কলকাতা: এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই বিশেষ গুরুত্ব দেন গঙ্গাসাগরে। তার ফলে গঙ্গাসাগরের সঙ্গে সংযোগকারী প্রত্যেকটি রাস্তারই ভালমতোই উন্নয়ন হয়েছে। তবে এখানে প্রত্যেক বছর সাগরমেলার সময় মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়ে। এই উন্নত রাস্তাগুলির উপর দিয়েই সবকিছু যাতায়াত করে। তাই রাজ্যের এই ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা জাতীয় সড়কের মর্যাদা পেলে অ্যাপ্রোচ রোড–সহ সাড়ে চার কিমি দৈর্ঘ্যের প্রস্তাবিত মুড়িগঙ্গা সেতুকে মাঝখানে রেখে গঙ্গাসাগর থেকে কাশীনগর পর্যন্ত রাস্তার পুরোটাই চওড়া ও মজবুত হবে। সেতুটিও চার লেনের হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগরের সেতুর জন্য কতবার বলেছি কেন্দ্রকে। আমাদের কথা শোনেনি। আমরা নিজেরাই গঙ্গাসাগর সেতু তৈরি করেছি। ইতিমধ্যেই বাজেটে এই সেতুর জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
সাগরদ্বীপের প্রধান সমস্যাই হল যাতায়াতের সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সেতু তৈরির দাবি জানাচ্ছেন এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। সাগরদ্বীপবাসীর সেই স্বপ্ন এবার পূরণ হতে চলেছে। এই সেতু তৈরি হলে গঙ্গাসাগরের ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা বদলে যাবে জাতীয় সড়কে। ফলে গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি আশ্রম থেকে মূল ভূখণ্ডের কাকদ্বীপের কাশীনগর এসে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে মিশবে। এই সুখবরের পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
অনেকদিন ধরেই গঙ্গাসাগর মেলাকে কুম্ভ মেলার মত জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। ফের সেই দাবি জোরালো হয়ে উঠল। গঙ্গাসাগর মেলা জাতীয় মেলা হলে কেন্দ্রের থেকে অনেক বেশি আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাবে। সেই অর্থ দিয়ে কপিলমুনি আশ্রমের সামনের নদী ভাঙন রোখা যাবে বলে মনে করছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা।
আরও পড়ুন– রাশিফল ৯ ফেব্রুয়ারি; দেখে নিন আপনার আজকের দিন নিয়ে কী জানাচ্ছেন জ্যোতিষী চিরাগ
জানা গিয়েছে, নাবার্ডের সহযোগিতায় রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের টাকায় এই সেতু তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এতদিন পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় এই কাজ আটকে ছিল। এই সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজন ১ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে নাবার্ডের সঙ্গে পূর্ত দফতরের আলোচনা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, সহজ শর্তে ঋণের বিষয়ে নাবার্ডের আধিকারিকরা নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে। দ্রুত সেতুর ডিপিআর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে পূর্ত দফতর। কোস্টাল রেগুলেশন জোনের ছাড়পত্র মিলেছে। এখন সেতুর ডিপিআর রয়েছে স্টেট এনভায়রনমেন্ট ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট অথরিটির কাছে। সেতুটি জাতীয় সড়কের অংশ হয়ে উঠতে পারে বলে তার ডিপিআর–সহ সবদিক খতিয়ে দেখে গেজেট প্রকাশ করবে কেন্দ্র।