Tag Archives: UPSC Exam

UPSC Aspirants Story: ‘জীবনের অপর নাম সংঘর্ষ’, ১২ বারের চেষ্টাতেও ব্যর্থ ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীর পোস্ট ভাইরাল

কলকাতাঃ “ফাইট কোনি, ফাইট”। ধ্বসে যাওয়া, নুয়ে পড়া কোনও মানুষের কানে এ হল ক্ষিতদার মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। কুণাল আর ভিরুলকর অবশ্য ক্ষিতদাকে চেনেন না। কিন্তু দুজনের জীবন যেন একই সুতোয় বাঁধা।

ইউপিএসসি ২০২৩-এর রেজাল্ট বেড়িয়েছে মঙ্গলবার। যথারীতি টপারদের নিয়ে হইচই চলছে। তাঁরা কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন, কতক্ষণ পড়তেন, কী করতেন, এই নিয়েই আলোচনা। কিন্তু যাঁরা পাস করতে পারলেন না?

আরও পড়ুনঃ সুখবর! দুই জোড়া সামার স্পেশ‍্যাল ট্রেন চালবে গরমকালে, কোন কোন রুটে? জানুন

কুণাল আর ভিরুলকরও ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এই নিয়ে ১২ বার। এবারও পাস করতে পারেননি। রেজাল্ট বেরোনোর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, “১২ বার চেষ্টা, ৭ বার মেইন, ৫ বার ইন্টারভিউ, একবারও বাছাই হয়নি’। এরপর হিন্দিতে এক লাইন লিখেছেন কুণাল, যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, “সম্ভবত জীবনের অপর নাম সংঘর্ষ”।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কুণালের পোস্ট। নেটিজেনরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন সহমর্মিতার হাত। একজন লিখেছেন, “কেউ আপনাকে আপনার লক্ষ্য অর্জন থেকে দূরে সরাতে পারবে না”। আরেকজনের মন্তব্য, “আপনার নাম দেখতে চেয়েছিলাম স্যার। যাই হোক, হয়তো জীবন আপনার জন্য আরও বড় কিছু সাজিয়ে রেখেছে। শব্দ দিয়ে আপনার সংগ্রাম এবং অধ্যবসায়কে ব্যাখ্যা করা যাবে না। আমরা সবাই আপনার জন্য গর্বিত”।

কুণালের হার না মানার মানসিকতাকে কুর্নিশ করেছেন শয়ে শয়ে ইউজার। তাঁরা লিখেছেন, “আপনার জন্য গর্ব হয়। ঈশ্বর আপনাকে শক্তি দিন। প্রার্থনা করি, আপনি একদিন সব কিছুকে ছাড়িয়ে যাবেন”। কুণালের ইতিবাচক থাকার প্রচেষ্টারও মুক্ত কন্ঠে প্রশংসা করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা।

প্রসঙ্গত, ইউপিএসসি-তে ১০১৬ জন প্রার্থী উর্ত্তীর্ণ হয়েছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি পরিষেবার জন্য তাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। এবারের টপার আদিত্য শ্রীবাস্তব। টিভিতে এখন শুধু তাঁরই ছবি। তিনি যোগ্য। সাফল্যের উন্মাদনা তাঁর প্রাপ্য। কিন্তু কুণালের মতো পড়ুয়াদের তো হারিয়ে যেতে দেওয়া চলে না। তাঁদেরও নিজের উপর বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন। সে জন্য দরকার উৎসাহ। ইন্টারনেট সেই কাজটাই করেছে। নেটিজেনরাই কুণালের ক্ষিতদা। এখন ভবিষ্যৎ তাঁর জন্য কী রেখেছে তা সময়ই বলবে।

UPSC Success Story in Bengal: UPSC-তে নজরকাড়া সাফল্য বাংলার তিন পড়ুয়ার! পাহাড়-কন্যা জয়শ্রী থেকে কৃষকের ছেলে… গর্বিত রাজ্য!

দার্জিলিং: ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে চমক দিলেন বাংলার কন্যে। মেধাতালিকায় ৫২ নম্বর জায়গা করে নিয়েছেন দার্জিলিং জেলার জয়শ্রী প্রধান। জয়শ্রীর সাফল্যে পাহাড়জুড়ে খুশির হাওয়া। দার্জিলিং শহরের সেভেন রবার্টসন রোডের বাসিন্দা জয়শ্রী।

দার্জিলিংয়ের লোরেটো কনভেন্টে পড়াশোনা জয়শ্রীর। এরপর বেঙ্গালুরুর কর্ণাটক ল ইউনিভার্সিটি থেকে আইনবিদ্যা নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন তিনি। পড়াশোনার বাইরে গানবাজনাও তাঁর বেশ ভাল লাগে। তবে দেশের প্রশাসনিক জগতে প্রবেশ করার ইচ্ছে ছিল জয়শ্রীর। তাই ইউপিএসসির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দার্জিলিংয়ে ফিরে আসেন।

আরও পড়ুন: শুকনো লঙ্কা-পেঁয়াজ হাতে চটকে পান্তাভাত মাখলেন জয়া! মেনুতে বাঙাল পদের আরও কী কী! বৈশাখী পান্তার ছবি দেখুন

কঠোর অধ্যাবসায়ের পর সিভিল সার্ভিসে সফল হন জয়শ্রী। বাবা জোসেফের সঙ্গে বসে জয়শ্রী ইন্টারনেটে নিজের ফল দেখে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। মেয়ের ফলাফলে উচ্ছ্বসিত জোসেফ বলেন, ‘‘আমি মিউনিসিপ্যালে কাজ করি। আমার মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্য সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছি। মেয়ের এই সাফল্যে আজ আমি ভীষণ খুশি।’’

জয়শ্রীর কথায়, ‘আইনের ছাত্রী হওয়ায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে খানিকটা সুবিধা হয়েছিল। ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। তবে ক্যাডার অ্যালোকেশন না হওয়া পর্যন্ত এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে (ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন) ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল। এবার এই পরীক্ষার তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, নজর কেড়েছে দার্জিলিং জেলারই আরও দুই কৃতী। ৩৯১ র‌্যাংক করে নজর কেড়েছেন দার্জিলিং জেলার বাগডোগরার বাসিন্দা গৌতম ঠাকুরি।

মেধাতালিকায় ৪৯৪ নম্বর জায়গায় রয়েছেন এমএম তরাইয়ের অজয় মোক্তান। কৃষক পরিবারের ছেলে অজয় তরুণদের কাছে যেন আজ আইকন। দেশের সর্বাধিক কঠিন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা। দেশে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করার একাধিক নজির রয়েছে। অনেকেই বছরের পর বছর পরিশ্রম করেও সাফল্যের মুখ দেখতে পারেন না। সেই জায়গায় জেলার এই তিন কৃতীর সাফল্যে আগামী প্রজন্ম আরও উদ্বুদ্ধ হবে বলে ধারণা শিক্ষমহলের।

অনির্বাণ রায়

UPSC Success Story: ইচ্ছে থাকলে সব পারা যায়, প্রমাণ করলেন নেহা! দেখুন কী কাণ্ড মহকুমা শাসকের

রূপকথার গল্প হার মেনে যাবে! অবাক লাগলেও ঘটনাটি একেবারেই বাস্তব। উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় চাকরি করতে করতেই চলে UPSC’র প্রস্তুতি। কাজের অদম্য চাপের ফাঁকেই পড়াশোনা করতে থাকেন বাঁকুড়া জেলার খাতড়া মহকুমার বর্তমান মহকুমা শাসক নেহা বন্দোপাধ্যায়।

Success Story: চাকরির ফাঁকে পড়াশোনা করে এক চান্সেই UPSC, সাউথ পয়েন্টের ছাত্রী বাঁকুড়ার নেহাকে চেনেন?

খাতড়া: রূপকথার গল্প হার মেনে যাবে! অবাক লাগলেও ঘটনাটি একেবারেই বাস্তব। উত্তর প্রদেশের নয়ডায় চাকরি করতে করতেই চলে UPSC’র প্রস্তুতি। কাজের অদম্য চাপের ফাঁকেই পড়াশোনা করতে থাকেন বাঁকুড়া জেলার খাতড়া মহকুমার বর্তমান মহকুমা শাসক নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়। সময়টা ২০২০ সাল, এভাবেই UPSC-র মতো একটি কঠিন পরীক্ষায় প্রথম চেষ্টাতেই সাফল্য পেয়ে যান তিনি। শুধু সাফল্যই নয়, সর্বভারতীয় ২০তম স্থান অর্জন করে তাক লাগান তিনি।

বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতে করতে কীভাবে পড়াশোনা করা সম্ভব? প্রথম প্রচেষ্টাতেই এতটা কঠিন পরীক্ষায় অসম্ভব ফল হল কীভাবে? প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর তিনি নিজেই দিলেন। তবে বলাই বাহুল্য, বাঁকুড়ার খাতড়ায় বর্তমান মহকুমা শাসক নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি যাদবপুরে। তাঁর পড়াশোনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় কারমেল গার্লস এবং সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুল থেকে।

আরও পড়ুন: কথায় কথায় তো ওকে বলেন, Ok-র ফুল ফর্ম জানেন? ৯৯.৯% জানে না!

এরপর আইআইটি খড়্গপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং করেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠের শেষ বছর ২০১৮ সাল থেকে তিনি শুরু করেন UPSC-র প্রস্তুতি। ক্যাম্পাসিং-এ চাকরি পান একটি বেসরকারি সংস্থায়। যদিও চাকরি প্রত্যাখ্যান না করে চলে যান নয়ডায়। তবে চাকরিতে ঢোকার আগেই তিনি মনস্থির করেছিলেন UPSC পরীক্ষায় বসার কথা, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: লালবাজার, নীল-সবুজ-সাদাবাজার নয়! কলকাতা পুলিশের সদর দফতরের নাম লালবাজরই কেন জানেন?

UPSC অন্যতম কঠিন পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিলেন তিনি? এই প্রসঙ্গে মহকুমা শাসক নেহা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রতিদিন সকালে পড়াশোনা করতেন তিনি। অফিস যাওয়ার আগে যেটুকু সময় পেতেন কাজে লাগাতে পড়াশোনা করে। ছুটির দিন গুলিতে চলত প্রস্তুতি। সপ্তাহজুডে পড়াশোনার বেশিরভাগটাই তিনি অফিসে যেতে যেতে এবং অফিসে লাঞ্চ টাইমে করতেন। পড়াশোনার কাজে মোবাইলের ব্যাবহার করেছেন তিনি। খবরের কাগজ পড়া থেকে বিভিন্ন বই পড়া- ক্লাস করা এই সবই হত মোবাইলের মাধ্যমে।

UPSC পরীক্ষায় ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মহকুমা শাসক জানান, যে কোনও স্নাতক করা থাকলেই UPSC পরীক্ষা দেওয়া যায়। সঠিক পরিশ্রম এবং নিয়ম মেনে প্রস্তুতি চালাতে হবে। এছাড়াও প্রস্তুতিটা উপভোগ করার পাশাপাশি কী ফল হবে সেই চিন্তা মাথায় না আনলে প্রস্তুতির মাত্রা বাড়বে বলেই জানান নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৪ সালের নারী দিবসের আগেই বাঁকুড়া জেলার খাতড়া মহকুমার মহকুমা শাসক নেহা বন্দোপাধ্যায়ের UPSC-র জার্নিটা বাঁকুড়া, প্রত্যন্ত জঙ্গলমহল এবং পশ্চিমবঙ্গের যুব সমাজকে পরিশ্রমের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলেই আশা করা যায়।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী