মহাকাশচারী বুচ উইলমোর এবং সুনীতা উইলিয়ামসকে ছাড়াই পৃথিবীতে ফিরল নাসার মহাকাশযান ‘স্টারলাইনার’। শুক্রবার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে স্টারলাইনারকে আনডক করা হয়। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই দুই মহাকাশচারীকে ফেরানো সম্ভব হয়নি।
গত ৫ জুন বুচ উইলমোর এবং সুনীতা উইলিয়ামসকে নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দেয় স্টারলাইনার। ৮ দিনের মিশন ছিল। কিন্তু প্রপালশন সিস্টেমে সমস্যা ধরা পড়ে। এখন ৮ মাস মহাকাশেই কাটাতে হবে বুচ এবং সুনীতাকে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্পেসএক্স-এর মহাকাশযানে তাঁদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
দুই মহাকাশচারী আপাতত একটি ক্যাপসুলে রয়েছেন। তাঁদের অতিরিক্ত খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে আসা হয়েছে। নাসা জানিয়েছে, বোয়িংয়ের ইঞ্জিনিয়াররা নতুন সফটওয়্যার আপলোড করেন। যার ফলে ক্রু ছাড়াই পৃথিবীতে অবতরণ করতে পারে স্টারলাইনার।
শনিবার সকাল ৯.৩১ মিনিটে নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডস স্পেস হারবারে অবতরণ করেছে মহাকাশযান স্টারলাইনার। নাসা এবং বোয়িংয়ের ইঞ্জিনিয়াররা এখন এটিকে অ্যাসেম্বলি ইউনিটে নিয়ে যাবেন। মহাকাশযানটিকে পরীক্ষা করে দেখা হবে। কেন হিলিয়াম লিক হল? কী কারণে প্রপালশন সিস্টেমে সমস্যা দেখা দিল? সে সবই খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রথম মানববিহীন অরবিটাল ফ্লাইট পরীক্ষা করা হয়েছিল। এই ফ্লাইটে কোনও মহাকাশচারী ছিলেন না। কিন্তু সফটওয়্যারের ত্রুটির কারণে সেটি অন্য কক্ষপথে চলে যায়। ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল পাঠানো হয় দ্বিতীয় ফ্লাইট। স্পেশ স্টেশনে গিয়ে ডকিং করার কথা ছিল। তারপর ফিরে আসবে পৃথিবীতে। কিন্তু মহাকাশযানের ১৩টি প্রপালশন ভালভে সমস্যা দেখা দেওয়ায় লঞ্চ পিছিয়ে দেওয়া হয়।
২০২২ সালের ১৯ মে পাঠানো হয় সেই মহাকাশযান। এতে দুই ডামি মহাকাচারীকে বসানো হয়েছিল। কিন্তু অরবিটাল ম্যানুভারিং এবং অ্যাটিটিউড কন্ট্রোল সিস্টেম থ্রাস্টারে গোলমাল ধরা পড়ে। শেষ পর্যন্ত ২২ মে কোনওরকমে স্পেস স্টেশনে অবতরণ করে। ২৫ মে ফিরে আসে পৃথিবীতে। জিপিএস স্যাটেলাইটের সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তবে বোয়িং বলছে এটা স্বাভাবিক। এরপর ৫ জুন বুচ এবং সুনীতাকে নিয়ে তৃতীয়বার রওনা দেয় স্টারলাইনার। ১৩ জুন ৮ দিন পর ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু প্রপালশন সিস্টেমে সমস্যার কারণে দুই মহাকাশচারী আটকে পড়লেন। ‘খালি হাতে’ ফিরল মহাকাশযান।