তেলঙ্গানা: পুরনো দিনের খাওয়াদাওয়ার প্রসঙ্গে ময়ূরের মাংসের কথা অনেক জায়গাতেই পাওয়া যাবে। পাওয়া যাবে শিকার কাহিনিতেও। একটা সময়ে হরিণ আর ময়ূর দুই ছিল জনপ্রিয় খাদ্য, সারা ভারত জুড়েই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গিয়েছে আমাদের খাদ্যাভ্যাস। ময়ূর এখন সংরক্ষিত এক পাখি। তা শিকার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আপামর ভারত তা জানে। তার পরেও এক ইউটিউবার কীভাবে তাঁর চ্যানেলে এ হেন ময়ূরের মাংস রাঁধার ভিডিও শেয়ার করলেন, তার সদুত্তর পাওয়া ভার। তবে, অবাক করার মতো ঘটনা তো এ বটেই!
ঘটনার তেলঙ্গানার সিরসিলা জেলার। সেখানেই ময়ূর হত্যার মতো নিন্দনীয় অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে। ইউটিউবে সেই মাংস রান্নার ভিডিও আপলোডও হয়েছে সিরসিলা থেকেই। যে ইউটিউবার এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন, তাঁর নাম কোদম প্রণয় কুমার। ট্র্যাডিশনাল পিকক কারি রেসিপি শিরোনাম দিয়ে এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন তিনি ফলোয়ারদের সঙ্গে।
প্রণয় খুব সম্ভবত ভেবেছিলেন এই ভিডিও তাঁকে আরও জনপ্রিয় করবে। ভাবায় দোষ নেই। সাবেকি রান্নার কৌশল ধীরে ধীরে লোপ পেতে বসেছে, ফলে, ইউটিউবে এই ধরনের ভিডিও দেখার ভালই চাহিদা রয়েছে। ভিডিও যে ভালমতো ভিউ পেল না, এমনটাও নয়। কিন্তু প্রণয় যেমনটা ভেবেছিলেন, তেমনটা হল না। দেশের সুনাগরিকেরা রীতিমতো তুলোধোনা করে ছাড়লেন তাঁকে। জাতীয় পাখি রাঁধার ভিডিও দেখে তাঁরা নিন্দায় পঞ্চমুখ হলেন।
একই সঙ্গে উদ্যোগ নিল প্রশাসনও, গ্রেফতার করা হল ইউটিউবারকে। সে যতই তাঁর চ্যানেল থেকে ট্র্যাডিশনাল পিকক কারি রেসিপির ভিডিও সরিয়ে নেওয়া হোক না কেন। বন দফতর আপাতত যেখানে রান্না হয়েছিল, তার আশপাশ ভাল করে পর্যবেক্ষণ করছে। ইউটিউবারের রক্তের নমুনা এবং ময়ূরের মাংস গিয়েছে ল্যাবে। যদি ইউটিউবারের পেটে ময়ূরের মাংস পাওয়া যায়, শাস্তি কড়া হবে।
১৯৭২-এর ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্টের ৫১ (১-এ) ধারা অনুসারে ময়ূর সংরক্ষিত প্রাণী। সিরসিলার পুলিশ সুপারিনডেন্ট অখিল মহাজন জানিয়েছেন যে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ইউটিউবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।