দক্ষিণ ২৪পরগনা : সুন্দরবনে বাঘের আক্রমনে আহত ও নিহতের ঘটনা লেগেই আছে।এবারে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন সুন্দরবনের এক মৎস্যজীবী। সুন্দরবনের কুলতলি থানার গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক মৎস্যজীবী হরিপদ দাস তিনজন সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের সূর্যমনীর জঙ্গলে যান মাছ ধরতে।
বুধবার জঙ্গল থেকে ফেরার পথে সামনে থেকে আচমকা একটি বাঘ হরিপদর মুখের ওপর পড়ে তাকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যেতে চাইলে তাঁর সঙ্গীরা লড়াই করে বাঘের মুখ থেকে হরিপদ দাস (৩৫)কে জীবিত অবস্থাতেই ফিরিয়ে আনে। বাঘটি আচমকা আক্রমনের ভয়ে মুখের খাবার ফেলে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন- মাত্র ৭ দিনেই জব্দ! ধমনী থেকে নিংড়ে বার করবে কোলেস্টেরল, শিরায় জমে থাকা ময়লা হবে সাফ, রোজ পাতে রাখুন এই খাবার
আর এদিকে গুরুতর আহত হরিপদকে নিয়ে এসে প্রথমে জয়নগর কুলতলি গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে কলকাতার পি জি হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়। হরিপদর বাড়িতে মা, বাবা, স্ত্রী ও একটি সন্তান আছে।একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ বছর জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের আক্রমনে মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা ৯ জন।
আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর তোলপাড় পরিবর্তন! সূর্য-মঙ্গল-বুধ-শুক্রের বিরাট চালে ভাগ্যের খেলা শুরু…! কারা ভাগ্যবান, কাদের লোকসান? আপনার কপালে কী?
সুন্দরবনে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে জীবন জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের বহু গরীব মানুষ। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় আজ জীবন হাতে নিয়ে তাঁরা জঙ্গলে যাচ্ছে।আর ক্রমাগত ক্ষতির মুখে পড়ছে।
সুমন সাহা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনের মেয়েদের জীবিকাই তাঁদের অসুখের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে্ এখানকার মহিলারা নিজেদের জীবিকার কারণে নানান নারী ঘটিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যের প্রান্তিক এলাকা সুন্দরবনের মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় এখানকার বাসিন্দারা জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করে বা মাছ, মীন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এর মধ্যে মহিলারাই প্রধানত মাছের মীন ধরার কাজটা করেন। আর তা করতে গিয়েই নারী ঘটিত নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা।
সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের হানায় পুরুষদের মৃত্যুর ঘটনা প্রায় জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের কামড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন আহত হয়েছেন। এদিকে মহিলারা দীর্ঘক্ষণ নদীর ও খাড়ির জলে দাঁড়িয়ে মাছের মীন ধরার কারণে চর্মরোগের পাশাপাশি নানান নারী রোগ সংক্রান্ত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: এখনই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত! আক্রান্তের সংখ্যা শুনলে চমকে যাবেন
এই বিপদ থেকে তাঁদের রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে একটি সংগঠন। কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ নগেনাবাদের প্রত্যন্ত এলাকায় সারাদিন ধরে বিনা খরচে স্বাস্থ্য শিবির পরিচালনা করছে সংস্থাটি। কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এসে গ্রামের অসুস্থদের চিকিৎসা করে তাঁদের ওষুধ দেন। এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ইন্দ্রনীল বর্গী, জসমিত সিং অরোরা, বিবেক ভৌমিক প্রমূখ। প্রখর দাবদহকে উপেক্ষা করে এই শিবিরে রোগীদের আগমন ছিলো চোখে পড়ার মতন। সাধারণ ও গাইনো বিভাগ মিলিয়ে ১৩৬ জন রোগীর চিকিৎসা হয়।
সুমন সাহা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাঘের আক্রমণের মুখ থেকে জীবিত অবস্থায় ফিরে এলেন সুন্দরবনের এক মৌলে বা মধু সংগ্রাহক। আহত অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে।
গত বুধবার সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন মৈপীঠ উপকূল থানার গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়লা ঘেরি গ্রামের তপন খাঁড়া (৫৯)। সঙ্গে ছিলেন গ্রামেরই জয়দেব খাঁড়া, গনেশ খাঁড়া, গুরুপদ খাঁড়া ও বাসুদেব মণ্ডল। সুন্দরবনের আজমমালীর জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে ঢোকেন তাঁরা। মধু সংগ্রহের সময় আচমকাই পিছন থেকে তপন খাঁড়া ঘাড়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এরপর স্বভাববশত বাঘ ওই মধু সংগ্রাহককে গভীর জঙ্গলে টেনে নিয়ে যেতে চাইলে সঙ্গী সাথীরা এগিয়ে এসে বাঘটিকে বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত তপন খাঁড়াকে জীবিত অবস্থায়য় উদ্ধার করা যায়।
আরও পড়ুন: মুখে আটকে প্লাস্টিকের কৌটো, এক সপ্তাহ না খেয়ে সারমেয়! তারপর যা হল…
এরপর গুরুতর আহত তপনকে নিয়ে এসে প্রথমে জয়নগর-কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানাতরিত করা হয়। বন দফতর ও আহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ শে মার্চ বন দফতরের রায়দীঘি রেঞ্জের কুলতলির নলগোড়া বিট অফিস থেকে মহুল পাশ নিয়েছিলেন তপন সহ একাধিক মৌলেরা। সেই পাশ নিয়েই তাঁরা জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে যান। উল্লেখ্য বন দফতরের উদ্যোগে সুন্দরবনে এই মুহূর্তে মধু সংগ্রহ অভিযান চলছে। তাতে যোগ দিয়েই গুরুতর আহত হলেন ওই মৌলে।
সুমন সাহা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন এক মৎস্যজীবী চিকিৎসকদের লাগাতার প্রচেষ্টায় জীবন ফিরে পেলেন সুন্দরবনের ওই বাসিন্দা। দীর্ঘ চিকিৎসার পর খানিকটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন তিনি ৷ খুশি পরিবার ও প্রতিবেশীরা ৷ সুন্দরবনের ছোট মোল্লাখালি অঞ্চলের বাসিন্দা জগদীশ মন্ডল ৷ আগে কেরালায় শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ সম্প্রতি বাড়ি ফিরে এসে এলাকার আরও কিছু মৎস্যজীবিদের সঙ্গে মাছ ও কাঁকড়া ধরার কাজ শুরু করেছিলেন সংসার চালানোর জন্য ৷
আরও পড়ুন: ভাল হয়েছিল পরীক্ষা, উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের আগেই প্রাণ গেলে পরীক্ষার্থীর
জগদীশ মন্ডল ও এলাকার আরও দুজন গিয়েছিলেন কাঁকড়া ধরতে ৷ ছোট মোল্লাখালি থেকে চামটার জঙ্গলে গিয়েছিলেন কাঁকড়া ধরতে ৷ আচমকা তার উপর বাঘ আক্রমণ করে ৷ ঘাড়ে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি ৷ কোনরকমে সঙ্গীদের চেষ্টায় বাঘের মুখ থেকে জীবন ফিরে পান তিনি ৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয় সোনারপুরের কালিকাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ৷ দীর্ঘ চিকিৎসার পর অবশেষে অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: পকেটে ৫০ টাকা থাকলেই হবে, জঙ্গলে হাইকিং-নৌকা ভ্রমণ কী নেই! দোলে একদিন ঘুরে আসুন
চিকিৎসকরা জানান খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন জগদীশ ৷ইতিপূর্বে বাঘের হামলার যেসব ঘটনা ঘটেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়েছে সেই সব মৎস্যজীবীর। তাই জগদীশবাবুর ঘটনা ব্যতিক্রম বলেই মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তিনি।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এই মৎস্যজীবী প্রতিজ্ঞা করেছেন, আর কখনও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গলে মাছ বা কাঁকড়া ধরতে যাবেন না।
সুমন সাহা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আবারও রয়েল বেঙ্গলের থাবায় মৃত্যু হল মৎস্যজীবীর। নিয়ম ভেঙে সুন্দরবনের কোর এরিয়ায় কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারালেন কুলতলির প্রদীপ সরদার (৩৬)। এই নিয়ে চলতি মাসে সুন্দরবনের বাঘের হানায় আরও একজন মৎস্যজীবের মৃত্যু হল। রয়েল বেঙ্গলের আক্রমণে একের পর এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হওয়ায় বন দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কীভাবে মৎস্যজীবীরা কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়ছে তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বন দফতর।
আরও পড়ুন: গাছের নাম বোদেলা, তাতেই কুপোকাত পাহাড় প্রমাণ হাতি! আছে জব্দ করার মোক্ষম দুই ‘অস্ত্র’
পেটের দায়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনের মৎস্যজীবী এবং মধু সংগ্রহকরা বরাবরই কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। এই অসহায় মানুষগুলোর কাছে সেটাই হয়ত স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এই বিষয়ে বন দফতরের নজরদারি চালানোর কথা। কীভাবে তাঁদের চোখে ফাঁকি দিয়ে বারবার মৎস্যজীবীরা সেখানে চলে যাচ্ছেন এবং বাঘের কবলে পড়ছে তা নিয়ে বিস্মিত অনেকেই। প্রদীপ সরদার সেভাবেই অকালে প্রয়াত হলেন বলে তাঁর প্রতিবেশীদের দাবি।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
কুলতলির কাটামারির বাসিন্দা প্রদীপ সরদার মাছ ও কাঁকড়া ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে কোনরকমে জীবন যাপন করতেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার প্রদীপ সরদার সহ তিন মৎস্যজীবীর দল নৌকা নিয়ে সুন্দরবনের নয়বাঁকি জঙ্গলে কাঁকড়া ধরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে নয়বাঁকির জঙ্গলে কাঁকড়া ধরার সময় হঠাৎ পিছন থেকে বাঘ প্রদীপ সরদারের ঘাড়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। চেষ্টা করেও বাঘের থাবা থেকে বাঁচতে পারেননি ওই মৎস্যজীবী। রয়েল বেঙ্গল তাঁর দেহ জঙ্গলের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। পরে সঙ্গে থাকা মৎস্যজীবীরা জঙ্গল থেকে প্রদীপ সরদারের দেহ উদ্ধার করে কুলতলির কাঁটামারীর ঘাটে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে কুলতলির থানার পুলিশ ঘাট থেকেই মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। বাবাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রদীপ সরদারের দুই ছেলে।
সুমন সাহা
Just another WordPress site