পূর্ব বর্ধমান: বর্তমানে অজগর বা পাইথন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে যেন একটি আতঙ্কের নাম। আউশগ্রামের জঙ্গলে বাড়ছে পাইথন এর সংখ্যা, জঙ্গলময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পাইথন। বেশ কিছু বাড়িতে অজগর ঢুকে হাঁস, মুরগি গিলে খাওয়ার খবরও শোনা গিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন গ্রামবাসীরা।
বন দফতরের দাবি, আউশগ্রামে পাইথনের করিডর করে ফেলেছে৷ আউশগ্রাম অঞ্চলের বাগড়াই ক্যানেল ধরে পাইথন আসছে৷ পাশাপাশি তারা ওই এলাকায় কুনুর নদীও পাচ্ছে৷ তাই দুই জলাশয় ধরে আসছে৷ রামচন্দ্রপুর, পূর্বতটি, প্রতাপপুর এসব গ্রামগুলিই পাইথনের মূল রুট৷ এমনকি আলেফনগর গ্রামেও পাইথন হানা দিচ্ছে৷ এরা মূলত জলাশয় থেকে গ্রামে ঢুকছে রোদ পোহানোর জন্য আর শিকারের সন্ধানে৷
আরও পড়ুন: মাত্র কয়েক মিনিটের টর্নেডোর মতো ভয়াল ঝড়! লন্ডভন্ড হুগলির একের পর এক গ্রাম
আউশগ্রাম বিট অফিসার হিমাংশু মণ্ডল জানিয়েছেন, আউশগ্রামে পাইথন বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ ডিভিসির ক্যানেলের জল আর কুনুর নদীর জল৷ বাগড়াই ক্যানেলের পাড়ে বেশি পাইথন দেখা যায়। বাগড়াই পাইথন জোন হিসাবে পরিণত হয়েছে৷ কয়েক দিন আগে দেখা গিয়েছিল বাঁশঝাড়ের ডগায় পাইথন উঠে বসে আছে৷ আমরা বাঁশ কেটে নামিয়েছি। মূলত গ্রামীণ এলাকায় বিশালাকার পাইথন হাঁস মুরগির লোভেই আসছে৷ মানুষ ভয় পেয়ে যাচ্ছেন, আমরা রাত হলেও খবর পেলেই পাইথন উদ্ধার করে আবার গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসি৷
আরও পড়ুন: ১৪ লাখের চাকরি, ৬০০ বর্গ গজ জমি… বড় পুরস্কার পাচ্ছেন সিরাজ, কে দিচ্ছে জানেন?
৩০ জুলাই পূর্বতটী গ্রামে পাইথন হানা দিয়েছিল৷ তাছাড়া ১৭ জুলাই আলেফনগরে হানা দিয়েছিল পাইথন। আউশগ্রামের বাসিন্দা নরেন মাণ্ডি বলেন, “আমাদেরও আতঙ্কে থাকতে হয়৷ জঙ্গলে পাতা কুড়াতে যেতেও ভয় লাগে৷ বাড়িতে হাঁস, মুরগির ঘরের ভিতরে কখন যে অজগর ঢুকে ঘাপটি মেরে থাকছে তা বুঝতে পারছি না”৷
বর্ষায় দামোদরের ক্যানেল বা কুনুর নদীতে জল বাড়ছে৷ আর এই সময় পাইথনের দেখা মিলছে বেশি৷ জানা গিয়েছে, এক বছরে আউশগ্রামে ৩২ টি পাইথন উদ্ধার করেছে বন দফতর। সেগুলি উদ্ধার করে পরবর্তীতে আবার গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ আউশগ্রামের জঙ্গলে পাইথনের সংখ্যা রীতিমতো বাড়ছে৷ আউশগ্রাম এলাকায় যে সব পাইথন দেখা যাচ্ছে তার বেশির ভাগই ৭ থেকে ৮ ফুট লম্বা৷ আর প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের।