শুধু আচারের উপকরণ হিসেবেই নয়। তেঁতুলের বহু স্বাস্থ্যগুণ আছে। তার মধ্যে একটি হল ওজন কমাতে সাহায্য করা। আমরা অনেকেই জানি না যে বারো মাসই নানাভাবে তেঁতুল খাওয়া যায়। অবাঞ্ছিত ওজন কমিয়ে ছিপছিপে রোগা হওয়ার জন্য তেঁতুল জুড়িহীন। বলছেন পুষ্টিবিদ লোকেন্দ্র তোমর।
তেঁতুলজলে ক্যালরি খুবই কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এক কোয়া তেঁতুলে ক্যালরির পরিমাণ ৫ থেকে ৬। তবে তেঁতুলের সঙ্গে মিষ্টি স্বাদের কিছু যোগ করলে তখন ক্যালরি বেড়ে যাবে।
ওজন কমানোর চাবিকাঠি হল পরিপাক ক্রিয়া মসৃণ রাখা। তেঁতুলে আছে ল্যাক্সাটিভ বৈশিষ্ট্য। এর ফলে হজম প্রক্রিয়া সুস্থ থাকে।
ফ্ল্যাভনয়েড এবং পলিফেনলের উপস্থিতির জন্য তেঁতুলের গুণে মেটাবলিজমের হার বেড়ে যায়। রোগা হওয়ার জন্য মেটাবলিজমের হার বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।
তেঁতুলে প্রচুর ফাইবার আছে। উপকারী ফাইবারের জন্য তেঁতুল খেলে দীর্ঘ ক্ষণ পেটে থাকে। ফলে ঘন ঘন খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমে। ডায়েটে তেঁতুল থাকলে বাড়তি খাওয়ার অভ্যাস থেকে রেহাই মেলে।
তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে টার্টারিক অ্যাসিড আছে। অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট টার্টারিক অ্যাসিডের জন্য মেটাবলিজমের হার বাড়ে। ফলে ওজন কমার গুণ ধরা পড়ে।
তেঁতুল নানা ভাবে খাওয়া যায়। সেরা ফল পাওয়া যায় তেঁতুলজল খেলে। গরম জলে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন তেঁতুল। তার পর চটকে ক্বাত্থ বের করে ছেঁকে রস তৈরি করুন। জলে মিশিয়ে পানীয় হিসেবে পান করুন। ইচ্ছে হলে মেশাতে পারেন গুড়, বিটনুন ও জিরেগুঁড়ো।
এই গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে অনেকেই তেঁতুলের চাটনি কিংবা ফুচকার সাথে তেঁতুল জল খাচ্ছেন! গরমে প্রতিদিন তেঁতুল খাওয়া শরীরের জন্য কি ভাল? কীবলছেন বিশেষজ্ঞ? জানুন photo source collected
তেঁতুল এমন একটা ফল যা নানা ভাবে খাওয়া যায়। খাবারের সঙ্গে অনেকেই তেঁতুলের আচার ও ফুচকার সাথে অনেকেই তেঁতুলের জল খেতে ভালবাসেন। তবে প্রতিদিন তেঁতুল খাওয়া আদৌ কি উপকার? photo source collected
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট ডাক্তার কিংশুক প্রামাণিক জানান, ওজন কমাতে তেঁতুল ভীষণ সাহায্য করে। এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্ট সুস্থ রাখে। photo source collected
এছাড়াও তেঁতুল গলা ব্যথা বা জয়েন্টের ব্যথা কিংবা সর্দি-কাশি, ফ্লু দূর করতেও সাহায্য করে। তবে তেঁতুলের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। photo source collected
বেশি তেঁতুল খেলে রক্তচাপ কমে যায়। এছাড়াও যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের চুলকানি, ফুসকুড়ি, বমি শ্বাস নিতে অসুবিধার মতো কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। photo source collected
এছাড়াও তেঁতুল গ্লুকোজ এর মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। তেঁতুল খেলে দ্রুত ওজন কমে । এছাড়া তেঁতুলের মধ্যে টারটারিক অ্যাসিড থাকে, যা দাঁত নষ্ট করে দিতে পারে। তাই বেশি তেঁতুল খেলে এই সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। (তথ্য: পিয়া গুপ্তা)photo source collected
গুড়ের কথা বললেই আমাদের মনে আসে শীতকালের কথা। পাটালি ও নলেনের গুণে লোভনীয় হয়ে ওঠে শীতকাল। কিন্তু জানেন কি গরমেও সুস্থ থাকার হাতিয়ার গুড়। এ সময় খেতে হয় আখের গুড় এবং তালপাটালি।
গরমে শরীরকে শীতল রাখে গুড়ের গুণ। পাশাপাশি আরও স্বাস্থ্যগুণ ও উপকারিতা আছে গুড়ের। বলছেন পুষ্টিবিদ স্মিতা বরোদে।
গুড়ের শরবত পান করলে গরমে শরীর সুশীতল থাকে। শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে। গুড় নিজে তাপ তৈরি করে। কিন্তু তা শরীরকে গরম করে না। ডিহাইড্রেশনের ভয় কমায়।
গরমকালে নিয়ম না মেনে ঠান্ডা জিনিস খাওয়ার ফলে সর্দিগর্মিতে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। মরশুমি জ্বরজারি সারিয়ে দেয় গুড়ের গুণ।
গুড়ের ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, পটাশিয়ামরোগ প্রতিরোধ শক্তি মজবুত করে। জলশূন্যতার জন্য পেশিতে টান বা ক্র্যাম্প হয় না।
গুড়ের ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম গরমে গলা শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ হয়। গুড়ের শরবতের গুণে নিয়ন্ত্রণে থাকে পেটের সমস্যাও।
রক্তাল্পতা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ম্যাজিকের মতো কাজ করে গুড়ের শরবত। গরমে ঘন ঘন ক্লান্ত হয়ে পড়ার প্রবণতাও দূর হয়।
জলে গুড়ের সঙ্গে তেঁতুলের ক্বাত্থ মিশিয়ে তৈরি করুন শরবত। সঙ্গে দিন সবজা দানা বা তুলসির বীজ। ইচ্ছে হলে দিতে পারেন লেবুর রস ও পুদিনাপাতা।
শরীর থেকে টক্সিন দূর করে ডিটক্সিফাই করে এই শরবত। তবে ব্লাড সুগারের রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই পানীয় রাখবেন ডায়েটে। তবে শরীর সুশীতল করতে কোল্ড ড্রিঙ্কের তুলনায় এই শরবত ডায়াবেটিসে অনেক বেশি উপকারী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: তেঁতুল যার নাম শুনলেই জিভে জল আসে অনেকের। কিন্তু এবার সেই তেঁতুলের দাম বাড়তে পারে। এমন আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীরা। তেঁতুল গ্রীষ্মমন্ডলীয় আফ্রিকার একটি গাছ। ভারতীয় উপমহাদেশে এই গাছ বিক্ষিপ্তভাবে শখ করে বসায় কেউ কেউ। অনেক সময় দানা পড়ে গাছ হলেও চাষ করার উদ্যেশ্যে খুব একটা ব্যবহার করা হয় না।
এক একটা গাছ থেকে মেলে ৩ থেকে ৪ কুইন্টাল তেঁতুল। এই গাছ ২৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে, চিরহরিৎ এই গাছের ফল সাধারনত টকজাতীয় ফল। ফুচকার জলের সঙ্গে মেশানো হয় তেঁতুল, চাটনি, আচার হিসাবে ব্যবহার করা হয় এই তেঁতুল। ভিটামিন সি এর ভাণ্ডার এই তেঁতুল গাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা হয়।
আরও পড়ুন: এই সবজি রোজ খেলে গরম আপনাকে ছুঁতে পারবে না! বাঁচাবে তাপপ্রবাহ থেকে! দূর হবে জটিল রোগও!
এরপর সেগুলিকে বাজারে বিক্রি করা হয়। তবে এবছর বাজারে তেঁতুল খুব কম পরিমাণে আসছে। ফলে গতবছরের থেকে কিছুটা বেড়েছে তেঁতুলের পাইকারি বাজারদর। ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই তেঁতুল। যার প্রভাব বাজারে পড়তে পারে আশঙ্কা করছেন সকলে।
নবাব মল্লিক
Just another WordPress site