স্বামী স্ত্রী 

Success Story: মাল্টি-ন্যাশনালের চাকরি ছেড়ে ফল চাষ, স্ত্রীর বুদ্ধিতে কামাল!

পূর্ব বর্ধমান: চাকরি ছেড়ে স্ত্রীর বুদ্ধিতে শুরু করেন ফল চাষ। বর্তমানে সেই ফল চাষ করেই লাভবান হচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের এক যুবক। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-১ ব্লকের জাহান্নগর পঞ্চায়েতের মাধাইপুরের বাসিন্দা অমিতাভ ঘোষ। একসময় তিনি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তবে এখন ফল চাষ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন অমিতাভবাবু। তাঁর বাগানে রয়েছে মাল্টা, ড্রাগন ফ্রুট এবং কমলালেবুর গাছ। সবথেকে বেশি রয়েছে মাল্টা এবং ড্রাগন ফ্রুট। বাড়ির পাশেই বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে তিনি এইসকল ফলের চাষ শুরু করেছেন।

এই প্রসঙ্গে আমিতাভ ঘোষ বলেন, চাকরি করার সময় থেকেই নিজের কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল। পরবর্তীতে স্ত্রীর বুদ্ধিতে এই ফলগুলোর চাষ শুরু করেছেন। তাঁর মতে, প্রথাগত চাষ থেকে বেরিয়ে এসে যদি এই ধরনের চাষ করা যায় তাহলে ভাল টাকা উপার্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, এই চাষ থেকে তার যা উপার্জন হয় তা একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত।

আর‌ও পড়ুন: এবার আওয়াজ তুলল যুবসমাজ, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সামনে এল তাদের দাবি

তবে আমিতাভবাবু একা নয়, এই ফল চাষের কাজে তাঁকে সাহায্য করেন তার স্ত্রী কৃষ্ণা নন্দী ঘোষ। কৃষ্ণাদেবী একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি করেন। পাশাপাশি তিনি যেটুকু সময় পান সেই সময় স্বামীর এই কাজে সাহায্য করেন। এককথায় স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলেই ফলের বাগানের পরিচর্যা করে থাকেন। প্রথমে ১ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে এই ফল চাষ শুরু করেছিলেন অমিতাভবাবু।

এই চাষের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে অমিতাভবাবু জানান, ১ বিঘা জমিতে যদি মাল্টা চাষ করা হয় তাহলে প্রায় ৭০ টা মাল্টা গাছের চারা লাগবে। এক এক পিস চারা গাছের দাম পড়বে প্রায় ২৫০ টাকা। এছাড়াও লাগবে গাছ বসানোর জন্য শ্রমিক এবং প্রয়োজনীয় সার। পরবর্তিতে ফলন হলে এই মাল্টা বাজারে পিস হিসাবে বিক্রি করা হয়। বাজারে এক এক পিস মাল্টার দাম প্রায় ৭ টাকা। তবে বিভিন্ন জায়গায় কেজি হিসেবেও মাল্টা বিক্রি হয়ে থাকে। অন্যদিকে আমিতাভবাবুর কাছে জানা গিয়েছে, ১ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফ্রুট চাষ করলে জমিতে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টা পিলার বসাতে হয়। এক একটি পিলারে চারটে করে গাছ ধরে। আর এই ড্রাগন ফ্রুট গাছের দাম পড়ে নূন্যতম ৫০ টাকা। তবে ভাল প্রজাতির ড্রাগন ফ্রুটের দাম আরেকটু বেশি হয়।

বাজারে ১ পাল্লা ড্রাগন ফ্রুটের দাম প্রায় ১১০০ টাকা। তবে শুধু মাল্টা এবং ড্রাগন ফ্রুট নয়, আমিতাভবাবুর বাগানে কমলালেবু, কাঁঠাল সহ বেশ কিছু আম গাছও রয়েছে। এই চাষের জন্য সকাল থেকে দীর্ঘ পরিশ্রম করতে হয়। তবে পরিশ্রম হলেও চাকরি করার থেকে ফল চাষ করে তিনি অনেক আনন্দে রয়েছেন। তাঁর কথায়, ফল চাষ থেকে যে টাকা উপার্জন হয় তা একটা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অনেক। স্ত্রীর বুদ্ধিতে ফল চাষ শুরু করে আজ অনেকটা সাফল্য অর্জন করতে পেরেছেন পূর্বস্থলীর মধাইপুরের আমিতাভ ঘোষ।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী