কলকাতা: সকালের নাস্তা হোক বা বিকেলের টিফিন চায়ের সঙ্গে এক টুকরো কেক অনেকেরই পছন্দ। এছাড়াও জন্মদিন, বিয়েবাড়ি বা যে কোনও উৎসব অনুষ্ঠানে কেকের জনপ্রিয়তার জুরি মেলা ভার। তবে বড়দিনের ব্যাপারটাই আলাদা। এই সময় প্রত্যেকেরই অন্তত এক টুকরো কেক চাইই চাই। আর তাই এই সময়টা কেকের চাহিদা থাকে প্রচুর।

আর এই চাহিদা মেটাতে বেকারি সংস্থাগুলি উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় বহুগুন। কেক কোম্পানির পাশাপাশি বহু প্রতিষ্ঠান বছরের এই সময় কেক বানিয়ে থাকে। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেক বানিয়ে এলাকায় বিক্রি করে থাকেন। ধনী, দরিদ্র সব শ্রেণির গ্রাহকদের বাজেট অনুযায়ী আলাদা থাকায় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দামের কেক তৈরি করা হয়ে থাকে। আর এই দাম কমাতে গিয়েই বিভিন্ন ধরনের কৌশল নিয়ে থাকেন এক শ্রেণির ব্যাবসায়ী।

কেমন সেই কৌশল? দাম কমানোর জন্য সস্তার কাঁচা মাল সংগ্রহ করতে হয়। আর সস্তার জিনিস সংগ্রহ করতে গিয়ে মানের সঙ্গে আপোষ করতে হয়। অনেক ব্যবসায়ী জেনেশুনে নিম্ন মানের কাঁচামাল সংগ্রহ করে থাকেন বলে অভিযোগ। আর সস্তায় সবথেকে বেশি যে জিনিসটি কেনা হয় তা হল ডিম। কারণ বছরের এই সময়ে ডিমের দাম থাকে অনেকটাই চড়া।

কলকাতার পাইকারি ডিম ব্যাবসায়ী কাজল দত্ত জানান, “শীতকালে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড সহ বিভিন্ন প্রদেশে ডিমের চাহিদা বেশি থাকায় রাজ্যে ডিমের যোগান অনেকটাই কমে যায়। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলে ডিমের দামও।” তাই ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সস্তার ডিম কিনতে হ্যাচারির ডিমের দিকেই পা বাড়ায় অনেক ছোট ছোট বেকারি অথবা কেক উৎপাদনকারীরা। কারণ নিয়ম অনুযায়ী হ্যাচারির ডিম নষ্ট করে দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা শ্যাম্পু তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে বলে অভিযোগ ডিম ব্যবসায়ীদের একাংশের।

আরও পড়ুন: একসঙ্গে ৬টি ক্লাসের ছয় বিষয় পড়াচ্ছেন একজনই শিক্ষক, কলকাতায় আজব স্কুলের খোঁজ

কলকাতার পাইকারি ডিমের বাজার ডিম পট্টি। সেখানকার ডিম ব্যবসায়ী রাজা রায় বলেন, “হ্যাচারির এই ডিম দিয়ে মূলত মুরগির বাচ্চা ফোটানো হয়। যদি ডিম না ফোটে তাহলে সেটা বাতিল করে দেওয়া হয়। সেই ডিম নষ্ট করে দেওয়াই নিয়ম থাকলেও সেটা করা হয় না। খুচরো বাজারে বিক্রি করা না হলেও এই ডিম বেশ কিছু সংস্থা শ্যাম্পু তৈরির কাজে লাগায়৷ কিন্তু এখন তো এই ডিম কেক তৈরি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বড়দিন উপলক্ষে কেক তৈরির জন্য অনেক ডিমের চাহিদা রয়েছে। তাই পাইকারি বাজার থেকে অসাধু ব্যাবসায়ীরা এই ডিম তাদের বিক্রি করছে। যেখানে সাধারণ ডিমের দাম এখন ৭ টাকা থেকে ৭ টাকা ৫০ পয়সা সেখানে হ্যাচারির ডিম পাওয়া যায় ২ থেকে ৩ টাকায়। কিছু ছোট বেকারির পাশাপাশি কিছু বড় কেক কোম্পানিও অধিক লাভের জন্য এই ডিম নেয়। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই কেক কেনার আগে সতর্ক থাকা উচিত গ্রাহকদের।”

শ্যাম্পু তৈরিতে ব্যবহার করা ডিম দিয়ে কেক তৈরি হওয়ার কথা শুনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রাহকদের মধ্যেও৷

কলকাতা: সামনেই বড় দিন। আর বড় দিন থেকে নতুন বছরের সেলিব্রেশনের অপেক্ষায় থাকেন সবাই। কিন্তু বাজার দরের কি পরিস্থিতি! আসুন জেনে নেওয়া যাক, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারির লম্বা ছুটিতে বেশিরভাগ মানুষই পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চান। আর সেই কথা ভেবেই আগে থেকে বাড়ি সাজিয়ে ফেলার পরিকল্পনা শহরবাসীর। ক্রিস্টমাস ট্রি, সান্তাক্লজ, ঘণ্টা থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে নিউ মার্কেটে। সবাই যাতে কিনতে পারেন তার জন্য বিভিন্ন দামের জিনিসপত্র রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

একদম ছোট মানিপ্লান্টের মাপের গাছ যেমন রয়েছে তেমনই রাখা হয়েছে বিশাল ক্রিস্টমাস ট্রি-ও। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ১৫০ টাকা থেকে শুরু ক্রিসমাস ট্রিয়ের দাম। সবথেকে বড় গাছ রয়েছে ৯০০০ টাকার। গাছ সাজানোর একাধিক সামগ্রী রয়েছে দোকানে। ছোট ছোট বল, ঘণ্টা, তারা, টুপি, রয়েছে বিভিন্ন দরের। হাসান আলি নামে এক ব্যবসায়ী জানালেন, ‘৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা দামের বড় ঘণ্টা রেখেছি, রেডিয়াম স্টার রয়েছে ৩০০ টাকার। এবারে বিক্রি বেশ ভাল। গাছ না কিনলেও ঘর সাজাতে মানুষ অনেক কিছু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’

আরও পড়ুন: ‘এই’ মশলা ছাড়া জমে না পিৎজা…কিন্তু কোলেস্টেরলের যম! শুধু খেতে হয় এই ভাবে

আর বড়দিন মানেই তো বড়দিনের কেক, তাই না! সেই কেক-র দামই বা এই বাজারে কত? দোকানিরা জানাচ্ছেন, এবার পাঁউরুটি, চিনি, ডিম, ময়দা, ডালডার সব কিছুর দামই বেশ খানিকটা বেড়েছে। পাউন্ড অনুযায়ী ধরতে গেলে নিউ মার্কেট চত্বরে একদম সাধারণ এক পাউন্ড কেকের দাম শুরু হচ্ছে ২৬০ টাকা। ফ্রুট কেক, ওয়ালনাট কেক বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকার মধ্যে। চকোলেট কেক, লেমন কেকের দামও ৩২০ টাকার মধ্যে।

ধর্মতলায় একটি নামকরা কেকের দোকানের কথায়, ‘‘মানুষ এখন নতুন নতুন ফ্লেভার খুঁজছেন। আমরাও চেষ্টা করছি নতুন ধরনের কেক পৌঁছে দিতে। রিচ ফ্রুট কেক, চকলেট ওয়ালনাট কেক বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে এই সময়টায় প্রত্যেক বছরই বিক্রি বাড়ে। সারা বছর হয়তো মেরেকেটে ১০ পাউন্ড কেক বিক্রি হয়। আর এই কয়েকদিনে গড়ে ১০০০ পাউন্ডের কাছাকাছি বিক্রি হয় আমাদের দোকানে।’’

আরও পড়ুন: শীতে কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পাচ্ছেন! একবার খেয়ে দেখুন এই পাতা…কাজ হবে ম্যাজিকের মতো

উৎসব যাই হোক না কেন সেটাকে ঘিরে নতুন জামাকাপড় না কিনলে কি মন ভরে? শীতপোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে পড়েছেন দোকানিরা। রয়েছে হরেক রকম অফার। প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে সান্টাক্লজের টুপি। দাম ৩০ টাকা থেকে শুরু।

দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা অনুরাধা সরকার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বড়দিনের কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিলেন। তার মধ্যেই জানালেন, ‘‘মেয়ে কাজের সূত্রে বাইরে থাকে। দু’বছর বাড়ি আসতে পারেনি কাজের চাপে। আগে নিয়ম করে বাড়িতে বড়দিন পালন করতাম আমরা। এবার মেয়েও রয়েছে, তাই আগাম সব কিনে নিয়ে ঘর সাজাতে শুরু করে দেব। খাওয়াদাওয়া তো রয়েছেই।’’

নিউ মার্কেটের এই সমস্ত দোকান থেকে পাইকারি হারেও জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছেন জেলার ব্যবসায়ীরা। একসঙ্গে অনেক কিছু নিলে বিশেষ ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে। অন্য সব বছরের মতো ভিড় চোখে পড়েছে কেকের দোকানে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার নয়া ফ্লেভারের কেক এসেছে বাজারে। তবে বেড়েছে দামটাও। কেক ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, চলতি বছর কাঁচামালের দাম বেড়েছে অনেকটা।

কলকাতাঃ  ২৪ ডিসেম্বর বিকেল চারটে থেকে ২৫ ডিসেম্বর ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ময়দান ও পার্ক স্ট্রিট এবং সংলগ্ন এলাকায় সমস্ত ধরনের পন্যাবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। একই ভাবে ২৫ ডিসেম্বর বিকেল চারটে থেকে পরদিন ট্রাফিকের পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যন্ত একই ভাবে পন্যবাহী গাড়ি চলবে না।

এজেসি বোস রোড এবং চৌরঙ্গী রোড ক্রসিং উত্তর অভিমুখে, এজেসি বোস রোড ও হরিশ মুখার্জি রোড এবং ক্যাথিড্রল রোড ক্রসিং উত্তর অভিমুখে,  এজেসি বোস রোড ও হসপিটাল রোড ক্রসিং, স্ট্র্যান্ড রোড ও গোষ্ঠপাল সরণি ক্রসিং পূর্ব অভিমুখে, স্ট্র্যান্ড রোড ও অকল্যান্ড রোড ক্রসিং পূর্ব অভিমুখে,  রেড রোড ও মেয়ো রোড এবং ডাফরিন রোড,
ক্যাথিড্রল রোড ও ক্যুইন্সওয়ে,  চৌরঙ্গী ও শেক্সপিয়র সরণি- র মতো রাস্তাগুলোতে কোনও পন্যবাহী গাড়ি চলবে না উক্ত সময়ে। পরিবর্তে সেন্ট জাজেস রোড ও স্ট্র্যান্ড রোড ব্যবহার করতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ নতুন বছরে শহরের বুকে নয়া ফ্লাইওভার! অর্ধেক হবে বিমানবন্দরে যাওয়ার ভোগান্তি

২৪ ডিসেম্বর সাধারণ যান চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আনা হবে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে। যখন যখন প্রয়োজন হবে সেই ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন পথে কখন নিয়ন্ত্রণ হবে। তবে চৌরঙ্গি রোড বাদ দিয়ে পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি ও সংলগ্ন রাস্তায় রাত দুটো পর্যন্ত কোনও যান চলবে না।
ক্যুইন্সওয়ে-তে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রয়োজন মতো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ক্যাথিড্রল রোডেও প্রয়োজন মত যান নিয়ন্ত্রণ হবে ২৪ তারিখ।

উত্তর ও দক্ষিণমুখী গাড়ি জেএল নেহেরু রোড ধরে হো চি মিন সরণি ক্রসিং থেকে এজেসি বোস ক্রসিংয়ের দিকে চলবে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের দিনও একই ভাবে প্রয়োজন মতও নিয়ন্ত্রণ লাগু থাকবে। জেএল নেহেরু রোড থেকে উড স্ট্রিট ক্রসিং, পার্ক স্ট্রিট এবং মিডলটন স্ট্রিট বন্ধ রাখা হবে।

হো চি মিন সরণিতে শুধু মাত্র পূর্বমুখি গাড়ি চলবে। রয়ড স্ট্রিট থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত গাড়ি চলবে। রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত গাড়ি চলবে। রাসেল স্ট্রিট নো এন্ট্রি থাকবে। শেক্সপিয়র সরণি ক্রসিং এবং লিটল রাসেল স্ট্রিটের মধ্যে কোনও যান চলবে না।

ফ্রি স্কুল স্ট্রিট থেকে কিড স্ট্রিট পশ্চিম অভিমুখে গাড়ি চলবে। শেক্সপিয়র সরণি ও ক্যামাক স্ট্রিটে বোথওয়ে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের অনুমতি নেবে প্রয়োজন মত।

নো পার্কিং জোনঃ রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, রয়ড স্ট্রিট, কিড স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, রাসেল স্ট্রিট, এলিয়ট রোড