সেই মানুষটাই নেই। ৫ বছর আগে সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন বাড়ির ছেলে।

প্রণব মুখোপাধ্যায় দেশের একমাত্র বাঙালি রাষ্ট্রপতির পুজোয় আজ বড় অভাব বাড়ির ছেলেটার। প্রসঙ্গত, ৮৪ বছর বয়সে ৩১ অগাস্ট ২০২০ সালে মারা যান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।

সময়টা ২০২০ সালের ৩১ অগাস্ট। খবরপিপাসু মানুষজন প্রত্যেকদিনের মতো বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের চ্যানেল টিভিতে চোখ রেখেছেন। হঠাৎ কোনও এক সংবাদমাধ্যমে ভেসে ওঠে প্রণব মুখোপাধ্যায় আর নেই।সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এই খবর জানতেই যেন ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবারের লোকজন। সেই থেকেই এই ভাবে তাঁকে ছাড়াই ৫ বছর পুজো হচ্ছে বীরভূমের মিরিটির মুখোপাধ্যায় ভবনে।

আরও পড়ুন: অনবরত গা চুলকাচ্ছে! কোন ভিটামিনের অভাবে গা-হাত-পা চুলকায় জানেন? বড় ক্ষতির আগে জানুন

পুজোর ৪ দিন হাজার ব্যস্ততার মাঝে তিনি কাটাতেন বাড়িতে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে মোতায়েন থাকত কয়েক হাজার পুলিশকর্মী। তবে সেসব আজ অতীত। একসময় নিষ্ঠার সঙ্গে পরিপাটি করে পুজোর চারদিন পুজো করতেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। পুজোর পাশাপাশি নিজেই চণ্ডীপাঠ করতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। আর তাঁর এই চণ্ডীপাঠ শুনতেই যেন কয়েক হাজার মানুষের ভিড় জমাতেন বাড়ির বাইরে।

আরও পড়ুন: বিশ্বের সেরা MBA কলেজে ভারতের কোন ১০ প্রতিষ্ঠান? IIM কলকাতা কত নম্বরে? দেখুন তালিকা

আজ থেকে কয়েক বছর আগের গল্প। পুজোর দু’মাস আগে থেকেই সেজে উঠত বাড়িরউঠোন, শুরু হত ভিআইপিদের আনাগোনা। রাষ্ট্রপতি আসবেন বলে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখা হত সকলের তরফ থেকে। পুজোর চারদিন গমগম করত কীর্ণাহারের এই মিরিটি বাড়ি।‌ বাড়ির ভিতরেই রয়েছে দুর্গা মন্দির। সেখানেই পুজো করতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পুজো এখনও হয়, তবে সেই জৌলুস আর কই! যাঁর চণ্ডীপাঠ শোনার জন্য গোটা একটা বছর অপেক্ষা করে থাকতেন গ্রামের মানুষ। তাঁকে ছাড়াই আজও হচ্ছে নিয়ম মেনে চণ্ডীপাঠ।

তবে সব মিলিয়ে পুরনো প্রথা মেনেই আজও পুজো হয়ে আসছে এই বাড়ি দুর্গা মন্দিরে। একসময় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কথা দিয়েছিলেন এই গ্রামের কেউ এই পুজোর চারদিন অভুক্ত থাকবেন না। বাবার সেই নির্দেশ আজও পালন করে চলেছেন তাঁর ছেলে। এখনও পর্যন্ত পুজোর চারদিন গ্রামের প্রত্যেকটা পুরুষ, মহিলা থেকে শুরু করে বাচ্চা সকলেই এসে এখানে অন্নভোজন করে থাকেন।

সৌভিক রায়